বিনয় ভরদ্বাজ ,অবতক খবর, ১২ই জুন :: বিনয় ভরদ্বাজ ,অবতক খবর, ১২ই জুন :: ভারতবর্ষে এখন কোভিড19 গোষ্ঠী সংক্রমণ শুরু হয়ে গেছে অর্থাৎ ভারতবর্ষে এখন থার্ড স্টেজে পৌঁছে গেছে। এই দাবি শুরু হয়েছে বহু জায়গায়। বিশেষ করে মহারাষ্ট্র, দিল্লিতে যেভাবে করোনা আক্রান্তদের সংখ্যা লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে তাতে এমনই দাবি করছেন বিভিন্ন চিকিৎসক ও বিশেষজ্ঞরা।
আজ শুক্রবার দেশে করনা রোগীর সংখ্যা তিন লক্ষ পৌঁছে গেছে। মৃত্যু হয়েছে 8506 জনের।শুধু মহারাষ্ট্রে আক্রান্ত সংখ্যা প্রায় 1 লক্ষ এবং মৃত্যু হয়েছে 3590 জনের। তাছাড়া দিল্লিতে 34687 জন আক্রান্তদের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে এক হাজার 85 জনের এবং গুজরাটে 22880 আক্রান্তদের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে 1385 জনের।
শুধুমাত্র গত বৃহস্পতিবার অর্থাৎ গতকাল 24 ঘণ্টার মধ্যে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন দেশে 1,12,375 জন। রোগীর সংখ্যা যেভাবে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে তাতে দেখে মনে করা হচ্ছে যে গোষ্ঠী সংক্রমনের পালা আমাদের দেশেও শুরু হয়ে গেছে।
AIMS এর ডিরেক্টর রণদীপ গুলেরিয়া দাবি করেছেন যে দিল্লিতে গোষ্ঠীর সংক্রমণ শুরু হয়ে গেছে। শুধু তাই নয় দিল্লির স্বাস্থ্যমন্ত্রী সাত্যেন্দ্র জৈন বলেছেন যে 50% আক্রান্ত রোগীদের উৎস খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না তাই তিনি আশংকা জাহির করে বলেন যে এই অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে যে দিল্লিতেও গোষ্ঠীর সংক্রমণ শুরু হয়ে গেছে।
কিন্তু তাদের এই দাবিকে নস্যাৎ করে দিয়েছেন আইসিএমআর ডিরেক্টর জেনারেল বলরাম ভার্গভ। তিনি বলেছেন যে ভারতবর্ষে এখনো পর্যন্ত করোনা অর্থাৎ কোভিড 19 এর গোষ্ঠী সংক্রমণ শুরু হয়নি। তিনি বলেন অনেকেই এমন দাবি করছেন কিন্তু আমরা তথ্য ও সার্ভে করে বলছি যে দেশে এখনো পর্যন্ত গোষ্ঠীর সংক্রমণ শুরু হয়নি। তিনি আরো বলেন আমরা জানিদেশে রোগীর সংখ্যা প্রতিদিন হাজার হাজার বাড়ছে তবে এর মানে এই নয় যে গোষ্ঠী সংক্রমনের পক্ষে আমরা দাবি জানাবো। এই রোগীদের সংখ্যা বৃদ্ধির কারণ হচ্ছে বেশি সংখ্যক টেস্ট। আমরা আগে থেকে অনেক অনেক বেশী করে টেস্ট করছি। তাই রোগীও বেশি করে পাওয়া যাচ্ছেন। যেমন গত 24 ঘন্টার মধ্যে দেশে এক লক্ষ 51হাজার 808 টি স্যাম্পল টেস্ট করা হয়েছে যার জন্যই রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে।
তিনি আরো বলেন যে দেশের চারটি প্রধান প্রধান বড় বড় শহরে যেখানে 50 শতাংশ রোগী রয়েছেন সেখানে রেনডম ব্লাড স্যাম্পল টেস্ট করে এক নতুন তথ্য পাওয়া গেছে। হটস্পট এলাকা ও কন্টেইনমেন্ট জোনে অন্তত ৩০ শতাংশ মানুষ অজান্তেই করোনা আক্রান্ত হচ্ছেন বলে জানা গিয়েছে। আবার অজান্তেই তাঁদের সংক্রমণ সেরে যাচ্ছে বলে জানিয়েছে ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিক্যাল রিসার্চ।
আইসিএমআরের তরফে দেশের ৬০ টি জেলায় ও ছ’টি আর্বান হটস্পট যেমন কলকাতা, দিল্লি, মুম্বই, চেন্নাই, পুনে ও আহমেদাবাদে এই সেরো – সার্ভে করে দেখা হয়েছে। সেরো – সার্ভের মাধ্যমে রক্তের সেরাম নিয়ে পরীক্ষা করে দেখা হয় সেখানে করোনাভাইরাসের অ্যান্টিবডি রয়েছে কিনা। প্রতিটি এলাকা থেকে অন্তত ৫০০ জনের রক্তের নমুনা নিয়ে প্রায় ৩০ হাজার নমুনার অ্যালাইজা অ্যান্টিবডি টেস্ট করে দেখা হয়েছে।
এই টেস্ট করে দেখো গিয়েছে মুম্বই, দিল্লি, পুনে ও আহমেদাবাদে অন্তত ৩০ শতাংশ বাসিন্দাদের রক্তে কোভিড অ্যান্টিবডি রয়েছে। অর্থাৎ তাঁরা আক্রান্ত হয়ে ফের সুস্থ হয়ে উঠেছেন। কিন্তু নিজেরাই জানতে পারেননি। গ্রামাঞ্চলে এই শতাংশ খুবই কম বলে জানিয়েছে আইসিএমআর।