বিপ্লবী কবি চেরাবান্দা রাজু-র আজ ৩ জুলাই প্রয়াণ দিবস। কবিতা, যাপিত জীবন ও সশস্ত্র
সংগ্রামকে তিনি পরিপূরক করে তুলেছিলেন।
৪০ বছর জীবনের প্রায় ১০ বছর তিনি জেল কুঠুরিতে কাটিয়েছেন। কবিতার সঙ্গে তার আমৃত্যু সহবাস। আমার শ্রদ্ধা নিবেদন

একটি জীবনের ছবি
তমাল সাহা

সকালে উঠেই
জেলখানার মাথার উপরে সূর্যের দিকে
তাকাতো সে।
নিজে কিনেছিল দুটি উপাদান–
কাগজ ও কলম।
কাঁচামাল সে সহজেই
যোগাড় করে আনতে পারতো।
তার ছিল বড় বড় দুটি আয়ত চোখ।

তার কবিতা নির্মাণ পদ্ধতি ছিল এইরকম—
কারখানার মানুষ
খেতির মানুষ
সমস্ত শ্রমের মানুষদের
সে একসঙ্গে মিশিয়ে দিত।
তাদের বলতো, শ্রমের কোনো জাত ধর্ম নেই
বুকে পুরে দিত রাজনৈতিক চেতনা
চোখে স্বপ্নের মায়া কাজল পরিয়ে দিত
এবার ছেড়ে দিত লড়াইয়ের ময়দানে।

কবিতায় প্রকৃতির নির্যাসে
লৌকিক ছবিতে সে গড়ে তুলতে পারতো
বিপ্লবী গ্রাম।
কোথায় যে লুকিয়ে থাকতো গেরিলারা
রাষ্ট্রীয় সাঁজোয়া বাহিনী খুঁজে পেতে হয়রান।

চলমান লড়াইয়ে দুর্দান্ত কলম নিয়ে
সেও নেমে পড়তো নিজে।
সে ফাঁসিতে নয়,
নিজেই রাষ্ট্রের গলায় ফাঁস হবার
অদম্য ইচ্ছে জানিয়েছিল।
শোষণের কারাগার ভাঙতে নিজেই
বছরের পর বছর কাটিয়েছিল
জেল কুঠুরির জীবন।

কিন্তু রোজ ভোরে
কুঠুরির উঁচু ঘুলঘুলি দিয়ে
রোদের নরম আলো আছড়ে পড়তো
কোঠা ঘরের অসমতল মেঝেতে—

রোদ বলতো, কি ভালো আছো তো!