অবতক খবর,৪ ডিসেম্বর: বিক্রেতার চেনা ছবি, চেনা স্বর একদিনেই মুছে দিয়েছিলেন তিনি। স্বরচিত গান গেয়ে গেয়ে বাদাম বিক্রিতে নতুন ছন্দ এনেছিলেন। প্রায় রাতারাতিই ভাইরাল হয়ে গিয়েছেন বীরভূমের দুবরাজপুরের ফেরিওয়ালা ভুবন বাদ্যকর। কিন্তু ভাইরাল হওয়াই যেন কাল হয়ে গেল তাঁর সাধারণ এক বাদাম বিক্রেতার জীবনে। আপাতত স্বরচিত গানের কপিরাইট নিয়ে তিনি লড়ছেন। ভুবনের গান এখন সোশ্যাল মিডিয়ার সর্বত্র ঘুরে বেড়াচ্ছে। বহু প্রশংসাও কুড়োচ্ছে। কিন্তু যাঁরা গানটি শুনে এত আনন্দ পাচ্ছেন, তাঁদের একটা বড় অংশই জানেন না যে স্থানীয় ভাষায় এই মিঠে গানটির রচয়িতা ভুবন বাদ্যকার। অভিযোগ, সৌজন্য দূর অস্ত, তাঁর গানটি সরাসরি চুরি করা হচ্ছে। শুক্রবার দুবরবাজপুর থানায় তিনি এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ দায়ের করলেন।
”আমার কাছে নাইতো বুবু ভাজা বাদাম / আমার কাছে পাবে শুধু কাঁচা বাদাম” – ভুবন বাদ্যকরের তৈরি গানের মূল বক্তব্য এটিই। গোটা গানটি আরও দীর্ঘ। তাতে গ্রামবাংলার আরও নানা অনুষঙ্গ এসেছে। ছন্দে-তালে বাদাম বিক্রেতার এই গানটি নিমেষের মধ্যে ছড়িয়ে গিয়েছে মুখে মুখে। ইউটিউব, ফেসবুক খুললেই ভুবনবাবুর গানটি শোনা যাচ্ছে। নানারকমভাবে তার উপস্থাপনায় এই মুহূর্তে জনপ্রিয়তা তুঙ্গে গানটির। কিন্তু এরপরই দেখা দিয়েছে বিপত্তি।
মনে করা হচ্ছিল, এতটা ভাইরাল হওয়ার পর ভুবনবাবুর খুচরো ব্যবসার শ্রীবৃদ্ধি হবে। কিন্তু বাস্তবে হল উলটোটা। ভুবন বাদ্যকরের ছেলের অভিযোগ, ”বাবার এই গান ছড়িয়ে পড়ার পর নানা জায়গা থেকে লোকজন শুধু গান শুনতে আসছেন। কিন্তু বাদামও কিনছেন না, গান শুনে টাকাও দিচ্ছেন না। গান শুনে চলে যাচ্ছেন। বাবা যেখানে বাদাম বিক্রি করতে যাচ্ছেন, সেখানে শুধু সবাই গান শুনছে, কেউ বাদাম আর কিনছে না। গত কয়েকদিন ধরে এরকমই হচ্ছে। বাদাম বিক্রি না হওয়ায় আয় বন্ধ হয়ে গিয়েছে আমাদের। সমস্যায় আছি।” ভুবনবাবু দুবরাজপুর থানায় গিয়ে লিখিত অভিযোগে এসব কথা জানিয়েছেন।
দু’বেলা দু’মুঠো অন্ন জোগাড়ের জন্য যিনি ঘুরে ঘুরে বাদাম বিক্রি করেন, গান গেয়ে যিনি পসরা বাড়াতে চান, স্রেফ সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া তাঁকে বিশেষ কোনও সুবিধা মোটেই দিচ্ছে না। উলটে একাধিক জটিলতা তৈরি হচ্ছে তাঁর জীবনে। এমন চাননি ভুবন বাদ্যকর।