প্রচার পর্ব শুরু
তমাল সাহা
আমি যদিও ইংরেজি কম জানি তবুও নমিনেশন শব্দটি বুঝি কিন্তু এর বাংলা জানিনা। নমিনেশন দাখিল শেষ। প্রচার শুরু।
আজ ঘুরে বেড়ালুম বিভিন্ন পাড়া। সবাই দেয়াল লিখছে– প্রতিবারের মতো এবারেও তোমাকে চাই/ ডাকলে কাছে পাই।
পাড়ার একজন বললেন, এবার তো উনি প্রথমবার দাঁড়ালেন। প্রতিবারের মতো… লিখেছেন কেন, বুঝলাম না! উনি যে এতো দিন দল অর্থাৎ রাজনীতি করেছেন তা পাড়ায় থেকেও বুঝিনি।
বলি,তবে উনি প্রার্থী হলেন কি করে?
কি যে বলেন!একটা সিটের দাম কত লক্ষ টাকা আপনি বুঝি জানেন না?
আচ্ছা! বলে চুপ করে যাই।
ভাগ্যিস করোনা এসেছিল। একটা ভালো প্রচার দেখলুম– করোনাকালে এই প্রার্থী নাকি বাড়ি বাড়ি শুকনো খাবার, চাল-ডাল পৌঁছে দিয়েছেন। তার মানে করোনা না হলে তিনি জনসেবার সুযোগ পেতেন না!
জিজ্ঞাসা করি, আমি তো এই অঞ্চলেই থাকি। এর আগে সমাজসেবী বলে ওনার নাম তো কখনো শুনিনি। এসব ত্রাণ সামগ্রী বিলি করতে তো দেখিনি।
ওয়ার্ডবাসী বলেন, প্রতিবাদ না করাই ভালো। করোনায় কিছু দেন নি তবুও আমরা মেনে নিচ্ছি — দেয়ালে এসব মিথ্যা প্রচার।
জানেন তো একটা মাথার নিচে একটাই ঘাড়!
আর সব প্রশ্নের উত্তর দেওয়া যায়?
ধুর মশাই! ভোট এলে সবাই সমাজসেবী পাড়ায় পাড়ায়।
এক বুড়ি মা-কে জিজ্ঞাসা করি,ঐ যে উনি সাজুগুজু করে প্রচারে বেরিয়েছেন, আপনার মতো ছেঁড়া কাপড় পরা এলোমেলো পাকা চুল বুড়ির পায়ে হাত দিয়ে দুবার প্রণাম করলেন এর আগে কোনোদিন, এমনকি বিজয়া দশমীতে পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করেছেন?
বুড়ি মা বলেন, না কোনদিনই করেননি। বরঞ্চ গরিব বলে আমাদের কাছে ঘেঁষতেনই না।
তবে ভোট-দেবী দুর্গাদেবীর চেয়েও বড়। ভোটপুজোয় পায়ে হাত দিতে হবেই, অন্তত পাঁচ বছরে একবার।
তবে এর প্রতিশোধ নেবেনই উনি।
উনি জিতলে ওনার বাড়ি যেতে যেতে পায়ের তলার চামড়া ক্ষয়ে যাবে যে কতবার!
আমি বলি কেন?
আরে উনি যে তখন পাড়ার কাউন্সিলার!