অবতক খবর, সংবাদদাতা মুর্শিদাবাদ :: মুর্শিদাবাদ পৌরসভার এলাকায় তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দল এখন প্রকাশ্যে রাস্তায় চলে এসেছে। এক গোষ্ঠী কর্মী সম্মেলন মঞ্চে থেকে সরাসরি অন্য গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ এর দাবি তুললেও জেলা নেতৃত্ব দুই গোষ্ঠীর মঞ্চে আলাদা আলাদা উপস্থিত হয়ে লড়াই এর পেছনে কংগ্রেস নেতা অধীর চৌধুরীর ইন্দনে কথা বলেছেন।
তবে এই লড়াইয়ে থামছে না তা আরেক বার প্রকাশ পেল। মুর্শিদাবাদ পৌরসভার বর্তমান চেয়ারম্যান ও বর্তমান পৌর প্রশাসক বিপ্লব চক্রবর্তী অভিযোগ উন্নয়নের কাজে বাধা দিচ্ছে তারই দলের একটি গোষ্ঠী। বিপ্লববাবু দাবি করেন যে তারই পৌরসভার তিন নম্বর ওয়ার্ডর প্রাক্তন কাউন্সিলর ও প্রাক্তন চেয়ারম্যান সৌমেন দাস তার কিছু কন্ট্রাক্টর বন্ধুদের নিয়ে রাস্তার কাজ যেগুলো চলছিল সেগুলো কে আটকে দেন।
পৌর প্রশাসক বিপ্লব চক্রবর্তীর দাবি রাস্তাটিকে অস্থায়ীভাবে ছাড়িয়ে দেওয়ার কাজ করছিলেন তারা কিন্তু প্রাক্তন চেয়ারম্যান তার দলবল নিয়ে কাজ আটকে টাকার দাবি করেন বিপ্লব বাবু জানান। কুড়ি হাজার টাকার কাজ করতে দু লক্ষ টাকা দাবি করেন তারা। পরে এলাকার কাজ আটকে গেলে তারা স্থানীয় মানুষের সই সংগ্রহ করে মানুষকে ভুল বুঝিয়ে কনট্রাক্টরের নামে হুমকি দেওয়ার প্রাণনাশের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ আনেন।
অন্যদিকে পৌর প্রশাসক বিপ্লব চক্রবর্তী কে সেই এক নম্বর ওয়ার্ড ও তিন নম্বর ওয়ার্ডের যারা গণস্বাক্ষর করে কন্টাকটার এর বিরুদ্ধে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ এনেছিলেন তারাই পাল্টা জানান যে, সৌমেন দাশ ও তার কিছু কনট্রাক্টর বন্ধুরা তাদের ভুল বুঝিয়ে সাদা কাগজে সই নিয়ে গেছেন। স্থানীয় মানুষ প্রকাশ চন্দ্র সাহা, শম্ভু সরকার, তপন কুমার দে, অভিষেক, আকবর শেখ ও অন্যান্যরা জানান যে এলাকার প্রাক্তন কাউন্সিলর ও চেয়ারম্যান সৌমেন দাস কে ভরসা করে তারা সই করে দিয়েছিলেন কিন্তু তিনি যে এরকম দুনাম্বারি কাজ করবেন তা স্বপ্নেও ভাবতে পারেননি।
বাবলু শেখ, সিরাজ শেখ, ইয়াসমিন বিবি, আলী শেখ, মুমিন হক, নিখিল কুমার ঘোষ, অধিকারী, পরিতোষ বিশ্বাস, জয়ন্ত বিশ্বাস, নীলাঞ্জনা দত্ত, সঞ্জীব সিং সহ বহু এলাকার গণস্বাক্ষর কারী মানুষ জানান যে তাদের আগের চিঠিতে ভুল বুঝিয়ে সই করিয়ে নিয়ে গিয়েছিল তারা। তার প্রতিবাদ জানাচ্ছেন, ও তারা মুর্শিদাবাদ ইন্সপেক্টর ইনচার্জ এর কাছে অভিযোগ করে বলেন যে তাদেরকে হাজী শাহাদাত হোসেন, মানিরুল ইসলাম, দেবব্রত দাস এসে সৌমেন দাস এর সঙ্গে এসে সই করিয়ে নিয়ে যায়। বলেছিল রাস্তা নির্মাণের জন্য তাদের সকলকে সই করে চেয়ারম্যানের কাছে অভিযোগ জানাতে হবে কিন্তু পরে তারা জানতে পারেন যে সেই জায়গায় প্রথম পাতা পাল্টে তারা লিখে দিয়েছেন যে কন্টাকটার তাদের প্রাণনাশের হুমকি দিয়েছে যেটা একেবারে অসত্য মিথ্যে।
অন্য দিকে সোমেন দাস কে ফোনে যোগ যোগ করতে বহুবার ফোন করেও তিনি ফোন তোলেননি। তাকে ম্যাসেজ পাঠালে দিনই ম্যাসেজ দেখেও কোনো উত্তর দেননি। তাই তার পক্ষের কথা আমরা আপনাদের সামনে তুলে ধরতে পারলাম না।
পৌর প্রশাসক বিপ্লব চক্রবর্তী জানান তাদের সই করা গণস্বাক্ষরের এই চিঠি আবেদন পত্র তিনি পুলিশ অফিসার কাছে পাঠিয়ে দিচ্ছেন। তাছাড়া মহকুমার শাসক জেলাশাসক, মহাকুমা পুলিশ আধিকারিক ও ফিরহাদ হাকিম সাহেবের কাছে এই চিঠির কপি পাঠানো হচ্ছে। বিপ্লব বাবু জানান তার দলেরই কিছু লোক দলকে বদনাম করার জন্য লাগাতার চেষ্টা চালাচ্ছেন। তারা বাইরে থেকে গুন্ডা আমদানি করছেন এবং শান্ত এলাকাকে অশান্ত করার চক্রান্ত করছেন।
বিপ্লববাবু আরো জানান মুর্শিদাবাদ পৌরসভার সামান্য শান্তিপ্রিয় কিছু লোকের বসবাসের জায়গা। এখানে যারা বসবাস করেন তারা উন্নয়নের পক্ষে তারা শান্তিতে বসবাস করতে চান কিন্তু কিছু কিছু মানুষ তাদের স্বার্থ কায়েমের জন্য বাইরে থেকে গুন্ডাদের এনে এই মুর্শিদাবাদে তারা গুন্ডা রাজ কায়েম করতে চাইছে। তিনি বলেন এর আগেও তারা বাইরে থেকে গুন্ডা এনে মানুষের অধিকার কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করেছিল কিন্তু এখানকার শান্তিপ্রিয় মানুষ তাদের বহিষ্কার করেছেন। তাদেরকে গুন্ডামি করার সুযোগ দেননি, তাড়িয়ে দিয়েছেন। তিনি আরো বলেন আপনারা যেখানে সই করবেন, অবশ্যই কি বিষয়ে সই করছেন, সেটা দেখে শুনে, বুঝে সই করবেন। আপনাকে বিক্রি করে দেওয়ার জন্য প্রচুর মানুষ যারা আপনারই বিশ্বাসী লোক, রাস্তায় ঘুরে বেড়াচ্ছে। সাবধানে থাকুন, চোখ কান খোলা রাখুন এবং তাদেরকে ভিড়তে দেবেন না নিজের উপরে ভরসা রাখুন পুলিশ প্রশাসন ও পৌর প্রশাসন সকল আপনাদের সঙ্গে আছে।