অবতক খবর , সংবাদদাতা,পশ্চিম মেদিনীপুর:- প্রায় নয় বছর পর নিজের গড়ে ফিরলেন সিপিএম নেতা তথা রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী সুশান্ত ঘোষ। বেনাচাপড়া কঙ্কাল কাণ্ডে নাম জড়িয়ে পড়ার পর হাজতবাসে কাটাতে হয়েছে তাকে। জামিনে মুক্তি পাওয়ার পরও নিজের ঘরে ফেরার অনুমতি ছিল না তার। অবশেষে সেই সুপ্রিমকোর্টে নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ার পর রবিবার নিজের ঘরে ফিরলেন সুশান্ত ঘোষ।
সেখান থেকেই তিনি স্পষ্ট জানান, তাঁকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়েছে, সব মুখোশ আমি খুলে দেব। এদিন চন্দ্রকোনা রোড এর জনসভা থেকে সুশান্ত ঘোষ অভিযোগ করেন, তার নামে মিথ্যা মামলা সাজানো হয়েছে। যাঁরা তাঁর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করেছিল তাঁদের মুখোস খুলতে শুরু করেছে। নাম না করেই তৃণমূলকে আক্রমণ করেছেন তিনি।এর পরেই তার হুংকার “তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পর থেকেই বারোটা বেজে গেছে রাজ্যের। আর ২০১৪ সালে বিজেপি দেশের শাসনে বসলে দেশের অবনতি ঘটেছে।” নোটবন্দি, জিএসটি এই অবক্ষয়ের কারণ। আদানি আম্বানির মতো কিছু গোষ্ঠীকে সুবিধা পাইয়ে দিচ্ছে কেন্দ্র সরকার এমনই অভিযোগ করেন তিনি।
তিনি বলেন, “তৃণমূলের বিদায় ঘন্টা বেজে গেছে।তবে বিজেপি তৃণমূলের থেকেও ১০০ গুন খারাপ।” এমনকি তৃণমূল থেকে বাঁচতে বিজেপির ঝান্ডা ধরছেন অনেকে এমন অভিযোগ করেন সুশান্ত ঘোষ। রবিবার পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার শালবনি বাজার থেকে বাইক রেলি করে সিপিএম দলের কর্মী ও সমর্থকরা সুশান্ত ঘোষ কে চন্দ্রকোনা রোডে নিয়ে যায় ।সুশান্ত ঘোষের সাথে উপস্থিত ছিলেন সিপিএমের বিধানসভার পরিষদীয় দলনেতা বিধায়ক সুজন চক্রবর্তী সহ দলের অন্যান্য নেতৃবৃন্দ। কিন্তু সিপিএমের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলাকমিটির সম্পাদক তরুণ রায় কিংবা পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার সিপিআইএম দলের প্রথম সারির নেতৃত্ব দের কাউকে চন্দ্রকোনা রোডে রবিবার দেখা যায়নি। কারণ রাজ্য নেতৃত্ব সিপিএম দলের জেলা নেতৃত্বকে অন্ধকারে রেখে তাকে পুনরায় জেলায় সম্পাদকমন্ডলীর পদে বসিয়েছে। সেইসঙ্গে সুশান্ত ঘোষের চন্দ্রকোনা রোডের এই কর্মসূচি নিয়ে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার সিপিএম নেতৃত্বকে রাজ্য নেতৃত্ব কিছুই জানায় নি। যার ফলে সুশান্ত ঘোষের চন্দ্রকোনা রোডে আশা নিয়ে সিপিএম এর মধ্যে বিভাজন তৈরি হয়েছে। তবে এ বিষয়ে সিপিএমের জেলা সম্পাদক তরুণ রায় কোন কিছুই বলতে চাননি।
কিন্তু কেন সিপিএমের জেলা সম্পাদক তরুণ রায় চন্দ্রকোনা রোডের সভায় যায়নি তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। বিধানসভা নির্বাচনের আগেই বাম কংগ্রেস জোট সুশান্ত ঘোষ কে নিয়ে দলীয় কর্মীদের মনোবল ফিরিয়ে আনার চেষ্টাযখন শুরু করেছে। সেই সময় সিপিএম দলের জেলা কমিটি সুশান্ত ঘোষ কে নিয়ে বিড়ম্বনায় পড়েছে ।এখন দেখার সিপিএমের জেলা নেতৃত্ব নিয়ে কি করে সেদিকেই তাকিয়ে রয়েছে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার রাজনৈতিক মহল। তবে সুশান্ত ঘোষ কে নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের শালবনির বিধায়ক শ্রীকান্ত মাহাতো বলেন মানুষ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাথে রয়েছে আগামী দিনেও থাকবে। উন্নয়ন ও শান্তি তৃণমূল কংগ্রেস প্রতিষ্ঠা করেছে।
তৃণমূল কংগ্রেস মানুষকে খুন করেনি ,যারা খুনের রাজনীতি করতো, যারা খুনের সঙ্গে যুক্ত হয়েছিল তাদের মুখে কোনো বড় বড় কথা মানায় না। তিনি আরো বলেন যে আমরা হিংসা চাইনি, সন্ত্রাস চাইনি, মানুষের রক্ত চাই না, আমরা চাই শান্তি ও উন্নয়ন। তাই উন্নয়নও শান্তির বার্তা দিতে সোমবার পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার মেদিনীপুর কলেজ মাঠে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জনসভা করবেন বলে বিধায়ক শ্রীকান্ত মাহাতো জানান। তিনি বলেন সুশান্ত ঘোষ তার দল এর মত কাজ করবে, আমরা আমাদের মতো কাজ করব। তাই সুশান্ত ঘোষ কে নিয়ে বেশি কিছু কথা বলবো না। তিনি বলেন ২০১১ সালে মানুষ ওদের আস্তাকুড়ে ছুড়ে ফেলে দিয়েছে , বাংলার মানুষ আর ওদের ক্ষমতায় ফিরিয়ে আনবে না । তাই সুশান্ত ঘোষ যতই চেষ্টা করুক চন্দ্রকোনা রোড ও গড়বেতার মানুষের আশীর্বাদ ফিরে পাবে না। ওই এলাকার মানুষ আগামী দিনে ওকে প্রকৃত জবাব দেবেন।