অবতক খবর,২৪ মার্চ: রেল লাইনের ধার থেকে দশম শ্রেণির এক ছাত্রীর ক্ষতবিক্ষত মৃতদেহ উদ্ধারের ঘটনায় আজ সকাল থেকেই তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে বৈষ্ণবনগর এলাকায়। মৃত ছাত্রীর নাম প্রিয়াঙ্কা মণ্ডল (১৬)। রাজনগর হাইস্কুলে পড়ত সে। তার মায়ের দাবি, প্রিয়াঙ্কাকে খুন করে রেল লাইনের ধারে ফেলে দেওয়া হয়েছে। এই ঘটনায় জড়িত তার প্রেমিক। যদিও প্রিয়াঙ্কার প্রেমিক তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করেছে। আপাতত ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে রেল পুলিশ।
প্রিয়াঙ্কার বাড়ি কালিয়াচক ৩ নম্বর ব্লকের বীরনগর ২ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের নতুন ১৬ মাইল সংলগ্ন মহাজনটোলা গ্রামে। ওই গ্রামেই বাড়ি পার্থ মণ্ডল নামে দশম শ্রেণির এক ছাত্রের। পার্থও রাজনগর হাইস্কুলে পড়ে। দু’জনের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক ছিল বলে জানিয়েছেন প্রিয়াঙ্কার অভিভাবকরা। আজ সকালে ওই এলাকাতেই রেল লাইনের ধারে প্রিয়াঙ্কার ক্ষতবিক্ষত মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখেন স্থানীয় মানুষজন। বৈষ্ণবনগর থানা থেকে মাত্র ৫০ মিটার দূরে এভাবে এক ছাত্রীর দেহ উদ্ধারের খবর চাউর হতেই শোরগোল পড়ে যায় এলাকায়। দেখা যায়, প্রিয়াঙ্কার গলা ধারালো অস্ত্র দিয়ে কাটা হয়েছে। তার বুকে ও পেটেও অস্ত্রের কোপ রয়েছে। পাশে একটি ভুট্টাখেতে ধস্তাধস্তির চিহ্ন স্পষ্ট। স্থানীয়দের সবারই বক্তব্য, প্রিয়াঙ্কাকে নৃশংসভাবে খুন করা হয়েছে। খুনের ঘটনা ধামাচাপা দিতে কৌশলে তার দেহ রেল লাইনের ধারে ফেলে দেওয়া হয়েছে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছোয় রেল পুলিশ।
প্রিয়াঙ্কার মা শেফালি মণ্ডল বলেন, মেয়ে শুধুমাত্র পার্থ ছাড়া অন্য কারও সঙ্গে মিশত না। একমাত্র পার্থ ডেকে পাঠালে তবেই সে বাড়ি থেকে বেরোত। পার্থও তাঁদের বাড়ির সামনে এসে প্রিয়াঙ্কার সঙ্গে কথা বলত। মেয়ে তাঁকে জানিয়েছিল, সে পার্থকে ভালোবাসে। তার সঙ্গে বিয়ে করতে চায়। তিনি মেয়েকে জানিয়েছিলেন, তাঁরা পার্থর সঙ্গেই তার বিয়ে দেবেন। গতকাল সন্ধেয় পড়া বুঝতে যাওয়ার নাম করে সে গৃহশিক্ষকের কাছে যায়। কিন্তু সে সেখানে যায়নি। রাতে মেয়ে বাড়ি না ফেরায় তাঁরা ভেবেছিলেন, হয়তো সে পার্থর সঙ্গে পালিয়ে গিয়েছে। কিন্তু আজ সকালে তাঁরা খবর পান, প্রিয়াঙ্কাকে খুন করে রেল লাইনের ধারে ফেলে দেওয়া হয়েছে। খবর পেয়ে তিনি ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন। দেখেন, ঘটনা সত্যি। তিনি নিশ্চিত, পার্থই তাঁর মেয়েকে খুন করেছে। তাঁর মেয়ে দুর্ঘটনার শিকার নয়।
এদিকে অভিযুক্ত ১৭ বছর বয়সী পার্থ জানায়, প্রিয়াঙ্কার সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক ছিল। তবে এই ঘটনায় সে জড়িত নয়। গতকাল রাতে সে বাড়িতেই ছিল। প্রিয়াঙ্কা তাকে জানিয়েছিল, তার বাড়ির লোকজন তাকে বিয়ের জন্য চাপ দিচ্ছে। কিন্তু সে এখনও পড়াশোনা করে। একদিকে যেমন তার বিয়ের বয়স হয়নি, তেমনই নিজের পায়েও দাঁড়াতে পারেনি। প্রিয়াঙ্কাকে সে জানিয়েছিল, নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে সে তাকেই বিয়ে করবে। তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।