অবতক খবর,২৮ জুলাই: এটাই শেষ পর্যন্ত বাকি ছিল ‘দুয়ারে পুলিশ’। পুলিশ নামে এমনিতেই মানুষের ভয়। এখন যদি পুলিশ দুয়ারে চলে আসে তাহলে তো মানুষ রীতিমতো মূর্ছা যাবে। অর্থাৎ অজ্ঞান হয়ে যাবে। পুলিশ সম্পর্কিত ভীতি, আতঙ্ক রবীন্দ্রনাথ বিভিন্নভাবে ব্যক্ত করে গিয়েছেন তাঁর জীবনস্মৃতিতে। তিনি পুলিশকে কুমিরের সাথে তুলনা করেছেন। তিনি কালান্তরে পুলিশ সম্পর্কে অদ্ভুত বিরূপ মন্তব্য করেছেন, “পুলিশ যে চারায় একবার মুখ বসাইয়াছে সেই গাছ কোনদিন বাড়ে না।” বঙ্কিমচন্দ্র, অক্ষয় কুমার দত্ত পল্লীগ্রামস্থ দুর্দশা বর্ণনে পুলিশের যে কি ভূমিকা তা লিখেছেন। বর্তমান সময়ে ষাটের-সত্তরের দশকে কবি বীরেন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, মণিভূষণ ভট্টাচার্য্য পুলিশ সম্পর্কে বিভিন্ন বক্তব্য তাদের কবিতায় প্রকাশ করেছেন। কবি তুষার রায়ও বলেছেন। তিনি এত ভীত সন্ত্রস্ত ছিলেন যে, বই মেলার মাঠে তিনি পুলিশ দেখে বলে উঠেছিলেন, “পুলিশ কবিকে দেখে তুই, তোর টুপিটা একটু খুলিস।”
এই যখন পরিস্থিতি সেই পরিস্থিতিতে নতুন প্রকল্প দুয়ারে পুলিশ। এ নিয়ে ২৭ জুলাই লোক সংস্কৃতি ভবনে হালিশহর পৌরসভা এবং বীজপুর থানা প্রশাসন যৌথভাবে এই প্রকল্পের উদ্বোধন করেন।
আলোচনা সভায় পুলিশের কি কর্তব্য, পুলিশ এই পরিস্থিতিতে কি করতে পারে,সে বিষয়ে বিশদ আলোচনা হয়।
অদ্ভুতভাবে সেইদিনই কাঁচরাপাড়া পৌরসভার প্রাক্তন উপ পৌর প্রধান, বর্তমান প্রশাসক কমিটির অন্যতম সদস্য মাখন সিনহা বীজপুর পুলিশের বিরুদ্ধে ব্যাপক অভিযোগ আনলেন। করোনা মহামারীর তৃতীয় ঢেউ আসন্ন। কিন্তু এ ব্যাপারে বীজপুর পুলিশের সতর্কতা বা প্রতিরোধ বা নিয়ন্ত্রণের বিষয়ে কোন ভূমিকা নেই। তিনি আরো অভিযোগ করেছেন, বীজপুর থানা প্রশাসন নগর প্রশাসনের সঙ্গে এ বিষয়ে কোন আলাপ-আলোচনা এবং যোগাযোগ করছেন না। এমনকি মোবাইল মারফতও তারা কোনো কিছু জানাচ্ছেন না। অথচ এই যে বিপর্যয়কর অবস্থা সেটি সামাল দেওয়ার পুরো দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বীজপুর থানা প্রশাসনের উপর। তারা কেন এই কাজটিতে নাগরিক অর্থাৎ পৌর প্রশাসনকে অবহেলা করছেন, এড়িয়ে যাচ্ছেন তিনি বুঝতে পারছেন না।
আরেকটি উল্লেখযোগ্য কথা মাখন বাবু বলেছেন, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় করোনা মহামারি নিয়ে যে বিশেষ নির্দেশ দিয়েছেন নাইট কার্ফু,রাত ৯টার পর থেকে লোক চলাচল নিষিদ্ধ। কাঁচরাপাড়ায় এইরকম সান্ধ্য আইন জারি, সেরকম কিছুই দেখা যাচ্ছে না। ৯টার পর যেন কাঁচরাপাড়ার কেন্দ্রীয় অঞ্চল খোলা ময়দান হয়ে গিয়েছে। লোক ঘুরে বেড়াচ্ছে, তাস খেলছে, আড্ডা দিচ্ছে। এমন একটি পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে অর্থাৎ তারা এ বিষয়ে কোন গুরুত্ব দিচ্ছেন না, এ বিষয়ে টহলদারির কোনো নজির রাখছেন না।
মাখন সিনহা অদ্ভুত অভিযোগ করেছেন যে, বীজপুর থানায় নতুন আইসি এসেছেন,সে বিষয়ে কাঁচরাপাড়া পৌর প্রশাসন কিছুই জানেনা। তাদের জানানো হয়নি।অদ্ভুত একটা অবস্থা, নৈরাজ্য চলছে কাঁচরাপাড়ায়, তিনি বলেন।
মাখন সিনহা গুরুতর অভিযোগ এনেছেন যে, কাঁচরাপাড়ায় করোনা প্রতিরোধে বীজপুর প্রশাসনের যে ব্যাপক ভূমিকা রয়েছে, এটি কাঁচরাপাড়ার মানুষ উপলব্ধি করতেই পারছেন না কারণ যেভাবে মাস্ক বিহীন অবস্থায় মানুষ ঘোরাঘুরি করছে তা দেখে বোঝা যাচ্ছে পুলিশের এ বিষয়ে কোন নজরদারি এবং টহলদারি নেই। অনেক দোকানপাট সময় সীমার বাইরেও খোলা থাকছে বলে তিনি অভিযোগে জানিয়েছেন।