অবতক খবর , সংবাদদাতা ::  রায়গঞ্জ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের এক অস্থায়ী কর্মীর বিরুদ্ধে দালালরাজ চালানোর অভিযোগ উঠল। ভয় দেখিয়ে রোগীর পরিবারের কাছ থেকে টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ওই অভিযুক্তের বিরুদ্ধে। ঘটবাকে কেন্দ্র করে বৃহস্পতিবার তুমুল উত্তেজনা ছড়ায় মেডিক্যাল কলেজ চত্বরে৷ বিষয়টি নিয়ে ক্ষুব্ধ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের প্রিন্সিপাল। রোগীর পরিজনেরা অভিযুক্তকে রায়গঞ্জ থানার পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছে।

বেশ কিছুদিন থেকেই রায়গঞ্জ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে দালাল চক্র সক্রিয় হওয়ার অভিযোগ উঠছিল। রোগীর পরিজনদের কাছ থেকে নানান অজুহাতে টাকা নেওয়ার অভিযোগ ছিল দালালচক্রের বিরুদ্ধে। হাসপাতালে কর্মরত একশ্রেণীর কর্মীদের বিরুদ্ধেও দালালচক্রের সাথে যুক্ত থাকার অভিযোগ উঠেছে একাধিক বার। বিষয়টি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কানে গেলে তিনি তদন্তের জন্য সিআইডিকে নিযুক্ত করেন। এরপর দালালচক্রের সাথে যুক্ত দুইজনকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে৷ এদিন একই অভিযোগে এক অস্থায়ী কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রায়গঞ্জ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের এসএনসিইউ বিভাগে চিকিৎসাধীন এক শিশুর পরিবারের কাছ থেকে ভ্যাকসিন ও চিকিৎসকের সাথে কথা বলিয়ে দেওয়ার নাম করে হাসপাতালেরই এক অস্থায়ী কর্মচারী মনি সাহা ২০০ টাকা নেয়। সন্তান গুরুতর অসুস্থ দেখে ওই ব্যক্তি তৎক্ষনাৎ টাকা দিয়ে দেন মনি সাহাকে। এরপরেই ঘটে বিপত্তি। অভিযোগ, টাকা নিয়েই সেখান থেকে চম্পট দেয় মনি। ভ্যাকসিন বা চিকিৎসকের সাথে সাক্ষাতের কথা এড়িয়ে যায় সে। ঠিক তখনই গোলাম সাবির নামে রোগীর আত্মীয় চিৎকার চেঁচামেচি শুরু করে দেন। তাঁর চিৎকারে বিষয়টি জানাজানি হয়ে যায় দ্রুত।এরপরেই অন্যান্য রোগীর আত্মীয়রা অভিযুক্ত অস্থায়ী কর্মী মনি সাহাকে ধরে ফেলে। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অন্যান্য রোগীর আত্মীয় পরিজনরাও একই অভিযোগ করে বলেন, এভাবেই গ্রামগঞ্জের গরিব ও দুস্থ রোগীর আত্মীয় পরিজনদের কাছ থেকে ভয় দেখিয়ে মনি সাহার মতন হাসপাতালের আরও অন্যান্য কর্মচারীরা টাকা নিয়ে চলেছেন।

যদিও ধৃত অস্থায়ী কর্মচারী মনি সাহা জানিয়েছেন, অনেক সময় খুশী হয়েই রোগীর পরিবার তাঁদেরকে চা খাওয়ার জন্য টাকা দিয়ে থাকেন। আজকে ওই রোগীর পরিবারের কাছে চা খাওয়ার জন্য কিছু টাকা চেয়েছেন বলে স্বীকার করেছেন তিনি। এদিকে রোগী ও রোগীর পরিবারের লোকেদের অভিযোগ, সরকার বিনামূল্যে চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়ার কথা বললেও হাসপাতালে রোগী ভর্তি থেকে শুরু করে নানান পরীক্ষা নিরীক্ষা করার ক্ষেত্রেও দালালরা প্রচুর টাকা আদায় করে থাকে। দালালদের এই কাজের সাথে যুক্ত রয়েছেন হাসপাতালেরই অস্থায়ী কর্মচারীদের একাংশ।

এই ঘটনা নিয়ে রায়গঞ্জ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের প্রিন্সিপাল দিলীপ কুমার পাল জানিয়েছেন, দুইবছর থেকে আমি এখানে রয়েছি৷ দালালচক্রের অনেক কথাই শুনেছি৷ মুখ্যমন্ত্রীও সিআইডি নিযুক্ত করেছেন। আগামীতে আরও দালাল ধরা পড়লে খুশি হব। দালালরাজ বন্ধ করার জন্য আমরা উদ্যোগী হয়েছি। যদি হাসপাতালের কোনও কর্মচারী এই কাজের সাথে যুক্ত থাকে তবে তার বিরুদ্ধেও আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।