কবি দোকান খুললো
তমাল সাহা
কবি এই শারদোৎসবে নেমে পড়েছে ব্যবসায়। সে শূন্যশ্রী প্রগতিশীল ক্লাবের প্যান্ডেলের সামনে দোকান খুলেছে। এই ক্লাবের প্যান্ডেল ও প্রতিমা দেখতে প্রতি বছরই খুব ভিড় হয়।
পঞ্চমী থেকে তার দোকান খোলা থাকবে। উদ্বোধন করবেন স্থানীয় কাউন্সিলর বিশ্বকর্মা কর্মকার। অনেক কষ্টে তাকে রাজি করিয়েছেন কবি।
সে তার দোকানের সামনে একটি তালিকা টাঙিয়ে দিয়েছে।
পঞ্চমী থেকে তার দোকানে চা চপ ঝালমুড়ি ঘুগনি পাওয়া যাবে।
সে বানাবে আলু বেগুনি ভেজিটেবল টমেটো ক্যাপসিকাম ডিম ও লটে মাছের চপ।
সঙ্গে থাকছে স্পেশাল মশলাদার ফুলুরি, পাঁচ মিশালি চপ ও পিঁয়াজি এবং অবশ্যই সহযোগী হিসাবে থাকছে তার স্ত্রী।
কবি জানিয়েছে,
মহিলা বিক্রেতা থাকলে বিক্রিবাট্টা বেশি হয়।
আরো জানিয়েছে,
ঘুগনি ও চপ সবসময়ই গরম পাওয়া যাবে।
জায়গাটি অবশ্য পিডব্লিউডি-র।
পি ডব্লিউ ডি থেকে বা অন্য কোনো বিশেষ করে রাজনৈতিক বাধা না এলে কবি আমৃত্যু এই দোকান চালিয়ে যাবে।
কবি মনে করছে কলমের বদলে এই দোকানের মাধ্যমে সে অনেক বেশি এবং সক্রিয় জনসংযোগ করতে পারবে।
ফলে সে কলম বন্ধ রাখছে।
এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে কবি জানিয়েছে, আসলে লিখে কোনো লাভ হয় না এবং মানুষের জন্য যা লেখা দরকার তা ইতিমধ্যে লেখা হয়ে গিয়েছে, মহানেরা লিখে গিয়েছেন অনেক আগেই। সে তার ভুল এতদিনে শেষ বেলায় এসে বুঝতে পেরেছে। নতুন কিছু লেখার নেই একই জিনিস ইনিয়ে বিনিয়ে বানানো নচেৎ নিজের পাণ্ডিত্যের কারিগরি দেখানোর জন্য শুধুমুধু কলম চালানো।
কবি আরো বলে, আমার পড়াশুনো খুবই কম।
পরিশ্রমের বিকল্প নেই এই বাক্যটি আমি শুনেছি কিন্তু পড়াশোনার বিকল্প নেই এমন কথা কখনো পড়িনি। আমি সত্তর দশকে দেয়ালে লেখা দেখেছি এই বুর্জোয়া ব্যবস্থায় যে যত পড়ে সে তত মূর্খ হয়। একটা সিনেমায় সত্যজিৎ রায় রাজশাসিত পাঠশালায় এমনই একটা দৃশ্য দেখিয়েছিলেন কিন্তু ছবিটির নাম আমার মনে পড়ছে না, বয়স হয়ে গিয়েছে তো! তবে আমার এই স্লোগানটা দিব্যি মনে আছে, দড়ি ধরে মারো টান / রাজা হবে খান খান।