অবতক খবর: চাকরি পাওয়ার আশায় ফের একবার হাইকোর্টের দ্বারস্থ হলেন ববিতা সরকার। হাইকোর্টের নির্দেশেই তিনি স্কুল শিক্ষিকার চাকরি পেয়েছিলেন। আবার হাইকোর্টের নির্দেশেই সেই চাকরি হারাতে হয়েছে ববিতাকে। তাঁর চাকরিটি পেয়েছেন অনামিকা রায় নামে অন্য এক এসএসসি পরীক্ষার্থী। এবার চাকরি পাওয়ার আশায় উচ্চ আদালতে নতুন মামলা করলেন ববিতা।
কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে ২০১৬ সালের একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির নিয়োগ পরীক্ষার উত্তরপত্র এবং বিস্তারিত মেধাতালিকা প্রকাশের আবেদন জানিয়েছেন ববিতা। বৃহস্পতিবার এই বিষয়ে স্কুল সার্ভিস কমিশনের বক্তব্য জানতে চেয়েছেন বিচারপতি।আদালতে ববিতার আইনজীবী ফিরদৌস শামিমের বক্তব্য, ২০১৬ সালের একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির নিয়োগ প্রক্রিয়ায় ৫,৫০০ জনকে চাকরি দেওয়া হয়েছিল। পরে নিয়োগ মামলার তদন্তে ৯০৭টি বিকৃত উত্তরপত্র (ওএমআর শিট) উদ্ধার করে সিবিআই। তার মধ্যে ১৩৮ জন ছিলেন ওয়েটিং লিস্টে (প্রতীক্ষিত তালিকায়)। ববিতার আবেদন, একাদশ-দ্বাদশের বিস্তারিত তথ্য-সহ প্যানেল প্রকাশ করা উচিত। তা হলে কারা, কী ভাবে, কোথায় চাকরি পেয়েছেন, তা পরিষ্কার হয়ে যাবে।
এই তালিকায় যদি প্রথম ২০ জনের মধ্যে দুর্নীতির কারণে কেউ চাকরি পেয়েছেন বলে প্রমাণিত হয়, তবে ববিতার ভাগ্যে আবার শিকে ছিঁড়তে পারে। তিনি আবার স্কুলশিক্ষিকার চাকরি পেতে পারেন। তাই প্যানেল প্রকাশ করার আর্জি জানিয়ে হাইকোর্টে নতুন মামলা করেছেন ববিতা। এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে শুক্রবার।
এক সময় রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী পরেশ অধিকারীর কন্যা অঙ্কিতা অধিকারীর বিরুদ্ধে নিয়ম-বহির্ভূত পদ্ধতিতে চাকরি পাওয়ার অভিযোগ এনে আদালতের দ্বারস্থ হন ববিতা। মামলা শেষে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশে স্কুলশিক্ষিকা পদ হারিয়েছিলেন অঙ্কিতা। সেই চাকরি ববিতাকে দেওয়ার নির্দেশ দেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। এর পর ববিতারও চাকরি বাতিলের দাবিতে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন শিলিগুড়ির বাসিন্দা অনামিকা। তাঁর অভিযোগ ছিল, স্কুল সার্ভিস কমিশন (এসএসসি)-এর কাছে আবেদন করার সময় ববিতার স্নাতকস্তরের শতকরা নম্বর বাড়িয়ে দেখানো হয়েছে, যার ফলে তাঁর ‘অ্যাকাডেমিক স্কোর’ বেড়ে গিয়েছে।
বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশে এবার চাকরি হারান ববিতা। সেই চাকরি অনামিকাকে দেওয়া হয়। একই সঙ্গে অঙ্কিতার থেকে যে টাকা ববিতা পেয়েছিলেন, তা-ও ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয় তাঁকে।
বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হয়েছেন ববিতা। সেই মামলা এখনও ডিভিশন বেঞ্চেই বিচারাধীন। তার মাঝেই মেধাতালিকা, উত্তরপত্র দেখতে চেয়ে নতুন মামলা করলেন ববিতা।