অবতক খবর,অয়ন চ্যাটার্জী,২৭ নভেম্বর: বায়ু কলুষিত হওয়ার কারণে ভারতের রাজধানী দিল্লির আবহাওয়া হয়ে উঠেছে বিষাক্ত , চিকিৎসকদের মতে দিল্লিতে এই মুহূর্তে খোলা আকাশের নিচে একটি নিঃশ্বাস নেওয়া মানে একাধিক বার ধূমপান করার সমান, তাই দিল্লি রাজ্যবাসীর প্রাণ খুলে নিঃশ্বাস নেওয়া হয়ে উঠেছে দায়।

১৯০০ শতকের মরক্কো দেশের এক বিখ্যাত সমাজবিজ্ঞানী ও লেখিকা ফাতেমা মারনিসি বলেছিলেন – “প্রকৃতি মানুষের সবচেয়ে বড় বন্ধু”। বর্তমানে দিল্লী বাসীদের কাছে প্রকৃতি হয়ে উঠেছে সবচেয়ে বড় “ভয়”।
ঘটনাটি শুরু হয় ,যখন যমুনা নদী দূষিত হওয়ার কারণে গোটা দিল্লিবাসিরা জল সংকটের মুখে পড়ে , পরিস্থিতির চাপে প্রায় ৫.৫ কোটি মানুষই সেই নদীর দূষিত জল ফুটিয়ে পানীয় হিসেবে ব্যবহার করেন তার পাশাপাশি সেই দূষিত জলে স্নান করার কারণে ” দিল্লি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের” গবেষণা অনুযায়ী দিল্লির রাজ্যবাসীরা ঢলে পড়ছে রোগের কোলে শুধু তাই নয় রাজ্যবাসীর পাশাপাশি রাজ্যের পশু পাখিদের ওই দূষিত নদীর জল পান করাতে একই অবস্থা, এই নিয়ে দিল্লির রাজ্য সরকার চিন্তায় চিন্তিত।

জাতীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় গবেষণা অনুযায়ী দিল্লির পাশাপাশি কলকাতার পবিত্র গঙ্গা নদীকে দূষিত করার থেকে যদি নিয়ন্ত্রণে না আনাযায় তাহলে আগামী দিনে দিল্লির যমুনা নদীর মতো কলকাতারও একই অবস্থা হতে পারে, তাই এই নিয়ে পশ্চিমবাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি গঙ্গাকে দূষণমুক্ত করার জন্য করা অনুক্ষেপ নিয়েছেন, বর্তমানে সে তুলনায় কলকাতার গঙ্গা নদী এখন দূষণের দিক থেকে অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে।

দিল্লিতে একদিকে যমুনা নদীর দূষণকে নিয়ন্ত্রণের দিকে আনতে আরেকদিকে প্রত্যেক বছরের মত এ বছর বায়ু দূষণের আবির্ভাব, গবেষকদের মতে প্রত্যেক বছরের থেকে এবারের ২০২৪ সালের নভেম্বর মাসে বায়ু দূষণ হলো অতিরিক্ত ক্ষতিকারক ফলে দিল্লির আবহাওয়া মাত্রা PM2.5 AQI216 নেমেছে তার পাশাপাশি কলকাতা দূষণের মাত্রা PM2.5 AQI154 অতএব কলকাতাও দিল্লির মতো আকার ধারণ করতে পারে এবং দিল্লির চিকিৎসকেররা জানিয়েছেন এই মুহূর্তে মাক্স ছাড়া নিঃশ্বাস নেওয়া হতে পারে জীবনের ঝুঁকি , চিকিৎসকরা উদাহরণ সহকারে বলেছেন এই মুহূর্তে একটি নিশ্বাস নেওয়া ৪০ টি অধিক তামাকের ধোঁয়াকে শরীরের মধ্যে নেওয়ার সমান। অর্থাৎ দিল্লির আবহাওয়া কতটা দূষিত এই মুহূর্তে ,যে কারণে দিল্লি এনসিআরে সমস্ত ইউনিভার্সিটি এবং স্কুল বন্ধ রেখে বিদ্যার্থীদের অনলাইনে মাধ্যমে শিক্ষা দেওয়া হচ্ছে , তার পাশাপাশি অন্য রাজ্য থেকে আসা যানবাহনের পলিউশন সহ বাকি নথিপত্র গুলো দিল্লী পুলিশ কড়া ভাবে যাচাই করার পর দিল্লিতে প্রবেশের অনুমতি দিচ্ছেন। আর্থিক অবস্থায় এবং স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় সবচেয়ে বড় ক্ষতির মুখে এখন দিল্লিবাসীরা।

