অবতক খবর,২৫ মার্চ,মলয় দে,নদীয়া:- ফিরোজ শাহ খাসির মাংস বিক্রেতা, রামু দত্ত প্রতিদিন 30- 40 টা মুরগি জবাই করেন, অভাবী সংসারে পরিবার সদস্যদের মুখে দুবেলা দুটো অন্য যোগাতে। দুজনেই প্রাণ এবং রক্ত নিয়ে ব্যবসা করতে গিয়ে মনের সঙ্গে লড়াইয়ে হয়ে পড়েন ক্লান্ত। কিন্তু আশায় থাকেন বছরে একটা দিন অন্তত মানুষের কাজে নিজেদের দেহের রক্ত দিয়ে মুমূর্ষু রোগীকে বাঁচিয়ে সামাজিক দায়িত্ব পালনের। আজ সেই দিন।

শান্তিপুর রেলবাজার আয়োজিত অনুষ্ঠানে, তারা প্রতিবছরই রক্ত দিয়ে থাকেন। বাজারের ঢুকতেই দুই পাশে দুই ফুলের দোকান বিনতা দাস , কামনা ঘোষ। তারাও সকাল সকাল বিক্রি সেরেছেন একেবারে রক্ত দিয়ে আবার বাড়ির হেঁসেল সামলানোর কারণে। ষাটোর্ধ্ব কামনা ঘোষকে সকলে ফুল মাসি বলে চেনে, তিনি বলেন বাড়ির কেউ শরীর খারাপ হলে অন্যের কাছে রক্ত চাইতে লজ্জা লাগে।
কালি বর্মন বিরাট আকার বটিতে মাছ কাটতে কাটতে বললেন, রক্ত দিলে সুস্থ থাকে শরীর।

আনোয়ারা বিবি সমস্ত মাছ এবং সবজি বিক্রেতা দের জল এনে বিক্রির জায়গা পরিস্কার করে সহযোগিতা করার বিনিময়ে সামান্য কিছু পারিশ্রমিক দিয়ে চালান নিজের সংসার। প্রতি বছর রক্ত দান করার, কারণ হিসাবে বলেন, যদি কারোর শরীর খারাপ হয় তখন কার্ড পাবেন কোথায়? এইরকমই উৎসাহী মানুষের ভিড়ে রেল বাজার ব্যবসায়ী সমিতির রক্তদান অনুষ্ঠান পরিণত হয়েছে উৎসবে। বাজার কমিটির সভাপতি সনাতন পাল বলেন, প্রতিবছর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান চালু থাকলেও গত তিন বছর যাবত রক্তদান অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। গতবছর শতাধিক মানুষ রক্ত দান করেছেন। সম্পাদক দেবু ভট্টাচার্য জানান, গতকালকের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে শান্তিপুর থানার ওসি, সি আই এবং পৌরসভার পৌরপ্রধান উপস্থিত ছিলেন। আজ এসেছেন ভাইস চেয়ারম্যান।

ভাইস চেয়াম্যান কৌশিক প্রামানিক জানান, এভাবে এত বড় লাইন দিয়ে রক্তদান আগে দেখিনি। সরকারের সাথে ক্লাব বারোয়ারি গুলি এভাবে সামাজিক বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করলে তবেই হবে সামগ্রিক উন্নয়ন, ধন্যবাদ জানাই রেল বাজার কমিটি কে।