অবতক খবর,২০ মার্চ,মলয় দে নদীয়া:- অনেক জায়গাতেই কিশোর,যুবকরা নেশার ঘোরে মত্ত, মোবাইল করে ফেলেছে তাদের বিপথগামী। কিন্তু নদীয়া জেলার প্রত্যন্ত গ্রাম শান্তিপুর ব্লকের ফুলিয়ার উমাপুর কিন্তু অন্যরকম।আঠার বছর বয়সের নিচের ছেলেরা নিজেরাই পড়াশোনার সাথে হিন্দু ধর্মের ঐতিহ্য ধরে রাখতে রাধাকৃষ্ণ সেজে গ্রামের মানুষকে রাধা কৃষ্ণের বিভিন্ন লীলা পালা গানের মাধ্যমে মানুষের সামনে তুলে ধরে তাদের যেন পৌছে দেয় বৃন্দাবনে।
চলছে দোল পূর্ণিমা। রাধা কৃষ্ণের নাম- গানে মেতে উঠেছেন হাজার হাজার বৈষ্ণব ভক্তরা।যদিও শান্তিপুরের কাছেই ফুলিয়ার উমাপুর গ্রামের মানুষেরা ফাল্গুন মাসের প্রথম রবিবার থেকে চৈত্র মাসের প্রথম রবিবার পর্যন্ত টানা এক মাস ধরে নিরামিষ খাবার খান। আদর আন্তরিকতা ও সম্মান প্রদর্শন গ্রামের মানুষের মনের মধ্যেই। গ্রামের বাসিন্দারা জানিয়েছেন,’আমাদের গ্রামের পাঁচ থেকে আঠারো বছর বয়সী ছেলেরা শুদ্ধ বস্ত্রে রাধাকৃষ্ণ, কংস,পুতুনা রাক্ষসী সহ বিভিন্ন রূপে সেজে ভগবান শ্রীকৃষ্ণের জন্ম থেকে রাসলীলা, পুতনা রাক্ষসী বধ, বকাসুর বধ সহ কংস বধ পর্যন্ত বিভিন্ন পালা গান করে থাকে। তবে সমগ্র অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করে গ্রামের যুবকরা একই রঙের ধুতি পাঞ্জাবি পড়ে।
শেষে কুঞ্জ মেলায় রাধা কৃষ্ণের মিলনের মাধ্যমে মাসাধিক ব্যাপী উৎসবের শেষ হয়।’ এখানে মূল পঞ্চবটী বৃক্ষের নিচে রাধা কৃষ্ণকে ফল মিষ্টির সাথে সোনারূপো বা অন্য কোন ধাতব বাঁশি বক্ষ কবজ এবং ময়ূর পালক দিয়ে পুজো দিয়ে বিভিন্ন রকম মানত করার রীতি প্রচলিত আছে।
গ্রামের অনেকেই জানিয়েছেন,কুঞ্জ মেলার দিন অর্থাৎ আজ গ্রামের প্রায় প্রতি বাড়িতেই একাধিক মানুষের দুপুরের খাবার ব্যবস্থা করা হয়ে থাকে যার মধ্যে কচুর শাক এবং মান কচুর ডাল অন্যতম।অবশ্য এই উৎসবের সূচনা বাংলাদেশের ঢাকা জেলা থেকে। এরাজ্যে কোচবিহার এবং নদীয়া চাকদহ লক্ষ্য করা যায় । আয়োজকরা জানিয়েছেন,’ সুধারাম গোস্বামী নামে এক বৈষ্ণব ভক্ত বৃন্দাবন থেকে কৃষ্ণের স্বপ্নাদেশ প্রাপ্ত হয়ে ঢাকা জেলার বরাবর শ্রীধামে এই উৎসবের সূচনাা করেছিলেন। দেশভাগের পর সেখান থেকে কিছু মানুষ এই উমাপুর গ্রামে চলে আসেন।
এরপর বাংলা ১৩৬৫ সালে এখানকার বাসিন্দা শশীমোহন বর্ধন ও কুঞ্জমোহন দাস এই গ্রামে এই উৎসবের সূচনা করেন। সেই থেকে এখনও চলে আসছে।’ একাধিক অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে উৎসবের ফরিসমাপ্তি ঘটে আজ। আজ শেষ দিন কুঞ্জ ভঙ্গে স্থানীয় বিধায়ক পার্থসারথি চ্যাটার্জী উপস্থিত হয়েছিলেন তাদের অনুপ্রেরণা যোগাতে, পঞ্জিকাতে এই বিশেষ অনুষ্ঠানের সূচী লিপিবদ্ধকরণ এবং কেন্দ্রীয় সরকারের তথ্য সংস্কৃতি দপ্তরের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য অনুরোধ জানান বিধায়ক কথা দেন সাধ্যমত চেষ্টা করবেন।