আনন্দ মুখোপাধ্যায় :: অবতক খবর :: ৩রা ডিসেম্বর :: নয়াদিল্লি :: জাতীয় নাগরিক পঞ্জি বা এনআরসি নিয়ে ভারতজুড়ে রাজনৈতিক উত্তেজনার পারদ এখন তুঙ্গে। সম্প্রতি পার্লামেন্টে বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি ও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেছিলেন, শুধু আসাম নয়, গোটা দেশেই একযোগে এনআরসি কার্যকর করা হবে
গতকাল ভারতের কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং বলেছেন, ভোটের ফলে কিছু আসবে-যাবে না। ভারতজুড়ে এনআরসি হবে।
এই নিয়ে সম্প্রতি সংসদে সরব হয়েছিলেন বর্ধমান-দুর্গাপুর কেন্দ্রের বিজেপি সাংসদ ও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুরিন্দর সিংহ আহালুয়ালিয়া । সংসদের অধিবেশন কক্ষে পরিষ্কার করে দেন কি আছে এবং কি থাকবে এই বিলে । আহালুয়ালিয়াজী সংসদে স্পষ্ট করে বলেন যে এতে একজন ভারতীয়রও ক্ষতির সম্ভাবনা নেই ।
এবার ঝাড়খন্ড এর বোকারোয় এক নির্বাচনী জনসভায় প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং বলেন, ‘আমরা ভারতের প্রতিটি রাজ্যে এনআরসি কার্যকর করব। কে দেশের বৈধ নাগরিক, আর কে অনুপ্রবেশকারী, তা জানার অধিকার দেশবাসীর রয়েছে। কিছু রাজনৈতিক দল এতে আমাদের সাম্প্রদায়িক বললেও আমাদের কিছু আসে-যায় না।’রাজনাথ সিং এ কথাও বলেন, ‘নির্বাচনী ইশতেহারে আমরা যখন রামমন্দির নির্মাণের কথা বলেছিলাম, তখন অনেকে হেসেছিলেন। কিন্তু এবার রামমন্দির নির্মাণ রোখার ক্ষমতা কারও নেই। বিজেপির নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি মোতাবেক অযোধ্যায় আমরা এক সুবিশাল রামমন্দির তৈরি করব।’
ভারতীয় পার্লামেন্টে কংগ্রেস পরিষদীয় দলের নেতা সাংসদ অধীর চৌধুরী গতকাল বলেছেন, ‘মোদি ও অমিত শাহও তো অনুপ্রবেশকারী। কারণ তাঁরা নিজেরাই প্রবাসী। ভারত সবার। দেশটা কারও ব্যক্তিগত সম্পত্তি নয়।
নরেন্দ্র মোদি ও অমিত শাহ ভিন্ন রাজ্যের। দিল্লিতে তো তাঁরাও অনুপ্রবেশকারী। তাঁরা গুজরাট থেকে দিল্লিতে এসেছেন। তাই তাঁরা নিজেরাই প্রবাসী।’ অধীর চৌধুরী প্রশ্ন করেন, অমুসলিম ৬টি সম্প্রদায়ের মানুষ কি নাগরিক সংশোধনী বিলের আওতায় নাগরিকত্ব পাবেন?
সম্প্রতি পশ্চিমবঙ্গের তিনটি বিধানসভার শূন্য আসনে উপনির্বাচন হয়। সেই নির্বাচনে তিনটি আসনেই হারে বিজেপি। এই তিনটি আসনের একটি করে ছিল তৃণমূল, কংগ্রেস ও বিজেপির। বিজেপি দাবি করেছিল, তিনটি আসনেই তারা জয়ী হবে। কিন্তু ফল হয়েছে উল্টো। তিনটি আসনই যায় তৃণমূলের ঝুলিতে।
এই জয়ের পর পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে এই কথা চালু হয়েছে যে, এনআরসির কারণেই তৃণমূল জিতেছে। আর হেরেছে বিজেপি। কারণ, এনআরসির বিরুদ্ধে তীব্র আন্দোলনে রয়েছে তৃণমূল। অন্যদিকে এনআরসি কার্যকর করার পক্ষে রয়েছে বিজেপি।এখন দেখার এই রাজ্যে এনআরসি লাগা করার বিরুদ্ধে তৃণমূলের লড়াইটা কেমন হবে ।