অবতক খবর,৬ আগস্ট: আজ ভাদ্র মাসের কৌশিকী অমাবস্যা। প্রত্যেক বছর অমাবস্যার দিন লক্ষ লক্ষ মানুষের সমাগম ঘটে। কিন্তু এ বছর করোনাভাইরাসের কথা মাথায় রেখে তারাপীঠ মন্দির কমিটি এবং প্রশাসনের পক্ষ থেকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় মন্দির বন্ধ রাখার।
কিন্তু আজ এই কৌশিকী অমাবস্যার দিন রীতি মেনে মায়ের পূজা অর্চনা করা হয়। ভোরবেলায় মাকে রাজবেশে সাজিয়ে মঙ্গল আরতি দিয়ে শুরু করে মাকে শীতল ভোগ নিবেদন করা হয়। তারপরে দুপুরবেলা পঞ্চ ব্যঞ্জন সহকারে খিচুড়ি,পোলাও, মাছ, মাংস নানান রকম ভাজা দিয়ে ভোগ নিবেদন করা হবে এবং সন্ধ্যারতির পর পুনরায় মাকে শীতল ভোগ নিবেদন করা হবে।
বিশেষ এই তিথিতে তারাপীঠে মায়ের বিশেষ পুজোর আয়োজন হয়। এদিন অমাবস্যা তিথি শুরু হলেই মায়ের রাজবেশ সহকারে রাতে মায়ের পুজো করা হয়। আর এই পূর্ণ তিথিতে তাঁরা মায়ের সারা বছরের পূজার জন্য কুশ সংগ্রহ করা হয়।তাই এই অমাবস্যা তিথিকে কৌশিকী অমাবস্যা বলা হয়।
পুরাণে কথিত আছে, অসুরের অত্যাচার থেকে উদ্ধারের জন্য স্বর্গের দেবতারা মহামায়ার তপস্যা শুরু করেন। আরাধনায় সন্তুষ্ট হয়ে মহামায়া দেবী মানস সরোবরের জলে স্নান করে কালো রং ত্যাগ করে কৃষ্ণবর্ণা দেবী কৌশিকীর রূপ ধারণ করেন। সেই রূপেই দেবী শুম্ভ নিশুম্ভ নামের দুই অসুরকে বধ করে দেবতাদের রক্ষা করেন এই তিথিতেই। সেই থেকেই পাপের বিনাশ করার জন্য তারাপীঠ সহ নানান পীঠস্থানে কৌশিকী রূপে পুজো করা হয় মাকে।
কৌশিকী অমাবস্যার অর্থ হল তারা নিশি। এই তিথি তন্ত্র সাধনার এক বিশেষ রাত। অমাবস্যার এই বিশেষ তিথিতে সাধক বামা ক্ষ্যাপা তারাপীঠের মহাশ্মশানের শিমূল গাছের তলায় মা তারার আরাধনা করে সিদ্ধিলাভ করেছিলেন।
মনে করা হয়, বিশেষ এই তিথিতে তারাপীঠে তারা মায়ের পুজো করলে সকল মনের ইচ্ছে পূরণ হয়। এই কারণেই কৌশিকী অমাবস্যায় তারাপীঠে লাখো লাখো পূণ্যার্থী আসেন মায়ের আশীর্বাদ পাওয়ার জন্য। এদিন তারাপীঠের শ্মশান এক অন্য রূপ নেয়।তন্ত্র শাস্ত্রের ব্যাখা অনুযায়ী, এই তিথিতে মা তারার পুজো দিয়ে দ্বারকা নদীতে স্নান করলে শত জন্মের পুন্যলাভ হয়। আর এই কারণেই তারাপীঠে এই তিথিতে আয়োজন করা হয় বিশেষ পুজোর।
তন্ত্র স্বাস্থ্যের ব্যাখ্যা অনুযায়ী এই তিথিতে মা তারার পুজো দিয়ে দারোকা নদীতে স্নান করলে শতপাপ দূর হয় ।তাই তারাপীঠে এই তিথিতে বিশেষভাবে পুজোর আয়োজন করা হয়। এবছর কোভিডের কারণে তারাপীঠের বিশেষ পূজার্চনা চললেও দর্শনার্থীদের ভিড় এড়াতে মন্দিরে প্রবেশ নিষেধ করা হয়েছে প্রসাশনের পক্ষ থেকে, মন্দিরে প্রবেশের দ্বার বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।