অবতক খবর, সংবাদদাতা,২২ অগস্ট :: চোপড়ার ভৈষভিটাতে চা বাগান মালিকরা শ্রমিকদের সঙ্গে বৈঠকে না বসায় তীর ধনুক ও অস্র নিয়ে আন্দোলনে সামিল হন চা শ্রমিকরা । এ ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। চোপড়ার ভৈষভিটা এলাকায় পাচপাটি টি স্টেট, মজুমদার টি স্টেট সহ পাচটি বাগান আছে।শ্রমিকদের অভিযোগ ,গত কিছুদিন থেকেই স্থানীয় তৃণমূল নেতারা চা বাগান মালিকদের বাগান বিক্রি করে দিতে চাপ দিচ্ছিল এবং সেই নেতারা বাগানগুলোকে টুকরো টুকরো করে বিক্রি করার সিদ্ধান্ত নেয়। এর ফলে চা শ্রমিকরা কাজ হারানোর আশঙ্কায় মালিকদের সঙ্গে আলোচনায় বসার জন্য মালিকদেরও অনুরোধ করেন ।

মালিকপক্ষ বৈঠকে না বসায় চা শ্রমিকরা বাগানের চারিদিকে খুঁটি পুঁতে তা নিজেদের দখলে রেখে বাগানকে বিক্রি করার হাত থেকে বাঁচাতে চান। যদি এই বাগান বিক্রি হয়ে যায় তবে হাজার হাজার চা শ্রমিক কাজ হারাবে। সেই জন্যই তারা আজ এই আন্দোলনে সামিল হন। চা বাগিচা শ্রমিক মহম্মদ নাসিরউদ্দিন এবং মিনতি ওরাওঁরা জানান, দীর্ঘ তিন মাস ধরে সমস্যা চলছে। সেখানে টুকরো টুকরো করে বাগানগুলি বিক্রি করার প্রতিবাদে সামিল হয়েছেন শ্রমিকরা। বাগান মালিক তাদের সঙ্গে বৈঠকে বসার কথা বললেও তাদের সাথে না বসে গোপনে বাগান বিক্রি করে দেওয়ার কথা জানতে পারেন তারা।

বাগান বিক্রি হয়ে গেলে তাদের কাজ চলে যাওয়ার একটা আশঙ্কা রয়েছে এবং কাজ থাকার কোন নিশ্চয়তা নাই। তাই শনিবার জমি দখল করে আন্দোলনে শামিল হল শ্রমিকরা। সংশ্লিষ্ট বিষয়ে সিপিএম কংগ্রেস জোট এর পক্ষে মহম্মদ সাকির আলম জানান, তৃণমূল নেতারা ধমকে মালিকদের জমি বিক্রি করতে বাধ্য করছে। শ্রমিকরা কাজ হারানোর ভয় পাচ্ছে ।বিষয়টি শ্রম দপ্তরে জানানো হয়েছে। শ্রমিকদের যেন কাজ না যায় তাই তারা এর বিরোধিতা করছেন। যদিও তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা জাহিদুর রহমান বলেন, তৃণমূল কংগ্রেস এর উপর কাঁদা ছিটালে হবে না। তারা নিজেরাই নিজেদের সঙ্গে লড়াই করছেন। মালিক তাদের প্রয়োজনে স্বেচ্ছায় জমি বিক্রি করছেন।

তাদের বিরুদ্ধে উঠে আসা সমস্ত অভিযোগ ভিত্তিহীন এবং মিথ্যা। তারা বরং শ্রমিকদের সঙ্গে রয়েছেন এবং শ্রমিকদের বলেছেন যারা যারা পারবে ছোট ছোট প্লটে জমি কিনে নিন। সেই কথা শুনে একাধিক শ্রমিক জমি কিনেছে। যারা নিতে পারেনি তারা বিরোধিতা করছে। তবে শ্রমিকদের জমি কেনার ক্ষেত্রে অনেকটাই ছাড় দেওয়া হয়েছে। আমরা শ্রমিকদের পক্ষে রয়েছি। কিন্তু শ্রমিকরা জমি দখল করবে এটা কখনো হতে দেওয়া যাবে না। বাগান মালিকদের তরফে গোবিন্দ ভাওয়াল জানান, শ্রমিকরা কাজ না করেই তাদের পয়সা দিতে হয়।

কখনো কখনো এক থেকে দেড় ঘণ্টার বেশি শ্রমিক কাজ করছে না। অথচ নিয়ম অনুযায়ী তাদের আট ঘন্টা কাজ করা উচিত। শ্রমিকদের সঙ্গে দফায় দফায় বসেও লাভ হয়নি কিছুই ।এ ধরনের ঘটনায় তারা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ। বাগান বিক্রি করতে চাইলেও অনেকে এসে দেখে গেছেন কিন্তু শ্রমিক অসন্তোষ এর জন্য বাগান কিনতে রাজি হননি। তাই শেষ পর্যন্ত টুকরো টুকরো করে বাগান বিক্রি করে দিতে বাধ্য হচ্ছেন তারা। তবে এ ক্ষেত্রে শ্রমিকদের কাজ যাবার কোন ভয় নেই। কারণ যারা চা বাগান কিনছেন তারা সকলেই শ্রমিকদের কাজে নেবেন কারণ শ্রমিকরা ছাড়া অন্য কেউ এই কাজ করতে পারবেন না।