অবতক খবর,৩ অক্টোবর,বাঁকুড়া:- মল্লগড় বিষ্ণুপুরের ইতিহাস হয়তো বহুবার কথিত আছে অনেক উপাখ্যানে। কিন্তু কিছু ইতিহাস হয়তো আজও লুকিয়ে আছে মানুষের দৃষ্টির অগোচরে৷ যেখানে বিষ্ণুপুর বলতে লাল মাটি, টেরাকোটার মন্দির, দলমাদল কামান আর মল্লরাজাদের বৃহৎ সাম্রাজ্যের ধংসাবসেসের কথাই মানুষজন বেশী জানে, ঠিক সেখানেই এক সৃষ্টির এক যেন নতুন সংযোজন লুকিয়ে আছে পোড়ামাটির হাট। গতানুগতিক চিন্তাধারা থেকে একটু আলাদা হয়ে মল্লগড়ের প্রান টেরাকোটার হস্ত নির্মিত শিল্প শৈলি জনসমক্ষে এনে হাটেবাজারে বিক্রি করা । সব কিছু ঠিকঠাকই চলছিল সপ্তাহের প্রতি শনিবারে এই হাটে অগনিত মানুষের আনাগোনা, শিল্পীদের শিল্প বিক্রি সবই চলছিল, এমন কি এই হাটের টানে জেলা থেকে শুরু করে জেলার বাইরে, এমনকি বিদেশ থেকে মানুষের আনাগোনা ছিল, শিল্পের কদর ছিল তো বটেই, কিন্তু হঠাৎই করোনা অতিমারি এসে সব কিছু যেন এক নিমেষে শেষ করে ফেললো। স্তব্ধ হলো মন্দির নগরী, স্তব্ধ হলো পোড়ামাটির হাট, মাথায় হাত পড়েছিল এই হাট কেন্দ্রীক প্রত্যেকটা মানুষের। কিন্তু কথিত আছে যে প্রত্যেকটা কালো অধ্যায়ের একটা শেষ আছে। আশ্বিনের শারদপ্রাতে কালো মেঘ আকাশ থেকে সরে গিয়ে, নীল আকাশ যেমন দেখা দিয়েছে তেমনি আজ থেকেই আবার মানুষের জন্য খুলে গেলো মন্দির নগরী বিষ্ণুপুরের পোড়ামাটির হাট।
হাটের বিভিন্নপ্রান্তে ছড়িয়ে ছিটেয় বসে থাকা শিল্পীদের পসার তার পাশেই মোরাম বিছানো গ্যালারীর মধ্যিখানে বিরল আদিবাসি নৃত্য মন তো কাড়বেই বলুন আমজনতার, আর তার টানেই তো পরিযায়ী পাখির মতো মানুষের ছুটে আসা।
অনুশ্রী রায় নামে দুবাই থেকে আগত পর্যটক বলেন,”এই ধরনের জিনিস আমরা টেলিভিশনে দেখতে পাই কিন্তু সামনে চাক্ষুস করলাম আজ খুবই ভালো লাগছে”।
মধুমিতা মিত্র নামে কলকাতা থেকে আগত আরেক পর্যটক জানালেন “বিষ্ণুপুরের কথা অনেকবার শুনেছি আজ চাক্ষুস দেখে মন ভরে গেল”।
বিষ্ণুপুরের মহকুমাশাসক অনুপ দত্ত জানান ” যেহেতু জেলার কোভিড পরিস্থিতি কিছুটা ভালো তাই মানুষের কথা চিন্তা করে সবরকম বিধি মেনে এই হাট পুনরায় চালু করা হলো”।
এই হলো মন্দির নগরীর এক নতুন সংযোজিত অধ্যায়ের উপাখ্যান। হ্যাঁ তবে সব কিছু ঠিক নিয়ম মাফিক চলে,আঁধার থেকে যেন এই অধ্যায় সেই আশাতেই বুক বাঁধছেন ব্যাবসায়ী থেকে পর্যটক সকল স্তরের মানুষজন।