অবতক খবর , সংবাদদাতা আসানসোল:- আসানসোল-দুর্গাপুর কমিশনারেট এলাকায় নতুন করে এবার ৩০০টি পুজো কমিটি রাজ্য সরকারের দেওয়া ৫০ হাজার টাকা অনুদান পাচ্ছে। করোনা পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে এবারই সরকারি অনুদান ২৫হাজার থেকে বাড়িয়ে ৫০হাজার টাকা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জেলায় এবার প্রায় এক হাজার পুজো কমিটি সরকারি টাকা পেতে শুরু করেছে। বহু পুজোর কমিটির দাবি, এই টাকা দিয়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার বার্তা দেওয়ার পাশাপাশি দুঃস্থদের পাশে দাঁড়ানো হবে। অধিকাংশ পুজো কমিটি এবার দর্শনার্থীদের মাস্ক বিলি করবে। আসানসোল-দুর্গাপুর কমিশনারেট পুজোয় দু’লক্ষের বেশি মাস্ক বিতরণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ভিড় নিয়ন্ত্রণে নতুন করে বেশ কিছু রাস্তা ওয়ান ওয়ে করা হবে। ব্যবহার করা হবে ড্রোন। কয়েকদিনের মধ্যেই পুজোর গাইড ম্যাপও প্রকাশ করবে পুলিস।
ডিসি(হেড কোয়ার্টার) অংশুমান সাহা বলেন, প্রায় এক হাজার পুজো কমিটি এবার ৫০ হাজার টাকা করে পাচ্ছেন। যাতে টাকা পেতে সমস্যা না হয়, তার উপর বাড়তি নজর দেওয়া হয়েছে। আমরা মাস্ক বিতরণ করব। পুজোর সময় ড্রোনও ব্যবহার করা হবে।
কলকাতা ও শহরতলি বাদ দিলে বিগ বাজেটের পুজোর সংখ্যার নিরিখে প্রথম সারিতে রয়েছে দুর্গাপুর, আসানসোল, চিত্তরঞ্জন, রানিগঞ্জের পুজোগুলি। দক্ষিণবঙ্গের বহু জেলা থেকে এই শহরগুলিতে পুজোর রাতগুলিতে ভিড় জমান বহু মানুষ। লক্ষ লক্ষ মানুষের সমাগমে রাতভর হুল্লোড়, খাওয়া-দাওয়া চলে। কিন্তু করোনা মহামারী সবকিছু এবার এলোমেলো করে দিয়েছে। জেলাজুড়ে গতবার ১৪০০ পুজো হয়েছিল। কিন্তু করোনার ধাক্কা সামলে কতগুলি পুজোকমিটি শেষপর্যন্ত পুজো করতে পারবে কি না, তা নিয়ে সন্দেহ ছিল। মানুষের হাতে টাকার অভাব, চাঁদার ঘাটতি ও বাণিজ্যের করুণ অবস্থার জেরে বিজ্ঞাপনের ঘাটতি দেখা দেয়। আর্থিক সমস্যায় পুজো করা নিয়ে সংশয়ে পড়েন উদ্যোক্তারা।

 


এই পরিস্থিতিতে মুখ্যমন্ত্রী ৫০হাজার টাকা করে অনুদানের ঘোষণা করায় কার্যত মরা গাঙে জোয়ার আসে। গতবার আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিস কমিশনারেট এলাকার ৬৯০টি পুজো কমিটি রাজ্য সরকারের সাহায্য পেয়েছিল। এই কঠিন অবস্থায় যেসব পুজো কমিটি ১০বছরের পুরনো, তাদের সবার জন্য অনুদান দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী। আরও বেশি পুজো কমিটি যাতে এই সুযোগ পায়, তা নিয়ে সচেষ্ট হয় সরকার। তাতেই আবেদনের ভিত্তিতে কমিশনারেট এলাকার ৯৮৩টি পুজো কমিটি এই টাকা পাচ্ছে। গত বছর নামের ভুল, অ্যাকাউন্ট নম্বর ভুলের জন্য কিছু পুজো কমিটির টাকা পেতে সমস্যা হয়েছিল। এবার প্রথম থেকেই সেই বিষয়ে পুলিস বাড়তি নজর দিয়েছিল। তাই এখনও পর্যন্ত কোনও সমস্যা হয়নি।
বার্নপুরের নববিকাশ ক্লাবের কর্তা রূপক সরকার বলেন, আমরা এই টাকা দরিদ্র মানুষের সাহায্যে ব্যবহার করব। কিছু টাকা স্বাস্থ্য বিধি মানতে ব্যয় করা হবে। মুখ্যমন্ত্রী এই টাকার ব্যবস্থা করায় খুবই সুবিধা হয়েছে।

 

পুজো সুষ্ঠুভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে করতে বদ্ধপরিকর পুলিস-প্রশাসন। তাই যাতে কোনও ছোট পুজোও পুলিসের নজর থেকে বাদ না পড়ে, সেই দিকটিও দেখা হচ্ছে। পুলিসের তথ্য অনুযায়ী জেলায় পুজোর সংখ্যা ১৫০০ ছাড়িয়েছে। পুজোর সময়ে যাতে সাধারণ মানুষ মাস্ক ব্যবহার করেন, তার উপর বিশেষ নজর দেওয়া হবে। বিভিন্ন জায়গায় বাড়তি পুলিস কিয়স্ক করা হচ্ছে। সেখান থেকে দু’লক্ষের বেশি মাস্ক বিলির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। মাস্ক দিয়ে শুধু সাহায্য করাই নয়, মাস্ক না পরলে কড়া পদক্ষেপও নেওয়া হবে। ভিড় নিয়ন্ত্রণে ড্রোনের সাহায্যেও চলবে নজরদারি।