ভারতবর্ষের বিতর্কিত চিত্রকর, আন্তর্জাতিকে ছিল তার খ্যাতি। তিনি জন্মেছিলেন ১৭ সেপ্টেম্বর– বিশ্বকর্মা পুজোর দিনে!
তুমি নির্বাসনে যাও
তমাল সাহা
শেষ পর্যন্ত তিনি দেশ ছেড়ে চলে গেলেন
চলে গেলেন না, রীতিমত পালিয়ে গেলেন।
শিল্পীদের পালাতে হয়
এই পলায়ন পর্বের একটা অন্য মাত্রা থাকে,
থাকে মর্যাদা।
তিনি সঙ্গে নিলেন শৈল্পিক মনন
রঙ তুলি ক্যানভাস।
কোনোদিন গ্র্যান্ট রোডের ফুটপাতই ছিল
তার স্টুডিও ফোযার্স রোডের গ্যারেজে ছিল
তার রাতঘুম।
পেশা করে নিয়েছিলেন
সিনেমার হোর্ডিং, পোস্টার ব্যানার আঁকা।
সেই পয়সা থেকে কিনলেন রং তুলি ব্রাশ—
চিত্রময়তায় এনে দিলেন দ্রুতি।
তিনি ছিলেন শৈল্পিক খামখেয়ালি
নগ্নপদে বেমানান পোশাকে ঢুকে পড়লেন আভিজাত্যের আড্ডায়।
সাদা পোশাক, সাদা দাড়ি, নগ্নপদ,
দীর্ঘ তুলি হাতে তার।
যখন তখন বিতর্কের ঝড় তুলতে পারতেন তিনি।
তার ছবি বিক্রি হচ্ছিল না দেড়শ টাকায়ও কলকাতায়।
শেষ পর্যন্ত তা পৌঁছে গেল কোটির মুদ্রায়!
তিনি এঁকেছিলেন মানুষ, দেহাতি জীবন,নারী,
ধর্ম,পুরাণ,ইতিহাস, রাজনীতি,সমসাময়িকতা।
তিনি বিতর্ক তুললেন তুলিতে—
জরুরি অবস্থার রাষ্ট্রনেত্রী হয়ে উঠলো মা দুর্গা
সরস্বতী রূপ পেল নগ্নিকা
ভারতমাতা হলো অনাবূতা।
ধর্ম যখন শিল্প-সংস্কৃতির রাস্তা রুখে দিতে চায়
তখন শিল্পীর অন্য পথ খুঁজে নিতে হয়।
তার হাতে তো রক্ত ক্ষরণের আগ্নেয়াস্ত্র নেই
তার হাতে শুধু রঙ তুলি আর বিশাল ক্যানভাস।
ভারতীয় চিত্রকলার প্রাঙ্গণ থেকে
তিনি নির্বাসিত হলেন
নগ্ন পদে হেঁটে গেলেন মকবুল ফিদা হুসেন…