অবতক খবর,৮ জুলাই,ব্যারাকপুর :নিজের শহরকে চেনাতে, পাশাপাশি পরিবেশ রক্ষা,গাছ লাগান, প্রাণ বাঁচান, পশুপ্রেম ও মানব কল্যাণের বার্তা ছড়িয়ে দিতে রবিবার সকালে নিউ বারাকপুর কৃষ্টি প্রেক্ষাগৃহের সামনে থেকে সাইকেলে কেদারনাথ যাত্রা শুভ শুরু করলেন কর্মহীন টোটো চালকের।

ছোট্ট শহর নিউ ব্যারাকপুরের নাম অনেকের কাছেই অজানা। তাই নিজের এলাকার নাম দেশবাসী বেশি করে জানুক, এই জেদ নিয়ে নিউ বারাকপুর থেকে সাইকেলে প্যাডেল করেই দুর্গম পথ কেদারনাথের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করলেন কর্মহীন টোটো চালক প্রতীক রক্ষিত।

পূর্বে ইন্টারনেট সংযোগের টেকনিশিয়ান হিসেবে কাজ করলেও, পরবর্তীতে টোটো চালক হিসেবেই সকলেই চেনেন প্রতীককে। তবে বর্তমানে নানা সমস্যার সম্মুখীন হয়ে বিক্রি করতে হয় সেই টোটোও। এখন তাই বেকার কর্মহীন জীবন কাটছে প্রতীকের। এই পরিস্থিতিতে, নিউ ব্যারাকপুর থেকে সর্বপ্রথম কোন ব্যক্তি সাইকেল নিয়ে কেদারনাথ যাত্রা করছেন।

পূর্বে ১২৫ সিসির বাইক নিয়ে লাদাখ ভ্রমণের দীর্ঘ অভিজ্ঞতা রয়েছে তার। তবে এবার প্রায় ১৬০০ কিলোমিটার পথ পেরিয়ে, শুভ রথযাত্রায় দেবাদিদেবের এই ধাম জয়ের লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছেন নিউ ব্যারাকপুরের প্রতীক রক্ষিত। এই যাত্রায় তার সময় লাগবে প্রায় ৩০ থেকে ৩৫ দিন। ঝাড়খান্ড, উত্তরপ্রদেশ, উত্তরাখান্ড হয়ে গন্তব্যে পৌঁছানোর রুট ম্যাপ স্থির করেছেন কর্মহীন টোটো চালক প্রতীক।

বর্তমানে নিউ ব্যারাকপুর পৌরসভার ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের পূর্ব কোদালিয়া বাসিন্দা তিনি। রবিবার সকালে কৃষ্টি অডিটোরিয়ামের সামনে থেকে শুরু করলেন তার শুভযাত্রা। তবে কেন এমন উদ্যোগ তার! তা নিয়ে কথা বলতেই জানা গেল, কাউকে নিউ বারাকপুর বললে সে ঠিকমতো চিনতে পারে না। তখন কলকাতার কাছে সহ নানা স্থানের কথা বলে চেনাতে হয়। এইখান থেকেই প্রতীকের আপত্তির শুরু। জেদ চেপে বসে কেন নব বারাকপুর শহর কে চেনাতে গেলে কলকাতার পরিচয় দিয়ে চেনাতে হবে!

তাই কোন প্রশাসনিক বা রাজনৈতিক ব্যক্তি হিসেবে নয়, নিজের শহরকে চেনাতেই সাইকেলে প্যাডেল করে দুর্গম পথ পাড়ি দিয়ে মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা প্রতীকের। পথে যে সকল মানুষের সঙ্গে দেখা হবে বা যে জায়গাগুলো দিয়ে তিনি যাবেন সেখানকার মানুষদের নিউ বারাকপুর শহরের কথা তুলে ধরে পরিচিত করাবেন এই সাইকেলে কেদারনাথ ভ্রমণকারী। সাইকেলে বেঁধে নিয়েছেন টেন্ট, প্রয়োজনে রাস্তার ধারেই কাটাবেন রাত। তার এই যাত্রার কথা শুনে ইতিমধ্যেই সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে স্থানীয় নিউ ব্যারাকপুর থানা সহ পুরসভার পুরপ্রধান ও জনপ্রতিনিধিরা।

পাশাপাশি বেশ কিছু বাইক রাইডার সংস্থার সাহায্যেও মিলছে প্রতীকের এই সাইকেলে কেদারনাথ যাত্রার পথে, বলেই জানান তিনি। কিন্তু জেদ একটাই ‘আমার শহর নিউ ব্যারাকপুর’ কে চিনুক সকলে। প্রতীকের এমন উদ্যোগকে কুর্নিশ জানিয়েছেন নিউ ব্যারাকপুর পুরসভার চেয়ারম্যান প্রবীর সাহা এবং থানার ওসি সুমিত কুমার বৈদ্য ও।

রবিবার সকালে প্রতীকের শুভ যাত্রায় তাকে উত্তরীয় পরিয়ে ও ফুলের তোড়া দিয়ে অভ্যর্থনা জানান থানার ওসি সুমিত কুমার বৈদ্য সহ অন্যান্য আধিকারিক রাও। ছিলেন বাইক রাইডার্সরাও।