সে এক অবিস্মরণীয় দিন। ১৯৭৫ সাল।
মান্না দে-কে দেখা। আমি আর
আমার বন্ধু প্রখ্যাত আবৃত্তিকার কাজল সুর। তখন আমি পুরো বেকার। বন্ধুর আর্থিক কল্যাণে সকাল ১০টায় কলামন্দিরে মান্না দের জলসা ও সাহচর্য উপভোগ। সে এক অবর্ণনীয় বাকরোধী অনূষ্ঠান। মঞ্চে মান্না দে হাঁটু মুড়ে বসেই বিপন্ন বিস্ময।
এ আমি কি দেথছি! এতো লোক এতো মানুষ আমার…. আমার গান শুনবে! এমনি দশ মিনিট
শুধু মানুষই দেখলেন। তারপর একের পর এক গান গেয়ে চললেন।চার ঘন্টার অনুষ্ঠানে মন মাতালেন। আমি তো মুগ্ধ।চলে গেলাম গ্রীনরুমে। পায়ে হাত।দাদা! কি বলবো! সে এক আনন্দঘন
আলোচনা। পা-ছুঁয়ে প্রণাম।
দুপুরে জ্যোতিতে দেখলাম শোলে। আর সন্ধ্যায় একাডেমি ফাইন আর্টসে দানসাগর নাটক। মৃণাল সেনের সঙ্গে দেখা হয়ে গেল দর্শকাসনে। সে এক অভিজ্ঞতা!
কফি হাউসের সেই মানুষটা
তমাল সাহা
কফি হাউসের সেই আড্ডাটা কবে ভেঙে গেছে
তুমি চলে গেছো রয়ে গেছে ছাপ
আবার হবে তো দেখা
এই দেখা শেষ দেখা নয় তো- এই কথা নিয়ে বাতাসে এখনো চলে আলাপ।
এই কূলে আমি আর ঐ কূলে তুমি
মাঝখানে নদী ওই বয়ে চলে যায়…
তোমাকে কি করে ভুলবে জন্মভূমি?
তুমিতো কাগজে নয়, পাথরে নয়
হৃদয়ে লিখেছ নাম
তীর ভাঙা ঢেউ আর নীড় ভাঙা ঝড়
জীবনের এই খেলাঘর তোমাকে জানায় প্রণাম।
কী সব তোমার গানের কথা!
ক ফোঁটা চোখের জল ফেলেছ যে তুমি ভালবাসবে তারপরেই বলো
যদি এখনো আমাকে শুধু ভালো লাগে
গভীর হয়েছে রাত পৃথিবী ঘুমায়
কথা দাও আবার আসবে।
দীপ ছিলো শিখা ছিলো
আর কি ছিলো আমরা তো জানি।
মিষ্টি একটা গন্ধ রয়েছে ঘরটা জুড়ে
তুমি শশী হে আমি যামিনী!
তোমার তো– বড় একা লাগে এই আঁধারে
তাই গেয়ে ওঠো গান
আমার ভালোবাসার রাজপ্রাসাদে
আমার একদিকে শুধু তুমি
হয়তো তোমারি জন্যে
আমার হৃদয় চির হন্যে।
জানি তোমার প্রেমের যোগ্য আমি তো নই
তোমার ছিল কি কোনো অপরাধ?
তবে এতো বিষাদ কেন কন্ঠে
এত ভালোবেসে তবু মিটিল না সাধ।
যখন কেউ তোমাকে পাগল বলে
যখন কেউ তোমাকে মাতাল বলে
যখন কেউ তোমাকে দুঃখি বলে
যখন কেউ তোমাকে ফকির বলে
তখন তুমি কি বলো?
ধন্য আমি ধন্য হে
সবই তোমার জন্য যে
আর গেয়ে ওঠো
চাঁদ দেখতে গিয়ে আমি তোমায় দেখে ফেলেছি।
যাবার আগে
মনে পড়ে যায় সেই গান
তুমি আর ডেকো না পিছু ডেকো না।
স্বদেশকে বলে যাও
ভারত আমার ভারতবর্ষ
স্বদেশ আমার স্বপ্ন গো
তোমাতে আমরা লভিয়া জনম
ধন্য হয়েছি ধন্য গো।
আর আমরা দেখি
কাহারবা ছেড়ে দাদরা বেজেই চলেছে
জড়োয়ার ঝুমকো থেকে একটা মোতি খসে পড়েছে…