দিল্লির প্রত্যেক হসপিটালে বেডের অভাব, বাড়ির বয়স্ক থেকে শুরু করে তরুন সমাজ কাউকে প্রকৃতি ছাড়েনি। অসুস্থতার ভয় প্রত্যেক নাগরিকেরা নিজেদের ঘরবন্দি করে রেখেছেন তার পাশাপাশি ঘরের মধ্যেও মার্কস ব্যবহার করা বাদ দেয়নি, প্রত্যেকটি হসপিটালে বেড সহ অক্সিজেনের অভাব দেখা গিয়েছে, ফলে নাগরিকদের অনেকের মৃত্যু ঘটেছে কিন্তু তার মধ্যে বেশিরভাগ বয়স্ক।

দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী “আতিশি মারলেনা” এইসব ঘটনায় সম্পূর্ণ দায়ী করেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী সহ অন্য রাজ্যের মন্ত্রীকে , এবং উনি প্রত্যেক সংবাদ মাধ্যমে জনগণদের জানান “দেশ বাঁচাতে হলে প্রধানমন্ত্রীকে বর্জন করতে হবে” এই কথায় প্রধানমন্ত্রীর সমর্থকেরা “আতিশি মারলেনা” ওপর রুষ্ট।

শুধু তাই নয় “আতিশি মারলেনা” বক্তব্য কেন্দ্রীয় সরকারের তরফ থেকে কোন সাহায্য তাকে করছে না এবং ভবিষ্যতের কথা মাথায় রেখে তিনি কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে আবেদন করেছে কৃত্রিম বৃষ্টি অর্থাৎ আর্টিফিশিয়াল রেন দিল্লিতে করার জন্য। মুখ্যমন্ত্রীর দাবি এর ফলে পরিবেশ ও পরিস্থিতি অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে তিনি আনতে পারবেন কৃত্রিম বৃষ্টির দ্বারা। এই ভবিষ্যতের পরিকল্পনা তিনি সংবাদমাধ্যমের কাছে প্রকাশিত করেছেন।

গবেষকদের মতে শুধু দিল্লি না দিল্লির পাশাপাশি পশ্চিমবাংলার সহ নানা রাজ্যে দিল্লির মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে এবং গবেষকদের গবেষণা অনুযায়ী দেখা গেছে এই দূষণ গোটা বিশ্বে ছড়াতে পারে, যদি এখন এটা নিয়ন্ত্রণে না আনা যায়। এই নিয়ে মন্ত্রী থেকে শুরু করে চিকিৎসকেরা সকলে চিন্তিত। অনেকের আবার বলছে দূষণের দিক থেকে আগামী দিনে কলকাতাও দিল্লির মতো ভয়াবহ রূপ ধারণ করতে পারে যদি দুজনকে নিয়ন্ত্রণে না আনা যায় তাই পশ্চিমবঙ্গ সরকার এই বিষয়ে এখন থেকে কড়া পদক্ষেপ নিতে চলেছেন তার পাশাপাশি প্রত্যেক রাজ্যে পরিবেশ বাঁচানোর জন্য একাধিক গাছ লাগানো শুরু হয়েছে রাজ্যবাসীরা যাতে বাতাসে অক্সিজেনের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে।