অবতক খবর,১৯ জুন,মলয় দে নদীয়া :-নদীয়ার কৃষ্ণগঞ্জের সীমান্তবর্তী গ্রাম বিজয়পুর । এই গ্রামের একদিকে বাংলাদেশ অন্যদিকে ভারত । দুই দেশের মধ্যে দিয়ে বয়ে চলেছে মাথাভাঙ্গা নদী । বাংলাদেশের দর্শনার কেরো এন্ড কোম্পানির সুগার মিল রয়েছে । এই সুগার মিলের দূষিত জল ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে মাথাভাঙ্গা নদীতে ।
যেহেতু নদীর গতিপথ ভারতের দিকে সেই জন্য এই দূষিত জল প্রবেশ করছে মাথাভাঙ্গা নদী দিয়ে ভারতে । আবার ভারতে প্রবেশ করার পর তিনটি নদীর উৎস মুখে পড়ছে এই দূষিত জল । মাথাভাঙ্গা নদীর একদিকে বয়ে চলেছে চূর্ণী অন্যদিকে ইছামতি । যদিও ইছামতির উৎস মুখে এখন জল নেই । মাথাভাঙ্গা নদীর দূষিত জল পড়ছে চূর্ণীতে । দূষিত জলের মাত্রা এত বেশি যে নদীতে সমস্ত মাছ মরে গিয়েছে । এমনকি জলের পোকা পর্যন্ত মরে গেছে ।
সরকারের পক্ষ থেকে গরিব মানুষের চাষের জন্য এই নদীকে কেন্দ্র করে তৈরি হয়েছে বহু রিভার পাম্প । চোকেরা অল্প পয়সার বিনিময়ে জমিতে চাষ আবাদ করেন এই জলে । বর্তমানে কৃষকেরা এই দূষিত জল জমিতে দিলেই ফসল নষ্ট হয়ে যাচ্ছে । দুর্গন্ধে নদী তীরের বাসিন্দারা অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন । অতিরিক্ত মাত্রায় দূষণ ছড়াচ্ছে সীমান্তবর্তী তথা নদী তীরবর্তী গ্রামগুলিতে । এই নদীকে কেন্দ্র করে হাজার হাজার মৎস্যজীবী তাদের জীবন-নির্ভর করতেন ।
নদীতে মাছ নষ্ট হয়ে যাওয়াই এখন তারা হয়ে পড়েছেন বেকার । তাইতো বাধ্য হয়ে বাইরে কাজে যেতে বাধ্য হচ্ছেন মৎস্যজীবীরা । গ্রামবাসীরা স্থানীয় বিডিও , ডিএম ,জেলা পরিষদের সভাধিপতি, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী, ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে তাদের সমস্যার কথা বারবার জানিয়েছেন। । কোন ফল হয়নি । দূষণ নিয়ন্তন পরিষদের পক্ষ থেকে সরকারি আধিকারিকরা আসেন মাঝেমধ্যে এই জলের নমুনা সংগ্রহ করে নিয়ে যান । তারাও স্বীকার করেছেন এই দূষিত জলে কোনরকম ভাবেই মাছের বেঁচে থাকা সম্ভব নয় ।
তারাও নাকি সরকারকে রিপোর্ট দিয়েছেন । কোন কাজ হয়নি । স্থানীয় বাসিন্দা বিদ্যুৎ কুমার বিশ্বাস জানিয়েছেন তাদের এলাকার সমস্যার কথা । একদিকে মাছ মরে নদী পাড়ের মৎস্যজীবীদের জীবিকা নষ্ট হচ্ছে । অন্যদিকে নদীপাড়ের বাসিন্দারা এই জলে স্নান করে চর্মরোগে ভুগছেন । নষ্ট হচ্ছে নদী পাড়ের বাসিন্দাদের জীবন ও জীবিকা ।ব্লক জেলা রাজ্য এমনকি কেন্দ্র সরকারকে জানিয়েও কোন কাজ হয়নি ফলে তাদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে ।
গ্রামের আরেক বাসিন্দা সুনীল বিশ্বাস বলেন সবাই জানে এই জলের দূষণের কথা কেউ গুরুত্ব দেয় না । গ্রামের গৃহবধূ শংকরী বিশ্বাস তিনিও ক্ষোভ উপড়ে দেন তিনি বলেন এই জলে কেউ নামতে সাহস পায় না । এমনকি বর্তমান যুবসমাজ তথা ইস্কুলের ছাত্র অনিল মণ্ডল বলেন গ্রামের দিকে কারোরই নজর নেই ফলে তারা এই সমস্যায় ভুগছেন । কবে মিটবে তাদের সমস্যা? আদৌ কি সরকার তাদের প্রতি দৃষ্টি দেবে প্রশ্ন অনেক উত্তর অজানা ।