অবতক খবর , সংবাদদাতা, বৈষ্ণবনগর: বর্ষার শুরুতেই অকাল ভাঙনে আতঙ্ক ছড়িয়েছে কালিয়াচক-‌৩ নম্বর ব্লকে। সংশ্লিষ্ট ব্লকের পার চকবাহাদুরপুরে । গঙ্গায় যেহারে ভাঙন শুরু হয়েছে, ভয়ে এলাকাবাসী বাড়িঘর ছেড়ে অন্যত্র যেতে শুরু করেছে। বর্ষার শুরুতেই এমন গঙ্গার ভাঙন, কালিয়াচক-‌৩ ব্লকের মানুষ কোনও দিন দেখেননি। সাধারণত জলস্ফীতির সঙ্গে গঙ্গার ভাঙন যেমন শুরু হয়, তেমনই জল কমার সময় বর্ষার শেষের দিকেও ভাঙন দেখা যায়। কিন্তু এবার শুরুতে এই অবস্থা দেখে, এলাকাবাসীদের আশঙ্কা এবার ব্যাপক ভাঙন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

দু’‌দিনের মধ্যে প্রায় ২ বিঘা জমি তলিয়ে গেছে গঙ্গায়। তিরবর্তী এলাকার বাসিন্দারা ঘর ছাড়তে শুরু করেছেন। মঙ্গলবার গভীর রাতে ভাঙন শুরু হয়। বুধবার দুপুর থেকে আবার ভাঙন শুরু হয়েছে। হোসেনপুর , কুলিদিয়াড়া ভাঙনের পর কালিয়াচক-‌৩ ব্লকের পার চকবাহাদুরপুর এলাকায় শুরু হয়েছে ভাঙন।

মূলত গঙ্গার পাড়ের জমিতে ভুট্টা চাষ হয়। চাষের জমি এখন গঙ্গাগর্ভে। এবার লোকালয়ের মধ্যে ভাঙন শুরু আশঙ্কা দেখা দিতে শুরু করেছে। এখানকার বাসিন্দারা বাড়িঘর ভাঙতে শুরু করেছেন। তাঁরা প্রায় ১ কিলোমিটার দূরে চকবাহাদুরপুর ও বিভিন্ন এলাকার দিকে যেতে শুরু করেছেন।

এলাকার বাসিন্দা শ্রীকান্ত মন্ডল তাঁর স্ত্রী অঞ্জলী মন্ডলরা সকাল থেকে ব্যস্ত ঘরের সামগ্রী সরানোর কাজে। শ্রীকান্ত বলেন,‘‌আমরা বছর তিনেক আগে বাড়িটি তৈরি করি। যেহারে ভাঙন শুরু হয়েছে, তাতে রাতেই মনে হয় আমাদের বাড়িটি গঙ্গায় তলিয়ে যেতে পারে। খুব কষ্ট হচ্ছে। নিজের ভিটেমাটি চলে যাচ্ছে গঙ্গায়। চোখের সামনে দেখতে হচ্ছে।’‌

পার চকবাহাদুরপুরের পঞ্চায়েত সদস্য অর্জুন মন্ডল বলেন,‘‌বর্ষার শুরুতে ভাঙন আমরা এই প্রথম দেখছি। জলস্ফীতির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ভাঙন হয়ে থাকে। কিন্তু এবার যেহারে শুরুতেই ভাঙন শুরু হয়েছে, তাতে এবার ব্যাপক ভাঙন হওযার সম্ভাবনা রয়েছে। এখানে প্রায় ৯০০ পরিবারের বাস। অনেকে বাড়িঘর ছাড়তে শুরু করেছেন।’‌

খবর পেয়ে মঙ্গলবার বিকেলে এলাকা পরিদর্শনে যান বিডিও গৌতম দত্ত। এলাকার মানুষদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। উল্লেখ্য, মালদার পার চকবাহাদুরপুরের পাশেই মুর্শিদাবাদের হোসেনপুর ও কুলি দিয়ারা। গত কয়েক বছরে সংশ্লিষ্ট এলাকায় ভাঙনে ভিটেমাটি ও প্রায় ৩০০ বাড়ি গঙ্গায় তলিয়ে গেছে। নতুন করে ভাঙন শুরু হতে চলেছে পার চকবাহাদুরপুরে। আতঙ্কে বাড়ি ঘর সরাচ্ছেন মানুষ।