এই দুপুরে বুলডোজারী আক্রমণ দেখবার পর

সহজ কবিতা লেখার কৌশল
তমাল সাহা

আমরা এখন সাপ লুডো খেলায় নেমেছি।
কবিতা আগেভাগেই বলে দিয়েছে আমি কিন্তু সাপ নেবো!
আমি বলি, সাপরা তো পুরুষ!
কবিতা বলে, সে যাই হোক আমাকে সাপে খাক,তাতে তোমার কি!
আমিও বলি, আমি পুরুষ আমি কিন্তু সাপই হবো।তোমাকে খাবো!
কবিতা বলে, তুমি আর কাকে কাকে খাও, আমি কি দেখতে যাচ্ছি?
যাক,তবে তো খেলা হবে না!
শেষে আমি বলি, দুজনাই সাপ হবো। আমি সাপ, তুমি সাপিনী। কে কাকে আগে খায় দেখি!

এদিকে খেলা শুরু হয়ে গিয়েছে।
আমরা লেজার ইভিল গ্রেটার ইভিল বাছাই করতে বসেছি। ইভিল কথাটি কমোন তা দেখতে পাচ্ছি না।

আগেই জানিয়ে দিয়েছি কবিতার শরীর খুব নরম।
আমরা এখন বাজে কথা যেমন চুতিয়া কবি, গাড়ল নেতা এমন কোনো শব্দ ব্যবহার করব না।

এদিকে বুলডোজার এগিয়ে গেছে।
চা-চপ, মুড়ি-ঘুগনি, আলুর দম-পোড়া রুটি, ডিমসেদ্ধ- বাটার টোস্ট-এর দোকান, ছোটখাটো ভাতের হোটেল ভাঙা হয়ে গেছে।
ভাঙ্গনের কাজ শুরু হয়েছে লক্ষ্য করো সংখ্যাগুরু এলাকায়।
এদের থেকে যা কামাই হবার বারো বছরে তা হয়ে গিয়েছে।

Men at work, এমন বোর্ড রাস্তার মাঝে লাগিয়ে দেয়া হয়েছে।
ওদিকে বেআইনি আবাসন পুকুর ভরাট থেকে প্রচুর টাকা কামিয়ে নেয়া হয়েছে।
ভেজাল আবাসন ভেঙে পড়ে বস্তির ১১ জন খুন হলেও পৌরমন্ত্রী গ্রেফতার হননি।
অন্যদিকে মস্তান বাহিনী ছাপ্পা মেরে ভোটের কারবারে প্রচুর মুনাফা অর্জন করেছে।

প্রজন্মরা রাস্তায় বসে আছে ঝড় জল বৃষ্টি মাথায় করে। কোনো ঝামেলা নেই। ওরা ভালো জায়গাতেই বসে আছে, মাতঙ্গিনী হাজরার বেদিপীঠে অথবা জাতির জনক মহাত্মা গান্ধীর পাদদেশে।
বসে থাকলেও ক্ষতি নেই ওদের থেকে যা তুলে নেবার তা তোলা হয়ে গেছে।

শাসক এখন সেই ওস্তাদ গোষ্ঠপাল।
গয়লা যা জল দেবার সেই পরিমাণ জল মিশিয়ে প্রচুর টাকা কামিয়ে নিয়েছে।
এখন কদিন সবুর করো।
সবুরে মেওয়া ফলে– এই নীতি ধরেছে।

এখন নাম ধরে ধরে গাল পাড়ছে নেতা-মন্ত্রী-পুলিশ আমলাদের।
ইনটু মিনটু সোনা আমার! লোক দেখিয়ে প্রকাশ্যে গাল দেবো, একটু হৈচৈ করবো।
মুখার্জি চ্যাটার্জী রোডে জবর দখলের অভিযোগে কিন্তু আবার আমার দিকে আঙ্গুল তুলবি না।
ওগুলো বামুন রোডের জমি বামুনরাই দখল করেছে তাতে দোষের কিছু নেই।
আমি তো ভাজা মাছ উলটে খেতে জানি না সোনা!
তোরা সয়ে নিবি। তোদের অভিযুক্ত করবো ঠিক আছে, তোদের তো আর তিহার জেলে পাঠাচ্ছি না!

বুলডোজার কদিন চলবে,
বিরোধীদের গলা ফাটানোর একটু সুযোগ দেব।
তারপর আবার যে কে সেই!

বাংলার নামে বেশ একটু সেন্টু তুলবো।
বাংলা-ইংরেজি মিশিয়ে বলবো,
যা অবস্থা দাঁড়িয়েছে বাঙালির তো আইডেন্টিটি-ই খুঁজতে হবে!
বাংলাভাষায় কথা বলার লোক পর্যন্ত পাওয়া যাবে না! শুধু আপনাদের জন্য সব দোষ এসে পড়ছে সরকারের ঘাড়ে!

বিপ্লবী ও অবিপ্লবীরা এখন আন্তর্জাতিক হতে প্যালেস্টাইন চলে গেছে!

জয় বাংলা
লে হালুয়া, চল পানসি! বেলঘরিয়া
বাংলার বায়ু বাংলার জল…
ঊর্ধ্ব গগনে বাজে মাদল…
দুহাতে সরাবো জঞ্জাল…

রবীন্দ্রনাথ নজরুল সুকান্তকে
একসঙ্গে কিভাবে ঠুঁসে দিলুম বল!
শেষ পর্যন্ত
গাঙ্গেয় উপকূলে পড়ে থাকবে বাংলার কঙ্কাল!