শিলিগুড়ি :: অবতক খবর ::    এক চরম অমানবিক ঘটনার সাক্ষী থাকল শিলিগুড়ি। পরিবারকে মৃত্যুর খবর দেওয়া তো দুরস্থ, রাতের অন্ধকারে পরিবারের লোকেদের না জানিয়েই সৎকার হয়ে গেল করোনায় মৃত ব্যাক্তির দেহ। এমনই ঘটনা ঘটল শিলিগুড়ির মাটিগারার কোভিড হাসপাতালে। খোদ পর্যটনমন্ত্রীর প্রতিবেশীর ক্ষেত্রে এমন ঘটনায় আতঙ্কিত শহরবাসী। এই ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবী তুলেছে ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দারা। এমন অমানবিক ঘটনায় একাধিক প্রশ্নের মুখে দাড়িয়েছে জেলা স্বাস্থ্যদফতর।

সম্প্রতি জ্বরে আক্রান্ত হয়ে শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন শিলিগুড়ি ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা প্রবীন নাগরিক বিমল পাল। শরীরে করোনার উপসর্গ থাকায় শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালেই তার সোয়াব টেস্ট হয়। গত ২০ জুন সোয়াব টেস্টের রিপোর্ট পজিটিভ আসে বিমল পালের। এরপরই করোনা আক্রান্ত বিমল পালকে পাঠান হয় মাটিগাড়ার কোভিড হাসপাতালে। তারপর থেকেই পরিবারের লোকেদের সাথে বিমল পালের যোগাযোগ সম্পূর্ন বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় বলে অভিযোগ পরিবারের।

বিমল পালের ছেলে সুরজিত পাল জানান, মঙ্গলবার রাতে সোশ্যাল মিডিয়ায় জানতে পারেন তার করোনা আক্রান্ত বাবা মারা গিয়েছেন মাটিগারার কোভিড হাসপাতালে। তারপর থেকে বহুবার কোভিড হাসপাতালে যোগাযোগ করেও মৃত্যুর খবর জানতে পারেননি। বুধবার সকালে পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব বিষয়টিতে হস্তক্ষেপ করার পর সকাল ১০ টা নাগাদ কোভিড হাসপাতালের সুপার ফোন করে জানান তার বাবা বিমল পাল মারা গিয়েছেন। এবং রাতেই সৎকার করে দেওয়া হয়েছে দেহ। কেন এমন ঘটনা ঘটেছে তা জানতে চায় ছেলে সুরজিত পাল ও মেয়ে সুজাতা পাল। এরপরই দুঃখ প্রকাশ করেই ফোন কেটে দেন সুপারবাবু।

বিষয়টি জানাজানি হতেই মৃত বিমল পালের প্রতিবেশী ও ১৭ নম্বর ওয়ার্ড কমিটির লোকেরা ভিড় জমায় মৃতের বাড়ীর সামনে। সেখানে এসে তারা জানতে পারেন কোভিড আক্রান্তের পরিবারের লোকেদের সোয়াব টেস্ট পর্যন্ত করান হয়নি। এমনকি এলাকা ও মৃতের বাড়িকে স্যানিটাইজড পর্যন্ত করা হয়নি। এরপরই এলাকাবাসী ও ওয়ার্ড কমিটির চাপে পড়ে স্বাস্থ্য দপ্তরের কর্মীরা মৃতের পরিবারের চারজনকে সোয়াব টেস্টের জন্য নিয়ে যায় শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালে। এদিন দুপুরেই সোয়াব টেস্ট হয়। এই ঘটনায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন মৃতের পরিজনেরাও।

এই অমানবিক ঘটনায় নিন্দার ঝড় উঠেছে বিভিন্ন মহলে। বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবী তুলেছেন এলাকার সাধারণ মানুষ। এই অমানবিক ঘটনায় বেশ কিছু প্রশ্নের মুখে দাঁড়িয়েছে জেলা স্বাস্থ্য দফতর।