অবতক খবর,২৫ সেপ্টেম্বর: বীজপুরের রাজনীতিতে কাঁচরাপাড়ার বরিষ্ঠ তৃণমূল নেতা দিলীপ ঘোষের অবদান অনস্বীকার্য। বিধানসভা নির্বাচনের আগে থেকে তিনি বীজপুর বিধায়ক সুবোধ অধিকারীকে জেতানোর জন্য যেভাবে উঠে পড়ে লেগেছিলেন সেই কথা যারা জানেন তারা চিরকাল মনে রাখবেন। আর এই কাজ মোটেও সহজ ছিল না। তিনি এবং তার পরিবারের ওপর নেমে এসেছিল সন্ত্রাসের ছায়া। বিরোধীরা তাকে তো মেরেছিলোই, এমনকি তাঁর স্ত্রী এবং মেয়েকেও মারধর করতে ছাড়েনি। নির্বাচনের আগে দিলীপবাবুকে এমনভাবে মারা হয়েছিল যে তাঁর মুখ,থুতনি এমনভাবে ফেটে গিয়েছিল যার ফলে তিনি বহু দিন কিছু খেতে পারেন নি।
কিন্তু তবুও তিনি থেমে থাকেননি। তিনি তার লড়াই চালিয়ে গেছেন এবং সেই লড়াইয়ের ফল হল সুবোধ অধিকারী বীজপুরের বিধায়ক পদে আসীন হয়েছেন।
এই লড়াইয়ের জন্য তিনি হাজতবাস করেছেন, নিজের চাকরি পর্যন্ত ছেড়ে দিয়েছেন। এইসবই করেছেন তিনি নীরবে।
এ তো গেল বিধানসভা নির্বাচনের কথা।
তিনি আজও ভুলতে পারেননি ২০১৯-এর লোকসভা ফলাফল ঘোষণার পরবর্তী সন্ত্রাস। রাজনৈতিকভাবে তাঁর ওপর সন্ত্রাস নেমে এসেছিল তো বটেই, এমনকি ব্যক্তিগত আক্রোশের শিকার হয়েছিলেন তিনি। তাঁর বাড়িঘর ভাঙচুর, তাঁকে মারধর, তাঁর পরিবারের সদস্যদের মারধর এইসব লেগেই থাকত।
আর এই সন্ত্রাসের পেছনে যার নাম উঠে এসেছে তিনি হলেন সেই সময়কার কাঁচরাপাড়া নবাঙ্কুর ক্লাবের সেক্রেটারি তরুণ মজুমদার (কভু)। যার বিরুদ্ধে এখন একের পর এক অভিযোগ উঠে আসছে। নির্ভয়ে মানুষ তার বিরুদ্ধে মুখ খুলতে শুরু করেছেন।
এই কভু বদলার রাজনীতি করেছিলেন। কিন্তু বদলার রাজনীতি কোনদিনই করেননি দিলীপ ঘোষ। রাজনৈতিক নয় বরং ব্যক্তিগত শত্রুতার প্রতিশোধ নিয়েছিল দিলীপ ঘোষের উপর এই কভু। বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা হওয়ার পর দিলীপবাবুর জায়গায় যদি অন্য কেউ থাকতেন তবে নিশ্চিত তিনি বদলা নিতেন। কিন্তু দিলীপবাবু বদলার রাজনীতিতে নয় বরং বদলের রাজনীতিতে বিশ্বাসী।
কবুর বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ আসছে দিলীপবাবুর কাছে। এইসময় চাইলেই দিলীপবাবু কভুর উপর প্রতিশোধ নিতে পারতেন। কিন্তু দিলীপ ঘোষ পরিষ্কার জানিয়েছেন, “আমরা পরিবর্তন এনেছি। বিজেপির সন্ত্রাস থেকে মুক্ত করেছি বীজপুরকে। কিন্তু আমরা বদলায় বিশ্বাসী নই। কারণ আমাদের জনো নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ও পার্থ ভৌমিক একটাই স্লোগান ছিল, বদলা নয় বদল চাই। আর আমাদের বিধায়ক সুবোধ অধিকারী এবং যুবনেতা কমল অধিকারী, তাদের কাছে মানুষ সর্বোপরি। তাঁরা প্রতি মুহূর্তে মানুষের সেবায় নিয়োজিত থাকতে বলেন। এই কভু, আমরা তার উপর কোন প্রতিশোধ নেব না, বদলা নেব না, তার কোন ক্ষতি করব না। তিনি যেসব মানুষের টাকা আত্মসাৎ করেছেন,তাকে ডেকে আমরা কথা বলেছি এবং তিনি সকলের টাকা ফেরৎ দেবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
আমি যদি তার মত আচরণ শুরু করি তবে তার আর আমার মধ্যে তফাৎ কি রইবে!”