অবতক খবর , পিন্টু প্যাটেল , বর্ধমান :- গোটা ভারত বর্ষ জুড়ে যখন বাজারে চায়না মোমবাতি ও টুনিবাল্পের রমরমা, ঠিক সেই সময়ে মাটির প্রদীপের চাহিদা থাকলেও মাটির অভাবে প্রতিযোগিতার বাজারে যোগান দিতে পারছেন না ,পূর্ব বর্ধমানের কালনার সাতগাছি,মালোপাড়া, মেদগাছি ও বাধাগাছি গ্রামের মৃৎ শিল্পীরা।চাইনা বাতিকে পেছনে ফেলতে অল্প মাটি নিয়ে দিনরাত কড়া পরিশ্রম চালিয়ে যাচ্ছেন কয়েকশো মৃৎ শিল্পীরা।
বিদেশী মোমবাতি ও টুনিবাল্পকে টেক্কা দিতে কোমর কষলেও,মাটির অভাবে চরম সংকটে কালনার কয়েকশো মৃৎ শিল্পীরা,প্রতিযোগিতার বাজারে প্রদীপের চাহিদা থাকলেও সেই মাটির অভাবে বেকায়দা পড়েছেন মৃৎ শিল্পীরা। এখনকার সময়ে যে কোন আলোর উৎসব ও দীপাবলিকে কেন্দ্র করে বাজার মাতিয়েছে রং বেরঙ্গের বৈদ্যুতিক লাইট। যাকে আমরা এক কথায় টুনিবাল্প বলে থাকি। এই টুনিবাল্পের দাপটে প্রতিবছর মার খেয়েছে কালনার প্রদীপ শিল্পীরা। আর তাই টুনিবাল্পের সঙ্গে পাল্লা দিতে কোমর বেঁধে ময়দানে নেমে পড়েছেন কালনার সাতগাছিয়া, মেদগাছি বাধাগাছি ও মালোপাড়ার বেশ কয়েকটি গ্রামের মৃৎ শিল্পীরা, তাঁরা সাবেকী প্রদীপ বানানোর পাশাপাশি সাধারন মানুষদের নজর কারতে এবারে নতুন মডেলের প্রদীপ তৈরি করছেন। তাই আসে পাশের গুপ্তিপাড়া ও কালনা জুড়ে টেরাকোটার মৃৎ শিল্পীদের ব্যস্ততা এখন তুঙ্গে।
নাওয়া খাওয়া ভুলে এই গ্রামের প্রতিটি বাড়িতে সকল সদস্য মিলে টেরাকোটার আধুনিক ডিজাইনের ছোট বড়ো প্রদীপ বানিয়ে চলেছেন। সাধারনত ভাগীরথী নদীর বা চাষের জমি থেকে এঁটেল মাটি দিয়েই এই প্রদীপ গুলি বানানো হয়। এরপর তাতে জল মিশিয়ে মেখে আটা মাখার মত করতে হয়। সেই মাটিকে বিভিন্ন ডিজাইনের সাঁচে ফেলে হরেক রকম অত্যাধুনিক মাটির ছোট থেকে বড় প্রদীপ তৈরি করা হয়। সেগুলিকে একের পর এক জোড়া লাগিয়ে সুজজ্জিত প্রদীপের ঝাড় বা স্ট্যান্ড প্রদীপ ও পঞ্চ প্রদীপ ও তৈরি করা হয়।
এবছর এই গ্রামের মৃৎ শিল্পীরা কয়েক হাজার এরকম প্রদীপ বানিয়েছেন। তা এখন রোদে শুকিয়ে আগুনে সযত্নে পুড়িয়ে বাজারে পৌঁছে দেওয়ার অপেক্ষায় রয়েছে। আজ তাঁদের প্রদীপ শুধু জেলার মধ্যেই সিমাবদ্ধ নেই, এরই মধ্যে অন্যান্য জেলা সহ ভিন রাজ্য থেকে কালনার মৃৎ শিল্পীদের কাছে একাধিক ডিজাইনের প্রদীপের অর্ডার এসে পৌঁছয়।
আর তাই হাড়ি, সরা ও সাবেকী প্রদীপ বানানোর সঙ্গে সঙ্গে অত্যাধুনিক টেরাকোটার প্রদীপ বানাতে বেশি উৎসাহ দেখাছেন তাঁরা।কিন্তু আজও তেমন দাম মেলেনা,তাও প্রত্যেক বছর দীপাবলি আসতেই মাটির প্রদীপ বানিয়ে চলে,শুধু বাংলার পুরোনো সংস্কৃতিকে বাঁচিয়ে রাখতে।