অবতক খবর,১৩ই ডিসেম্বর: এতো ইস্যু কিন্তু কোনো ইস্যুকে সিপিএম কাজে লাগাতে পারছে না কেন? মানুষের মনে প্রশ্ন।কাঁচরাপাড়া শ্রমিক অধ্যুষিত এলাকা। কাঁচরাপাড়া রেল কারখানা একটি উল্লেখযোগ্য রেল কারখানা। শ্রমিক আন্দোলন এখানে ছিল একটা উল্লেখযোগ্য বিষয়। তাতে মূলত বামপন্থী নেতৃত্বই ছিল। কাঁচরাপাড়ার জনজীবনে বামপন্থী এবং বামমনস্ক মানুষেরই সংখ্যাধিক্য। কিন্তু সেই বাম আন্দোলন কাঁচরাপাড়া নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে কিনা কে জানে?

কাঁচরাপাড়ায় এখনো বড়ো বামপন্থী রাজনৈতিক দল বলে পরিচিত সিপিএম। অন্যদিকে রয়েছে এসইউসিআই এবং সিপিআই নামক দুটি দল। এসইউ সিআই-এর অস্তিত্ব বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে তারা নিশ্চিত পালন করে থাকেন। তবে সংখ্যাধিক্যে তারা এখনও সিপিএমের চেয়ে এই অঞ্চলে পিছিয়ে আছে। সিপিআই-এর একটি পার্টি অফিস, সেই অফিসটিতে গুটিকয়েক লোক বসে থাকেন। সেই ভাবে নিজস্ব কর্মসূচিতে তাদের তেমন কোনো প্রাধান্য নেই। সম্প্রতি গুরুদাস দাশগুপ্তর স্মরণ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

কাঁচরাপাড়ায় মূল দল বামপন্থী দল সিপিএম। সেই সিপিএমও মূলত দুটি ধারায় বিভক্ত হয়ে গেছে এবং এটি দৃশ্যমান। এখানে দুটি গোষ্ঠী বিরাজ করছে। দেবাশিস রক্ষিত গোষ্ঠী এবং শম্ভু চ্যাটার্জী গোষ্ঠী। কাঁচরাপাড়ার বামমনস্ক মানুষরা প্রত্যেকেই এটা অনুভব করছেন। একটি পার্টিতে আদর্শগত লড়াই চলে। কিন্তু এটি সেই আদর্শগত লড়াই কিনা বা ক্ষমতায়নের লড়াই কিনা এটা না বলা গেলেও প্রভাব যার বেশি তারই পার্টিতে অস্তিত্ব।

বর্তমান সময় অত্যন্ত সংকটাপন্ন সময়। এই সময়েও এই দুটি ধারা অর্থাৎ দেবাশিস এবং শম্ভু গোষ্ঠী একত্র হতে পারেনি। লংমার্চের সমর্থনে শ্রমিকশ্রেণীকে নিয়ে আহ্বায়ক হিসেবে শম্ভু চ্যাটার্জীর নেতৃত্বে মিছিল হয়েছে। সেখানে দেবাশিস রক্ষিত গোষ্ঠীর কাউকে দেখা যায়নি। অন্যদিকে সেইদিনই লং মার্চ ও বিজেপি সরকারের রাষ্ট্রীয় নিপীড়নের বিরুদ্ধে সিপিএম এবং কংগ্রেস সেবাদলের আয়োজনে একটি যৌথ মিছিল হয়েছে।এতে নেতৃত্ব দিয়েছেন এরিয়া কমিটির সম্পাদক দেবাশিস রক্ষিত। কাঁচরাপাড়ার ধরমবীর কলোনি সংলগ্ন অঞ্চল পরিক্রমা করেছে। অর্থাৎ একত্রিত হয়ে একটি সংঘবদ্ধ বড় লড়াইয়ের যে সূচনা হতে পারে তা কাঁচরাপাড়ার মানুষ দেখতে পারেনি।


একই কর্মসূচিতে আঞ্চলিক সিপিএম দুভাবে বিভক্ত হয়ে মিটিং মিছিলের আয়োজন করছে এটি দৃশ্যমান। আজ ভারতবর্ষে যে সাম্প্রদায়িকতার জিগির উঠেছে,এনআরসি এবং সিএবি-র বিরুদ্ধে ভারতবাসীর যে প্রতিবাদের জোয়ার উঠেছে তার বিরুদ্ধে কাঁচরাপাড়া সিপিএম দলটি একতাবদ্ধভাবে লড়াই করতে পারছে না। এটা মানুষ দেখতে পাচ্ছে।

বামধারা, বামপন্থী চিন্তা চেতনা পার্টিতে যদি এত বিভাজিত হতে থাকে, পার্টিই যদি ঐক্যবদ্ধ হতে না পারে তারা কিভাবে মানুষকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আওয়াজ তোলে? এ নিয়ে অঞ্চলে প্রশ্ন উঠে গেছে।