এই সময়ে হে নারী! তোমার কথা মনে পড়ে।
কাদম্বিনী গঙ্গোপাধ্যায়। উনবিংশ শতকের প্রথম মহিলা চিকিৎসক তুমি। সামাজিক বাধা বিপত্তি, কুসংস্কার, তথাকথিত বিদ্বজ্জনের বিরুদ্ধে কিভাবে লড়েছিলে তুমি! আজ
তাঁর কথা লিখি।

ঈশ্বরী
তমাল সাহা

যে নারীটি চা বাগানে কুলি কামিনের শোষণের বিরুদ্ধে লড়েছিলেন,নারী শ্রমিকদের অধিকারেরপক্ষে সোচ্চার ছিলেন,তাকে চেনে কজন?

যে নারীটিকে পরোক্ষে চরিত্রহীনা, বেশ্যা বলেছিলএক সাংবাদিক সম্পাদক মশাই,তার কি হাল করে ছেড়েছিলেন এই নারী তা কজন জানে?
একশো টাকা জরিমানা আর ছ’মাস জেলের ঘানিটানা কোন সম্পাদকের পক্ষে মর্যাদাকর!কজন জানে সে কথা?

চিকিৎসকের মর্যাদা পেতে সংগ্রাম,পুরুষতান্ত্রিক আধিপত্যের বিরুদ্ধে আর্জব ভঙ্গি,যে নারীটি রুখে দাঁড়ায় তাকে যে চেনেনা সে কি মানুষ!

বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাবর্তনের কথা মনে পড়ে।
একজন নারী ডিগ্রি নিচ্ছেন সে কি ভিড়!
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রান্তিক রেখায়সেই ট্রামলাইন পর্যন্ত!পুলিশ তো রীতিমতো হিমশিম।

বাণিজ্যিক পদ্ধতি তিনি নিয়েছিলেন,তিনি হয়েছিলেন পেশাদার।রীতিমতো বিজ্ঞাপন দিয়েচিকিৎসা করতেন তিনি।
এভাবে পুরুষতন্ত্রের বিরুদ্ধে এক কড়া চাবুক কষিয়েছিলেন এই মহিলা চিকিৎসক।

টাট্টু ঘোড়ার সেই যে ফিটন গাড়ি!তাতে চেপে রাত বিরেতে ‘কল’-এ যেতেন যে নারী তাকে কি তোমরা চেনো?

বৈধব্যের যন্ত্রণাকে ফুৎকারে উড়িয়ে দিয়ে যে নারী স্বামীর প্রয়াণকালের দিন ছুটে যান নবজাতকের মুক্তির ডাকে,তাকে কি বলে তোমরা কি জানো?

কিন্তু নারীটি কি বলেছিল?
‘যে গেছে সে তো আর ফিরবে না,যে নতুন প্রাণ পৃথিবীতে আসছে তাকে তো আনতে হবে।’

গাড়ি থেকে নামতে দেখে কে যেন বলেছিল,ওমা,ডাক্তার কই?এ তো মেয়ে!
জেদ আর জেহাদ এক হলে আনন্দও হেসে ওঠে নারীর স্পর্শে শুশ্রূষা ও নিরাময়ে।

এমন নারীকে ঈশ্বরী বলে কি না কে জানে!