ঢ্যাড়া পিটাইনছে গো
তমাল সাহা
ঢ্যাড়া পিটাইনছে বাজনদার—
শুন…অ! শুন…অ!
দিশ্যে করোনা বুড়ি আইছ্যে। শুইনছি লাকি ডাইন বুড়ি।
ই ইকবার যারে ধোরে উরে ছাড়েক লাই বুট্যে।
কুত্তো সব ঝাড়ফুঁক, ফুসমন্তর, খড়ক ঝাঁটার বারি, কুনো কিছুতেই উকে ছাড়ান যায় না।
উ শুন…অ! শুন…অ!
করোনা ডাইন বুড়ি আইছ্যে।
উ করোনা ডাইন বুড়ি লাকি সব মাইনষকে ছুঁইয়ে ছুঁইয়ে বেড়াইন যায়।
যাকে ধরে উর আর রক্ষা লাই।
বাবুরা সব বলিন দিছে, হাত ধোও, নাকে মুখে কাপড় চাপান দাও, থুক যিখানে সিখানে ছিটকাইনবে লা।
ইতে করোনা বুড়ি আরও বাইড়্যে যাইবেক।
বাবুরা বইলছ্যে সরকার সব ব্যবস্থা লিছে।
একচল্লিশটো সুপার পিশালিটি হাসপাতাল বানাইছে।
ইশোলেসন, কুরিনটিন সব ব্যবস্থা কইরেছ্যে।
ই মাত্র ক দিনে কুত্তো সব ব্যবস্থা করিন দিছ্যে সরকার।
কুনো ভয় লাই। কুনো ভয় লাই।
আরে! টিভি দ্যাখ, টিভি দ্যাখ।
একুশটো বাংলা চেনেল দ্যাখ।
দু মিনিট পরপর সরকার ভাষণ মাইরছ্যে।
সরকার কি কি কইরছ্যে, কি কি করবেক সব বুইলছ্যে।
সরকার ইবার বিনি মাগনায় রিশোন দিবেক।
ও ঢোল বাজনদার! তু কি বুলিস রে!
সরকার ইখনও পর্যন্ত রিশনকার্ড দিতে পারেক লাই। সি তো তিন বছর হইয়ে গেলো আর তু বুলছিস সরকার করোনা হাসপাতাল, করিনটিন সব বানাইন দিছ্যে? আরে! ইসব ভূতুড়ে কথাটো বইলবিক লাই আর ইত্ত বচ্ছর লাইগছ্যে রিশন কার্ড দিতে?
এ পিট্যের দানাপানি দিবে বিনি পয়সায়?
ই কথাটো আশ্চয্য বুট্যে!
কুত্তো দৌড় করাইনলো সরকার।
ইকবার রিশন দুকানে লাইন দিলম।
কী হয়রানি বাপ রে বাপ!
সে কোত্তোরকম দরখাস্ত! তারপর গিলাম সেই রিশন অপিস।
সে কি ইখানে বট্যে!
সে কোত্তো দূর! তারপর গিলাম পঞ্চাত অপিসে, পঞ্চাত বাবুর কাছে ।
শালা শুধু দৌড় আর দৌড়।
ছুট্যেই মইরলাম। ইক্খনও তো রিশন কার্ড পালাম না!
মুদের তো কুনো রিশন কার্ড লাই। তো বিনা মাগনায় রিশন মিলবেক কি কইরে?
আরে তু বুঝিস লাই ,বুঝিস লাই। ইখন সরকার কুপন দিবেক, কুপন!
আরে! কি কইরে কুপন দিব্যেক? মুর তো রিশনকার্ডই লাই। কুপন দিবে কি কইরে?
উ সরকার বুঝেক লিবে।
তু ইকবার তো পঞ্চাত অপিসে যা!
ইখন না খাইয়ে মরি আর করোনা ডাইন মারে, সে তো একই হইলো বুট্যে।
সে তো মরণই হইল্যো।
করোনা লিলেও লিবেক, খুধা পিট্যে যম লিলেও লিবেক।
মরণ তো মুদের হাতের একমাত্র সম্বল বুট্যে।
মরণ তো মুদের চাইরদিকে ঘাপটি মেইরে রইছেরে বাজনদার!
মরণটোকে লিয়েই তো মুদের বাঁচন…