দাদিমার নাম হাদিয়া নাসাব। জন্মেছিলেন ১৯৪৪ সালে। এই ইজরায়েল-হামাস যুদ্ধে বিমান হামলায় আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন।সুস্থও হয়েছিলেন। ইজরায়েলি নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে বাড়ি ফিরেছিলেন। ৮ ডিসেম্বর ২০২৩ বাড়ির দোরগোড়ায় তাকে হত্যা করেছে ইজরায়েলি স্নাইপাররা। হাদিয়ার এই ভিডিওটি ভাইরাল হয়েছে। ভিডিওটি করেছেন সাংবাদিক সালেহ আল জাফরাবি।
আমি ইজরায়েলের থেকেও বড়
তমাল সাহা
দাদিমা আমাকে বলেছিল,
এই যে দেখছিস এতো বড়ো আকাশ সমুদ্র মরুভূমি
জানিস তো ঊনআশি বছর ধরে দেখছি
এই যে উজ্জ্বল সানবার্ড, এটা আমাদের জাতীয় পাখি
আর ওই পপি ফুল আমাদের জাতীয় ফুল
আমাদের বাড়ির উঠোনেও তো জলপাই গাছ আছে
জানিস তার কতরকম গুণ!
এটা আমাদের জাতীয় গাছ।
এসবই আমি ঊনআশি বছর ধরে দেখি আসছি।
দাদিমা বলেছিল,
চল! তোকে জোতজমিগুলো দেখিয়ে আনি
কিভাবে স্ট্রবেরি চাষ হয় দেখলে আশ্চর্য হয়ে যাবি। দ্যাখ! কত স্ট্রবেরি, খেতের মুখটা তোর মায়ের ঠোঁটের মতো লাল করে রেখেছে।
দাদিমা আমাকে বলেছে,
এটাই তো আমার দেশ, বাস্তভিটে জন্মভূমি।
এটা ছেড়ে যাওয়া যায় নাকি!
আর ছেড়েই বা যাবো কেন? তখন দাদিমার মুখের বলিরেখাগুলো খুব স্পষ্ট তো বটেই দৃঢ় হয়ে উঠেছিল।
আমাকে হিসেব করে করে বলেছিল,
ইজরাইলের জন্ম ১৯৪৮ সালে আর আমার জন্য ১৯৪৪ সালে।
তো! তুই ১৯৪৮ থেকে ১৯৪৪ বিয়োগ করে দ্যাখ
আমি ইজরায়েলের চেয়ে চার বছরের বড়
মানে তখন ইজরায়েলের জন্মই হয়নি।
তোরা তো জানিস না সেই নাকবার কথা!
ওরা জোর করে আমাদের তাড়িয়ে দিয়েছিল।
দাদিমা আমাকে বলেছিল,
ঊনআশি বছর ধরে বুকের ঠিক এইখানটায় প্যালেস্টাইনকে আগলে রেখেছি
আমি ইজরাইল রাষ্ট্রের চেয়েও চার বছরের বড়।
তারপর ওরা একদিন এলো।
নিজের বাড়ির দোরগোড়াতেই দাদিমাকে গুলি করে মারলো!