অবতক খবর , সংবাদদাতা , মালদা: – এবার করোনা আবহে অনেকেরই পুজোর জামা কাপড় কেনা হয় নি। নতুন পোশাক না হওয়ায় মন খারাপ বাড়ির শিশুদের। এই শিশুদের একটু আনন্দ দিলেন শহরের কয়েকজন যুবক। নিজেরাই বাড়ি বাড়ি পৌঁছে গিয়ে বাড়ির মহিলাদের হাতে তুলে দিলেন শাড়ি। শিশুদের হাতে তুলে দিলেন পোশাক। সামনেই শীত কড়া নাড়ছে। তাই বাড়ির প্রবীন মানুষটির হাতে তুলে দিলেন কম্বল। এমনই একটি আদিবাসী অধ্যুষিত হবিবপুর থানার শ্রীরামপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের গোপীনাথপুর, বাগানপাড়া, তেঁতুলপাড়া। সিঙ্গাবাদ থেকে প্রায় ৪ কিলোমিটার এগোলেই তাঁদের গ্রাম। বেশির ভাগ সব মজুর। ভিনরাজ্যে কাজ করে থাকেন তাঁরা। এখন পুরুষশূন্য গ্রামগুলি। মাটির বাড়ির দাওয়ায় বসে ভাবলেশহীন ভাবে স্থির দৃষ্টিতে আকাশের দিকে তাকিয়ে ছিলেন বছর সত্তরের মোহন হাঁসদা।
ওই যুবকদের দেখে কিছুটা হকচকিয়ে যান তিনি। কিছু বলার আগেই তাঁর হাতে ধরিয়ে দেওয়া হল একটি কম্বল। নিজের চোখকে বিশ্বাসই করতে পারছিলেন না তিনি। বললেন,‘এর আগে পুজোর আগে কেউ আমাদের গ্রামে আসে নি। যাক এবার শীতটা কোনও রকমে কাটিয়ে ফেলা যাবে।’ যুবকদের ঠিকানা শহরের রাজা শরৎচন্দ্র রোড। ছোট বেলাকার সব বন্ধু, সবাই যে যাঁর কাজে ব্যস্ত। এবার অতিমারি চারিদিকে। তাই নিজেরাই সিদ্ধান্ত নেন, গ্রামের মানুষদের পাশে দাঁড়ানোর। জনা ২০ যুবক, নিজেরা কিছু কিছু করে অর্থ দিয়ে তা দিয়ে কেনা হয় শাড়ি, কম্বল, শিশুদের পোশাক। তারপর হাজির হন আদিবাসী দু:স্থ গ্রামে। ‘জোনাকির আলো’ নামে তাঁদের সংস্থাটি গত ৫ বছর ধরে নিরলসভাবে কাজ করে চলেছে। ঠিক পুজোর আগে কোনও গ্রামে পৌঁছে গিয়ে প্রয়োজন মতো পোশাক তুলে দেন। এবার প্রায় ৩০০ জনের হাতে পোশাক তুলে দিয়েছেন। যুবকদের মধ্যে সঞ্জীব দাস, জয়ন্ত বসাক, বুদ্ধদেব দাস, অপু দত্তরা বলেন,‘এবার করোনা আবহ। মানুষের কাজ নেই। তাই পুজোয় শিশুরা সামিল হতে পারবে না। এই বিষয়টি আমাদের বিশেষ করে ভাবিয়ে তোলে। তাই ওদের পাশে দাঁড়ান। ওঁদের মুখে হাসি দেখেই যে আমাদের সুখ।’
‘