অবতক খবর,৬ডিসেম্বর: নভেম্বরের প্রান্তিক বেলায় পাতাঝরা দিনে এক সাধারণ ছাত্রী অণু দুবে চেতনাবাহী একটি পরমাণু বোমার বিস্ফোরণ ঘটালো রাষ্ট্রীয় দরবার সংসদ ভবনের উল্টো দিকের রাস্তায়।
অণুর পারমাণবিক বিস্ফোরণ ছিল হিরোশিমা নাগাসাকিতে নিঃশব্দ গর্জনের চেয়েও ভয়ঙ্কর নীরব অথচ সোচ্চারে সরব।
একটা ছেঁড়া পিচবোর্ড বূকে, একাকী অণু।
একটি বাক্যে এতো মারাত্মক কথা লেখা যায়! একটি প্ল্যাকার্ডে এভাবে জীবনে বাঁচার গল্প বলে অণু— কেন আমি আমার নিজের ভারতে নিরাপদ নই।
একটি শ্লোগান মাতিয়ে দেয় এই উপমহাদেশের বাতাস। অণু বলে, একটি ভয়মুক্ত জীবন চাই। ওই প্রিয়াঙ্কা মেয়েটার মত ধর্ষিতা খুন হয়ে মরতে চাই না। কাল তো আমিও এভাবে খুন হয়ে যেতে পারি। দেশ কেন আমায় নিরাপত্তা দেবে না? রাজকোষ তো বেঁচে আছে আমার টাকায়। আমার নিরাপত্তা কোথায়?
রাষ্ট্র দেখালো তার নিরাপত্তা শক্তি। তিনজন পুলিশ অণুকে টেনেহিঁচড়ে তুলে নিল প্রিজন ভ্যানে। অণু একা আর কতক্ষণ লড়ে? প্রতিবাদী মার খায় মরে, প্রতিবাদ থেকে যায় হৃদয়ে হৃদয়ে, বাতাসে বাতাসে ছড়ায়।
অণু সাধারণ মেয়ে, পরমাণু বোমা হয়ে চেতনায় ফেটে পড়ে। পার্লামেন্ট স্ট্রীট থানা মানে কি রাষ্ট্রীয় হানা? একটি খাটের উপর ফেলে রেখে অণুকে, তার শরীরের উপর চড়ে বসে, তাকে পেটাই করে তিনজন মহিলা পুলিশ।
মমতা হারালে নির্মমতা কতদূর যেতে পারে, দিল্লি পুলিশ তা হাতেনাতে প্রমাণ করে।
জানা কথা, বারংবার বলে ইতিহাস। রাষ্ট্র তো অন্যায় করবেই, রাষ্ট্র নিরাপত্তা দেবে না। তবুও কি লোকদেখানো আইন প্রণেতা বিশাল পাকা বিল্ডিং পার্লামেন্টের সামনে প্রতিবাদ করা যাবে না?
দো মুচলেকা, মুচলেকা দো! বহুৎ সা হিম্মৎ তুমহারি?
ই জায়গা ছোড়ো,ই ক্যায়া তুমহারি বাপকা জমিদারি?
পূলিশের রোয়াবি বাত শোনো তুমি অণু।
সদর্পে চিৎকার করে এসব বলে যায় রাষ্ট্রীয় হনু।
প্রিয়াঙ্কা ধর্ষণ খুন কাণ্ডে বিনিদ্র রাত কেটে যায় অণুর, দু’চোখে তার চরম শূন্যতা, ভুগেছে ট্রমায়— শরীরে মনে আতঙ্ক ছড়ায়।
কোন ধর্ষক কি অশরীরী ছায়া নিয়ে তার পেছনে দাঁড়ায়!
রাষ্ট্রীয় ডালকুত্তা কিভাবে নির্যাতন করেছে,অণু দেশবাসীকে তা জানায়। তার হাতের ক্ষতচিহ্ন ভারতকে কি করে ছিন্নভিন্ন? রাষ্ট্রীয় গুণ্ডারা
তাকে খামচেছে তীব্র নখরে। একোন কৃষ্ণপক্ষ নেমে এসেছে ভারতবর্ষের এই খন্ডহর প্রহরে। হাজারো লক্ষ অনু জন্মাক প্রতিবাদী স্বরে।
রাষ্ট্র রাফাল কেনে,কেনে যুদ্ধ বিমান।
নারী নিরাপত্তা নেই,নেই আমার মা-মেয়ের সম্মান!
স্বদেশ তো আমার। নিরাপত্তার মুচলেকা কে দেবে? মানুষ না রাষ্ট্র?
এবার মশাল নিয়ে হাতে,এই মেয়ে সরোষূ গর্জন তোলো— এই নষ্ট দেশে আর কতদিন আমরা দিগভ্রষ্ট!
এসো, মুখোমুখি হই ময়দানে, চাই সক্রিয় লড়াই।
অস্ত্র তুলে নাও হাতে, স্লোগান উঠুক— ধর্ষক জবাই।