অবতক খবর,৭ আগস্ট,বালুরঘাট: একে করোনায় রক্ষে নেই এবার দক্ষিন দিনাজপুর জেলায় দোসর হয়েছে আরেক ভয়ংকরী কালাজ্বর। জেলার আদিবাসি অঞ্চলে মাটির বাড়িতে বসবাসকারি মানুষজনের মধ্যে ফের মাথা চাড়া দিয়েছে এই রোগের প্রকোপ।

জেলার একমাত্র হিলি ব্লক বাদে বংশিহারী, কুশ্মন্ডি, তপন সহ প্রায় সব ব্লকেই আদিবাসি এলাকা গুলি থেকে স্বাস্থ্য কর্মীদের সার্ভে রিপোর্টে কালাজ্বরের খবর পাওয়া গিয়েছে। যেহেতু এই রোগের প্রাদুর্ভাব বেড়ে চলেছে আদিবাসি অঞ্চল গুলিতে। সেদিকে লক্ষ রেখেই জেলায় কালাজ্বর নির্মুল করতে এবার জেলা স্বাস্থ্য দফতরের উদ্যোগে সচেতনতা মূলক প্রচারে অলচিকি ভাষার সাহায্য নেওয়া হচ্ছে।

পাশাপাশি এই রোগ ছড়ানোর বেলে মাছিরা মাটির বাড়ির দেওয়ালে যেহেতু বাসা বেধে থাকে। সেদিকে নজর দিয়ে জেলা স্বাস্থ্য দফতর ওই সব অঞ্চলের মাটির বাড়িতে থাকা আদিবাসি মানুষজনদের সরকারি ইন্দিরা আবাসন প্রকল্পের মধ্যমে পাকা বাড়ি নির্মানের দিকেও ঝুকেছে।

বর্তমান পরিস্থিতিতে জ্বর মানেই সকলের মনে করোনা আতঙ্ক। করোনা আতঙ্কে কিছুটা হলেও পিছনের সারিতে চলে গিয়েছে ম্যালেরিয়া, ডেঙ্গি, কালাজ্বরের মতো অসুখ। ফলে রোগ সনাক্ত দেরিতে হচ্ছে, সেই সঙ্গে চিকিৎসাও।প্রতিবছরই বর্ষা মৌসুমে বেড়ে যায় কালাজ্বর। গত বছর থেকে করোনার প্রকোপ নিয়ে স্বাস্থ্য দফতরের কাজকর্ম বেড়ে যাওয়ায় কালাজ্বরের বাহক বেলেমাছি নিধনে করা হয়নি তেমন
কোনো কার্যক্রম। পাশাপাশি স্প্রে করা হয়নি প্রয়োজনীয় কীটনাশক।রোগ বেড়ে যাওয়ার কারনও এটাই।
তাই দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার আদিবাসী অধ্যুষিত গ্রামীণ এলাকায় কালাজ্বরের প্রাদুর্ভাব বাড়ছে এমন খবর পাওয়া গেছে জেলা স্বাস্থ্য দফতর সুত্রে।

স্বাস্থ্যদপ্তর জানিয়েছে, ইতিমধ্যেই দক্ষিণ দিনাজপুর জেলায় ২২ জন কালাজ্বরে আক্রান্ত হয়েছেন। আক্রান্তদের সকলেই গ্রামীণ আদিবাসী এলাকার বাসিন্দা। তাদের মধ্যে এই মাসে বংশীহারি ব্লকের চৌঘরিয়া গ্রামের পাঁচজন আক্রান্ত হয়েছেন। সেখানে স্বাস্থ্যদপ্তর থেকে মেডিক্যাল টিম পাঠানো হয়েছে। এছাড়াও কুশমণ্ডির কালাজ্বরের হটস্পট নামবৈল গ্রামেও প্রতিবার কেউ না কেউ আক্রান্ত হন। এবছরও কয়েকজন আক্রান্ত হয়েছেন। পুরো এলাকা স্বাস্থ্যদপ্তরের নজরদারিতে রয়েছে। তপন ব্লকেও ইতিমধ্যেই কয়েকজন আক্রান্তের হদিশ মিলেছে।

তাই এবার জেলাজুড়ে আদিবাসী অধ্যুষিত এলাকায় অলচিকি ভাষায় সচেতনতামূলক প্রচারে নামছে জেলা স্বাস্থ্যদপ্তর। মূলত আদিবাসী অধ্যুষিত এলাকায় সচেতনার অভাবে মাটির বাড়িতে বেলেমাছির প্রাদুর্ভাবে কালাজ্বর ছড়াচ্ছে। তাই অলচিকি ভাষায় প্রচারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্বাস্থ্যদপ্তর। ইতিমধ্যেই অলচিকি ভাষায় নানারকম সচেতনতামূলক ফ্লেক্স, ব্যানার ও লিফলেট তৈরির প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। সেগুলি জেলার আদিবাসী অধ্যুষিত এলাকায় লাগানো হবে। পাশাপাশি অলচিকি ভাষায় মাইকিংয়ের ব্যবস্থাও করা হচ্ছে বলে জেলা স্বাস্থ্যদপ্তরের কর্তারা জানিয়েছেন।

এই উদ্যোগে আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষ দ্রুত সচেতন হতে পারবে এবং রোগের প্রাদুর্ভাব কমবে বলে স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা আশাবাদী।