অবতক খবর,৪ ফেব্রুয়ারি: ২ ফেব্রুয়ারি চলে গেছে। ঘটনা রেখে গেছে দাগ। সময় পাল্টায়— চলে আসছে দুঃশাসনের রাত। দুঃশাসনেরা চেনে দ্রৌপদী,চেনে সীতা। শ্রী কৃষ্ণ যতই গীতা পড়ুক,এই ভারতবর্ষের জ্বলতে থাকবে নারীদের চিতা।
প্রতিবাদ কি বুঝতে পেরেছিল ক্ষমতা কতদূর যায়? কনকনে ঠাণ্ডা তবু দাঁড়িয়েছিল প্রতিবাদ। ভেবেছিল,মেয়েতো ক্ষমতা বোধহয় একটু নত হবে। কে যেন বলে উঠল, ক্ষমতা প্রদর্শনই ক্ষমতার কাজ।
দক্ষিণ দিনাজপুরের হাওয়া তখন ঠান্ডায় ভারী হয়েছে। থানা গঙ্গারামপুর। নামটি বেশ ভালো। গঙ্গা+রাম-পুর–গঙ্গারামপুর। হায় গঙ্গা! হায় রাম! আমরা কোথায় এলাম। গ্রামটির নামটিও বেশ ভালো। নন্দনপুর। নন্দন শুনলেই মনে পড়ে যায় যশোদা নন্দন শ্রীকৃষ্ণের নাম। এই গ্রামে থাকে প্রতিবাদ।
প্রতিবাদ হয়ে উঠল একটি নাম স্মৃতিকণা দাস। পেশা পার্শ্বশিক্ষক। আরে ওই প্যারা টিচার! সয়রাপুর কেএমবি হাই স্কুলে পড়ান। জমির কথা উঠলেই নারীরা জড়িয়ে পড়ে। তেলেঙ্গানা তেভাগা তরাইয়ে। শুধু নারী আর নারী। প্রতিবাদ গর্জে উঠে বলেছিল, জমির উপর দিয়ে রাস্তা হতে দেব না। সব জায়গায় এক নিয়ম। আমাদের বেলা কেন অন্য নিয়ম? অন্যের জমিতে ১২ ফুট নেবে তুমি, আমার বেলায় ছাড়তে হবে ২৪ ফুট ভূমি।
ক্ষমতা বলে,কি যে বলে? রাস্তা হতে দেব না! জমি দেব না!আরে জমি রাস্তা কি তোর? জমি রাস্তা তো ক্ষমতার। আমরা মাটি মানুষ নিয়ে কাজ করি। এই জমির উপর দিয়ে রাস্তা হবে, ক্ষমতার জোরে হবে।
তারপর? তারপর ক্ষমতা তো তৈরি, প্রতিবাদকে রড দিয়ে এইসা মারল, প্রতিবাদ পড়ে গেল মাটিতে। মা-মাটি-মানুষ স্লোগানটি সার্থক হল। এরপর দড়ি দিয়ে বাঁধা হলো দুই পা। অন্য ক্ষমতারা জড়ো হল। বলল, হাত দুটো বেঁধে ফেল্। তারপর রাস্তা দিয়ে হেঁটে হ্যাঁচড়াতে হ্যাঁচড়াতে প্রতিবাদকে টেনে নিয়ে চলল ক্ষমতা। টানতে টানতে কত দূর যায়? কত ফুট? কত ফুট যায় প্রতিবাদ?
প্রতিবাদ বলতে লাগল, আমি একজন মহিলা। আমি একজন শিক্ষিকা। ক্ষমতার লিঙ্গ ভেদ নেই, সে নারী-পুরুষ বোঝেনা। ক্ষমতার কাছে সবাই সমান।
বিধ্বস্ত প্রতিবাদকে শেষ পর্যন্ত টেনে আনা হল রাস্তা তৈরির গাড়িটির কাছে। চলতে লাগল রাস্তা তৈরির গাড়ি। প্রতিবাদ পড়ে রইল রাস্তার ধারে। তারপর ক্লান্ত অসহায় প্রতিবাদ চলে গেল হাসপাতালে।
এই বঙ্গোপসাগরীয় উপকূলে শয়তানেরা হাঁটে চলে কথা বলে। দ্রৌপদীরা, সীতারা অপমানিত লাঞ্ছিত, মাথানিচু করে চলে….