অবতক খবর, মোথাবাড়ি : ছেলেধরা সন্দেহে নিরীহ মানুষকে গণপিটুনি, পুলিশের ওপর হামলার মতো ঘটনার যাতে পুনরাবৃত্তি আর না হয়, সাধারণ মানুষকে সচেতন হওয়ার ব্যাপারে আহ্বান করেছে মোথবাড়ি থানার পুলিশ। এদিকে দোষীদের উচিৎ শাস্তি দিতে ১০০ জনের নামে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে পুলিশ।
বুধবার রাতের পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় পুলিশ ১৪ জনকে গ্রেপ্তার করে। বাকিদের খোঁজে গ্রামে চিরুনি তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ। সংশ্লিষ্ট থানা এলাকায় কিছুদিন আগেই এ রকম এক মহিলাকে ছেলেধরা সন্দেহে গণপিটুনি দেওয়ার চেষ্টা হয়। পুলিশ উদ্ধার করতে গেলে পুলিশকে আক্রান্তের মুখে পড়তে হয়। তার রেশ কাটতে না কাটতেই আবার একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি। পুলিশ তদন্তে নেমেছে, এভাবে ছেলেধরা সন্দেহের ঘটনা কেনই বা ঘটছে। কেনই বা এলাকাবাসী ছেলেধরা সন্দেহে মহিলাদের নিজেদের হেফাজতে নিতে চাইছে। চকপ্রতাপপুর গ্রামের ঘটনাটি পুলিশ কঠোর হাতে নিয়ন্ত্রণ করতে চাইছে।
করোনা পরিস্থিতিতে বেআইনিভাবে মানুষের জমায়েত, সরকারি সম্পত্তি নষ্ট ও কর্তব্যরত অবস্থায় পুলিশের গায়ে হাত তোলা, পুলিশের কাজে বাধা-সহ একাধিক অভিযোগ এনে অভিযোগ দায়ের করেছে। বেশ কয়েকমাস আগে সংশ্লিষ্ট থানার রথবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের বাবলা স্ট্যান্ডে ছেলেধরা সন্দেহে এক মহিলাকে গণপিটুনি দেওয়ার চেষ্টা হয়। তখন ওসি ছিলেন সৌম্যজিৎ মল্লিক। ওই মহিলা আত্মীয়ের শিশুকে নিয়ে বাঙিটোলা থেকে বাবলা হয়ে নিজ বাড়ির দিকে যাওয়ার পথে সেখানে জনরোষের শিকার হন। পরে পুলিশ ওই মহিলাকে উদ্ধার করতে গেলে পুলিশের গাড়ি লক্ষ্য করে ইট ছোঁড়া হয়। পুলিশের গাড়ির কাঁচ ভাঙচুর হয়। প্রায় একইরকম ঘটনার পুনরাবৃত্তি চকপ্রতাপপুরে। সেখানে জনরোষের শিকার হন এক মহিলা। পরে পুলিশ তাঁকে উদ্ধার করতে গেলে পুলিশের ওপর হামলা চালায় এলাকাবাসীর একাংশ ।
এলাকার এক তৃনমূল নেতা তথা পঞ্চায়েত সদস্য হাসিমুদ্দিন আহমেদ বাবলা স্ট্যান্ডে ঘটনার বর্ণনা দিয়ে বলেন, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভিলেজ পুলিশ, সিভিক ও বিভিন্ন পুলিশের মাধ্যমে গ্রামে গ্রামে গড়ে তুলেছেন যোগাযোগ ও দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌছে যাচ্ছে পুলিশ। বর্তমান পুলিশ ও প্রশাসন অনেক মানবিক ও সংবেদনশীল। তাই ঘটনা ঘটলে পুলিশ প্রশাসনের নজর দিলেই পুলিশ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করছে। যদি ও এইসব ঘটনায় প্রকৃত অপরাধীরা আবার গা ঢাকা দেওয়ার চেষ্টা করে । নিরীহ মানুষ ও জড়িয়ে পড়ে।
পুলিশ জানিয়েছে, ওই মহিলার নাম সাহেরা খাতুন(৩২)। ইংরেজবাজার থানার কুমারপুরে বাড়ি তাঁর। শুক্রবার পরিবারের লোকেরা তাঁকে থানা থেকে বাড়ি নিয়ে আসেন। তাঁরা জানিয়েছেন মানসিক বিকারগ্রস্থ ওই মহিলা। মোথবাড়ি থানার ওসি বিটুল পাল বলেন, গুজব ছড়ানো ও গণপ্রহারের ঘটনা রুখতে পুলিশ সক্রিয় রয়েছে। পুলিশ জনরোষের শিকার হওয়া ব্যক্তিদের বাঁচাতে তৎপর রয়েছে । পুলিশের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। যা বাঞ্ছনীয় নয়। এই ধরনের অপ্রত্যাশিত ঘটনা যাতে আর না ঘটে, সচেতন হতে হবে সাধারণ মানুষকে।’