অবতক খবর,১৩ মার্চ,অভিষেক দাস,মালদাঃ—শীতের মরশুমে অকাল বর্ষণ হয়েছিল মালদায়। আর তার ক্ষতিপূরণ দিতে হচ্ছে এখন মালদার আলুচাষিদের। জমি থেকে আলু তুলতে গিয়েই বেরিয়ে আসছে একের পর এক পচন ধরা আলু ।
পুরাতন মালদা ব্লকে বিপুল পরিমাণ আলু উৎপাদন করে এবার ক্ষতির মুখে পড়েছেন আলু চাষিরা। আর এর কারণ হিসেবে গত ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহের অকাল বর্ষণকে দায়ী করেছেন আলুচাষিরা। তাঁদের বক্তব্য, জমিতে ফলন নেমে এসেছে অর্ধেক। অনেক জমিতে আবার গাছেই আলু পচে যাচ্ছে। বিশেষ করে পুরাতন মালদা ব্লকের মহিষবাথানি, যাত্রাডাঙ্গা , ভাবুক, মঙ্গলবাড়ী, মুচিয়া , সাহাপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের বিস্তীর্ণ এলাকার জমিতেই আলুতে পচন দেখা দিয়েছে।
কৃষি দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলায় সবচেয়ে বেশি আলুর চাষ হয় পুরাতন মালদা ব্লকে। মহিষবাথানি ও ভাবুক গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় চাষের পরিমাণ সবচেয়ে বেশি। এবার গোটা শীত জুড়েই মাঝেমধ্যে বৃষ্টি হয়েছে মালদায়। তার মধ্যে দু’বার বৃষ্টির পরিমাণ ভালোই ছিল। তখনই চাষিরা আশঙ্কা করেছিলেন, অকাল বৃষ্টিতে চাষের বেশ ভালো ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা। বিশেষ করে মহিষবাথানি, যাত্রাডাঙ্গা ,মঙ্গলবাড়ী এলাকায়। কারণ, সেখানে জমি থেকে জল নিকাশের তেমন ব্যবস্থা নেই। একই কথা জানিয়েছিল ব্লক কৃষি দপ্তরও।
এখন বিভিন্ন এলাকায় জমি থেকে আলুর তোলার কাজ শুরু করেছেন চাষিরা। আর মাটি খুঁড়তেই মাথায় হাত চাষিদের।বহু আলু পোচতে শুরু করেছে। মহিষবাথানির আলুচাষি শিবলাল কল বলেন, বৃষ্টিতে অর্ধেক আলু পচে গিয়েছে।প্রায় দেড় বিঘা জমির আলু নষ্টো হয়ে গেছে। এখন খাব কী, আর ঋণ মেটাবই বা কী করে? কীভাবে সব সামাল দেব, বুঝতে পারছি না।আমরা সরকারী সাহায্যের দিকে তাকিয়ে আছি।
এলাকার আরেক চাষি আমাসু কল বলেন, এবার চার থেকে পাঁচ বিঘা জমিতে আলুচাষ করেছিলাম। ফসল তোলার সময় দেখছি, মাটির নীচে অর্ধেক আলুই পচে গিয়েছে। শীতে ভালো বৃষ্টি হয়েছিল। তার জন্যই আলুর ফলন মার খেয়েছে। লাভ হবে না। যা পরিস্থিতি তাতে চাষের খরচ তুলতে পারব কিনা বুঝতে পারছি না। আমারও কিছু ঋণ রয়েছে। তা মেটাতে হবে। তাই জমি থেকে আগাম আলু তুলে বাজারে বিক্রি করে দিচ্ছি।মহাজনদের ঋণ কি ভাবে শোধ করবো বুঝতে পারছি না।সরকারী সাহায্যের আশায় আছি।
জেলা কৃষি আধিকারিক জানান জেলায় মুলতো দুইটি ব্লকেই সবথেকে আলু চাষ বেশী হয়।পুরাতন মালদা ও গাজলে।শীতে বৃষ্টির জন্য আলু চাষের ক্ষতি হয়েছে।তবে চাষীদের শস্য বিমার আওত্তায় নিয়ে আসা হয়েছে।ক্ষতিপূরণ চাষীরা পাবেন।