অবতক খবর,১৬ ফেব্রুয়ারি: ২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচনে কাকে জনপ্রতিনিধি হিসেবে চান বীজপুরবাসী?? বীজপুরের মানুষের মতামত জানতে আমরা একটি ই-ভোট করেছিলাম।

বীজপুরে প্রায় ১ লক্ষ ৯২ হাজার ভোটার রয়েছেন।
তারমধ্যে আমরা ২৫ হাজার ভোটারদের নিয়ে(যারা অবতক-এর নিয়মিত পাঠক-পাঠিকা) একটি ই-ভোট করেছিলাম।

প্রার্থী তালিকায় আমরা তৃণমূলের প্রার্থী হিসেবে সুবোধ অধিকারী, বিজেপির প্রার্থী শুভ্রাংশু রায়,বাম-কংগ্ৰেস জোট এবং নোটা এই চারটি অপশন রেখেছিলাম।

যেমনটা আমরা কথা দিয়েছিলাম, আমরা আজ সেই ভোটের ফলাফল ঘোষণা করছি।

তৃণমূলের সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে আমরা সুবোধ অধিকারীর নাম মনোনীত করেছিলাম।
তিনি পেয়েছেন সর্বোচ্চ ৭৩.১% ভোট।
বিজেপির সম্ভাব্য প্রার্থী মনোনীত করেছিলাম বিজেপির বিধায়ক তথা বিজেপি নেতা শুভ্রাংশু রায়কে। তিনি পেয়েছেন সর্বমোট ১৫.৪% ভোট।
অন্যদিকে বাম কংগ্রেস জোট পেয়েছে ১০.১% ভোট।
নোটা পেয়েছে ১.৩% ভোট।

অর্থাৎ ফলাফল দাঁড়াচ্ছে—–
তৃণমূল-৭৩.১%
বিজেপি-১৫.৪%
বাম-কংগ্ৰেস জোট-১০.১%
নোটা-১.৩%

এই ভোটের মাধ্যমে বীজপুরের মানুষের মতামত উঠে এসেছে। তারা কি চাইছেন,কাকে কোন দলের প্রার্থী হিসেবে দেখতে চান তারা,এই সবকিছুই মোটামুটি এই পোলিং এর মাধ্যমে অনেকটাই পরিষ্কার হয়েছে।

এই পোলিং এর মাধ্যমে দেখা গেছে, বিজপুর বিধায়ক তথা শুভ্রাংশু রায়ের অনেক অনুগামীরাই তাকে ভোট দেননি। কিন্তু তাদের অনেককেই তাঁর সাথে মিছিল-মিটিংয়ে দেখা যায়।
তাদের মধ্যে বেশ কয়েকজনের সঙ্গে আমরা যোগাযোগ করি এবং প্রশ্ন করি, আপনারা কেন বিজেপি নেতা শুভ্রাংশু রায়কে আসন্ন নির্বাচনের সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে ভোট দিলেন না?
প্রশ্ন এড়াতে এর উত্তরে কেউ বললেন, উৎসব,অনুষ্ঠান নিয়ে ব্যস্ত রয়েছি তাই এই ভোটিং পোল চোখে পড়েনি।
এক বিজেপি নেতা বললেন, মোবাইলে ইন্টারনেট ছিল না, তাই ভোট করতে পারিনি। ‌
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আর এক বিজেপি নেতা বললেন,আমরা এইরকম ভোটিং পোলে ভোট দিতে পারব না। কারণ আমাদের দলের একটি নিয়ম কানুন আছে, শৃঙ্খলা আছে। এইভাবে আমরা ভোট দিতে পারিনা।

অপরদিকে কয়েকজন পুরনো বিজেপির নেতা তো বলেই ফেললেন, তিনি আবার আমাদের নেতা নাকি! তাঁকে কেন আমরা সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে মেনে নেব এবং ভোট দেবো!

তবে এই ভোটিং এর মাধ্যমে যা দেখা গেল, তা হল-বীজপুরে এগিয়ে রয়েছেন তৃণমূল নেতা সুবোধ অধিকারী। এর পাশাপাশি তিনি আমাদের এই ভোটে জয়ী হয়েছেন।

উল্লেখযোগ্যভাবে এই দৌড়ে বাম-কংগ্রেস জোট অনেকটাই এগিয়ে ছিল। এর থেকে বোঝা যাচ্ছে এই নির্বাচনে মানুষের কাছে এই জোটের গুরুত্ব অনেকটাই বেশি।
এক্ষেত্রে একটি বিশেষ বিষয় নজরে এসেছে আমাদের। গতকাল যে ভোটটি বিজেপি পেয়েছিল আজ সেটি ঘুরে গিয়ে বাম-কংগ্ৰেসে চলে এসেছে। অর্থাৎ বেশ কয়েকজন বিজেপির দিতে গিয়েও অবশেষে ফিরেছেন বাম-কংগ্রেসে।

তবে এই ভোট করানোর উদ্দেশ্যে এটা নয় যে কত মানুষ কাকে ভোট দিয়েছেন। এই ভোট করানোর একটাই উদ্দেশ্য যে বীজপুরবাসী কি ভাবছেন,কাকে নিয়ে ভাবছেন, কাকে জনপ্রতিনিধি হিসেবে দেখতে চান। অর্থাৎ বীজপুরে কি আলোচনা চলছে আসন্ন নির্বাচন নিয়ে।

এই ভোটিংয়ের মজার দিক হল, ভোট একদিক থেকে অন্যদিকে ঘুরেছে,পুরনো নেতা, কর্মীরা নিজেদের নেতাকেই ভোট দেননি।

অন্যদিকে এই ভোটে সুবোধ অধিকারী জয়ী হয়েছে বলে খুশি তৃণমূল নেতাকর্মীরা।
তারা বলছেন সুবোধ বাবু তো জয়ী হবেনই। তিনি মানুষের পাশে থাকেন,তিনি মানুষের জন্য কাজ করেন।

তবে এই ভোট করানের উদ্দেশ্য আমাদের কাউকে অপমানিত বা ছোট করা নয়। আমাদের একটাই উদ্দেশ্য যে, বীজপুরের এই ভোটাররা কি ভাবছেন, কার সম্পর্কে ভাবছেন,কাকে তারা নিজেদের জনপ্রতিনিধি হিসেবে আগামী দিনে দেখতে চান। এটা একটা জন সমীক্ষা।