বারো দিন লড়াই করে মরে গেল ময়নাগুড়ির কিশোরীটি সোমবার ২৫ এপ্রিল,২০২২।
দগ্ধ দিনলিপি–১
তমাল সাহা
অগ্নিদগ্ধ ছিল কিশোরীটি
তাকে ধর্ষণের চেষ্টা করেছিল কারা?
দশদিন লড়াইয়ের কথা লেখা আছে বইয়ে
মেয়েটি নাবালিকা ছিল
বারো দিন লড়াই করেছিল, শেষে গেল মরে।
মরে যাওয়াই স্বাভাবিকতা।
কেন, এসব প্রশ্নবোধক সর্বনাম আর নেই ব্যাকরণের পাতায়।
খরতপ্ত দিন
চোখ জলে ভিজতেই বাষ্প হয়ে উড়ে যায়…
ময়নাগুড়ির সেই মেয়েটি এবং একটি খাতা। মরার পর মা সেই খাতা আগলে বসে আছে। পৃষ্ঠার পর পৃষ্ঠা হাত বুলিয়ে যাচ্ছে। মেয়ের হাতের স্পর্শ পাচ্ছে কিনা আমি জানিনা। ঘটনা ২৫ এপ্রিল, ২০২২।
দগ্ধ দিনলিপি–২
জানি না
গানের খাতা, না খাতায় গান আমি কি জানি?
ময়নাগুড়ির কিশোরী মেয়েটি গায়ে আগুন দিয়েছিল অপমানে লজ্জায় ভয়ে কোন কারণে
আমি জানিনা
বারো দিন দহনযুদ্ধের সঙ্গে লড়াইয়ের পর
শেষে দুই অক্ষরের একটি শব্দ বেছে নিয়েছে–
মরে গিয়েছে
আমি জানিনা
গান ভালোবাসতো কিনা
আমি জানিনা
কবিতা লিখত কিনা
তবে তার খাতার পাতায় লেখা ছিল কটি কবিতা একটি গান
ওইটুকু মেয়ে রবীন্দ্রনাথকে আঁকড়ে ধরেছিল কিনা
আমি জানি না
ইংরেজি খাতায় লেখা ছিল বাংলা গান
সেটা কার লেখা আমি জানিনা–
প্রাণ ভরিয়ে তৃষা হরিয়ে /মোরে আরো আরো দাও প্রাণ…
পুরো গানটাই লেখা ছিল কিনা
আমি জানি না
মৃত্যুর কয়েক দিন আগে কন্যাশ্রীর আবেদন করেছিল শুনেছি
আমি ঠিক জানি না
গান কবিতা আগুন
আগুন কবিতা গান এবং একটি মেয়ে
স্নায়ুকোষে হাঁটাচলা করছে…