অবতক খবর,২৯ সেপ্টেম্বরঃ মহালয়ায় কৃষ্ণপক্ষের অবসান। বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের মন্দ্রিত কন্ঠের চন্ডীপাঠ— ইয়া দেবি সর্বভূতেষু ….শেষ হয়ে গিয়েছে।
শরতের পরিবেশ চারিদিকে। সেই কবেকার সাবেকি কাশফুলের ঝোপঝাড় মাঠে প্রান্তরে। এমনকি ট্রেনের যান্ত্রিক শব্দ উপেক্ষা করে কাশফুল ফুটে আছে রেললাইন ধারে।
ততক্ষণে গুলির শব্দ শুনি। রক্তস্রোতের স্মৃতি ভেসে ওঠে– তমলুক ফৌজদারী আদালত চত্বরে। তখন ছিল অন্য এক কৃষ্ণপক্ষ। পরাধীন ভারতবর্ষ। দিনটি ছিল ২৯ সেপ্টেম্বর ১৯৪২। সেই বৈপ্লবিক আন্দোলনের ছায়াপাত খেলা করে সোনা রোদ্দুরে।
সকালে চায়ের কাপ হাতে কবিতা চলে আসে আমার লেখার টেবিলের কাছে। কবিতা বলে, মাতঙ্গিনী তো দুর্গা! আজ তাঁর মৃত্যুদিন। গুলি শব্দটির সঙ্গে ‘খাওয়া’ শব্দটির গুরুত্ব দেখেছো! গান্ধী বুড়ি মাতঙ্গিনী গুলি খেয়েছিলেন তিনটি— কপালে একটি ও দুই হাতে দুটি। কত রাউন্ড গুলি চলেছিল জানো? তাঁর দেহটি মাটি লুফে নিলেও জাতীয় পতাকাটি তখনও তাঁর হাতের মুঠোয় ধরা,পত পত উড়ছে….
আজ বোধহয় ৫৬৩ দিন পেরিয়ে গেল! মাতঙ্গিনী হাজরারা বসে আছে অবস্থান আন্দোলনে কলকাতায়। একটি মাতঙ্গিনী শত শত শিক্ষিতা মাতঙ্গিনী-দুর্গায় রূপান্তরিত হয়েছে। সেটা ছিল অহিংস আন্দোলন এটাও অহিংস আন্দোলন। সেটা ছিল পরাধীন ভারতবর্ষ– ভারত ছাড়ো আন্দোলন। এখন স্বাধীন ভারতবর্ষ! প্রতারক প্রজন্ম ঘাতক শাসকের বিরুদ্ধে শত শত দুর্গারা সক্রিয় আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে। তাদের দাবি যোগ্যদের চাকরি দাও।
মহিষাসুরকে বধ করতে দুর্গার কতদিন লেগেছিল আমি জানিনা।
মাতঙ্গিনী চলে গেলেও আরো মাতঙ্গিনী এসে দখল করে সেই স্থান। আন্দোলন চলতেই থাকে….
আমি শুনতে থাকি এইসব। চায়ের কাপ থেকে উষ্ণ চায়ের ধোঁয়া মিলিয়ে যায়, ততক্ষণে চা ঠাণ্ডা তরল হয়ে গিয়েছে।