কবি অরুণ মিত্র-র আজ জন্মদিন
অরুণ আলো
তমাল সাহা
প্রান্তরেখা পেরিয়ে এসে উৎসের দিকে চলে যায়।ঘনিষ্ঠ তাপ নিয়ে মঞ্চের বাইরে মাটিতে এসে দাঁড়ায়।শুধু রাতের শব্দ নয়, প্রথম পলি, শেষ পাথর খুঁজতে খুঁজতে এতদূর চলে আসে সে।
সে জানে দুপুরে সূর্য গড়িয়ে গেলে কি হয়। বসন্তে কোন আহ্বান এসেছিল সে জানায় কবিতায়। সে আমাদের পিঠে হাত রেখে বলে গিয়েছিল, “চোখ কান খুলে রাখো।
বোধহয় দৃশ্যের চুড়ান্তে আসা গেছে।
দুরান্তকে লোপাট করে
ছন্নছাড়া মানুষগুলো গুনগুনিয়ে ওঠে।”
সে তো আমায় জিজ্ঞেস করেছিল, “এমন ছাই উড়ছে কেন রে, এত ছাই? দিন নেই রাত নেই সারাক্ষণ ছাই!” আরও বলেছিল, “আমার খিদে পেয়েছে,
ভাত মুখে দিয়েছি, ওঃ ছাইয়ে মাখামাখি!
ও মেয়ে তুই বলতো আমায় একি তোর শরীর পোড়া ছাই!”
কি অদ্ভুত ভাবে সে আমাকে বলেছে রিক্সাওয়ালার জীবন। রিক্সাওয়ালা ঠান্ডায় জমে কোথাও পাথর হয়ে পড়ে থাকবে। তা বলে রিক্সার চাকা দুটো তো মাটিতে গেড়ে যাবে না। তারা আবার ঘুরবে।
সে আমায় বলেছিল, আমি একজন অতি উৎকৃষ্ট অভিনেতা( সর্বোৎকৃষ্টও হতে পারে) জীবনই মঞ্চ আমার। জীন-অভিনেতা আমি।
সে আমার হাতে তুলে দিয়েছিল হৃদয়ের প্রগাঢ়তম সহজ সাবলীল শব্দ ঐশ্বর্যগুলি। “আমি বাগান থেকে ঘরে, ঘর থেকে বাগানে নিঃশত্রু বীজের ডানামেলা দেখতে চাই।” “তুমি সাড়া দাও। আমাকে পা ফেলবার জমিতে টেনে তোলো।”
আজ তার কথা যখন লিখছি তখন আমার বৈঠকখানার জানালা দিয়ে ছড়িয়ে পড়েছে অরুণের আলো আমার খাতার উপর।