অবতক খবর,সংবাদদাতা ::  গত তিনদিন ধরে কল্যাণী ইন্ডিয়ান অয়েল বটলিং প্লান্টের সামনে বিক্ষোভ ও ধর্নারত নিরাপত্তা কর্মীরা । ফলে ব্যাহত গ্যাস সিলিন্ডার সরবরাহ ।

নববর্ষ থেকেই  দেখা যায় ৪২ জন নিরাপত্তা কর্মী ও তাদের পরিবাররা ধরণায়  বসেছেন । তাদের অভিযোগ, রাতারাতি নোটিশ জারি করে ওই ৪২ জন কর্মীকে  ছাঁটাই করে দেওয়া হয়েছে। তারা আরও অভিযোগ করেছেন, কোনরকম কোন আলোচনা ছাড়াই প্লান্টের  ম্যানেজমেন্ট পুরনো কর্মীদের কাজ কেড়ে নিতে চাইছে  ।

এই শ্রমিকদের মধ্যে রয়েছেন আইএনটিটিইউসি ও অন্যান্য শ্রমিক সংগঠনের নেতারাও। শ্রমিকরা জানাচ্ছেন, দীর্ঘ ৩৫ বছর ধরে শ্রমিকরা এখানে কর্মরত। বলতে গেলে তাদের গোটা জীবন এই বটলিং প্লান্টে কেটেছে।‌কিন্তু হঠাৎ করে এই ভাবে তাদের কাজ চলে যাওয়ায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন তারা। তারা কি করবেন, কোথায় যাবেন, পরিবারের অন্নসংস্থান কিভাবে করবেন তা নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তারা ।

ইতিমধ্যে নতুন কন্টাকটার তার অন্যান্য কর্মচারীদের নিয়ে প্লান্টে ঢোকার চেষ্টা করলে রুখে দাঁড়ান আন্দোলনরত নিরাপত্তা কর্মীরা । তাদের বাধায় ফিরে যেতে হয় নতুন কন্টাকটার ও অন্যান্য নবাগত সিকিউরিটি কর্মীদের।

এক শ্রমিক নেতা জানান দীর্ঘ ৩৪/ ৩৫  বছর ধরে তারা কাজ করে আসছেন ।ইতিমধ্যে ১৭ বার  সিকিউরিটি এজেন্সির  হাত বদল হয়েছে । কিন্তু তাদেরকে  কেউ এখান থেকে সরায়নি । প্রত্যেকেই তাদেরকে রেখেই কাজ করেছেন । তাদের সমস্ত জীবন  কেটে গেছে এখানে । এখন তাদেরকে প্লান্ট থেকে ছুঁড়ে বের করে দিতে চাইছেন ইন্ডিয়ান অয়েল কতৃপক্ষ ।

শ্রমিকদের দাবি ডিজিএমই-এর খাম খেয়ালীপনার জন্যই তাদের এই অবস্থা। শুধু তাই নয়, তাদের এই আন্দোলনে সামিল হয়েছেন অন্যান্য সমস্ত কর্মীরাও ।পরিবহনকর্মী, অস্থায়ী কর্মী ও উৎপাদনের সাথে যুক্ত সমস্ত কর্মচারীরা রয়েছেন  তাদের সাথে ।সিকিউরিটির  সাথে যুক্ত শ্রমিকদের দাবি, তারা এখন মরে গেলেও এই বিক্ষোভ থেকে সরবে না । তাদের এখন কোনো পথ নেই। শুধু একমাত্র মৃত্যু এদের এখান থেকে সরাতে পারে।

কি কারণে এদের সরানো হয়েছে কেনই বা এরা পর হয়ে গেল ? এইসব নিয়ে প্রশ্ন এর মুখোমুখি হতে চাননি ডিজিএম। ফোন করলে তিনি ফোন ধরেননি।

যতদিন না তাদের সঙ্গে আলোচনা বসা হচ্ছে ততদিন ‌এই ধর্না তারা চালিয়ে যাবেন। সেই সঙ্গে তারা এও জানান, যতদিন না এর সুরাহা হবে ততদিন তারা প্লান্টে ছাড়বেন না । সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য হল এই ধর্নায় সামিল হয়েছেন কারোর স্ত্রী,কারো ৮৫ বছরের মা এবং কারো প্রতিবন্ধী মেয়ে। তাদের একটাই দাবি ছাঁটাই শ্রমিকদের কাজ ফিরিয়ে দেওয়া হোক।