কবি যখন ভিক্ষুক
তমাল সাহা
কলম ছিল, অনুভব ছিল, বোধও ছিল জানি
তেত্রিশ বছর কাটলো কেউ কথা রাখেনি।
তারপর কথা রেখেছিল কি, নাকি রাখা যায়–
সে কথা কাউকে বলো নি।
একা এবং কয়েকজন হলে একা আবার হয় নাকি?
একই মানুষ ক্রমাগত বহু হয়ে যায়
নীললোহিত, সনাতন পাঠক অথবা নীল উপাধ্যায়!
আমি কি রকম ভাবে বেঁচে আছি, ভালোই তো বেঁচে ছিলে
দিকশূন্যপুর– শব্দটি বাজারে চালু করে গেলে।
নীরা তো নারী থেকেই এসেছিল
সব প্রেমিক পুরুষেরই একটি নীরা থাকে
তারা সকলেই বুকে কস্তুরি লুকিয়ে রাখে।
এসবই জানা কথা,
তবে এ কথাটি খুবই ভালো—
দুঃখ দিতে চাইনা কাউকে এমন ভাবে হাঁটি, মাটিও যেন কষ্ট না পায়।
আমি বলি, নিজে কষ্ট না পেলে কি কবিতা লেখা যায়?
নীরার অসুখ হলে কলকাতার সবাই বড় দুঃখে থাকে—
তুমি খুব সংকীর্ণ, শুধু কলকাতা কেন নীরার কষ্টে আমরা সকলেই বেদনা বিধুর হয়ে পড়ি
নীরার ঐশ্বর্য, স্পর্শ-ঘ্রাণ আমাদের যে বড় দরকারি!
রাগী লোকেরা কবিতা লিখতে পারে না
তারা বড্ড চ্যাঁচায়।
চ্যাঁচাবেই তো, তারা তো বেশি অনুভবী প্রত্যক্ষদর্শী মানুষের দুঃখ দেখতে পায়।
কলমের আঁচড়ে দুঃখীকে সুখী, সুখীকে দুঃখী বানিয়ে দিতে পারো তুমি।
এতে কি আসলে সুশ্রী হয় জন্মভূমি?
খুব সহজে বলেছিলে, সব মরে, স্বপ্ন মরে না।
স্বপ্ন মরে গেলে কবিতা লেখা যায় না।
দেবদারু বীথির বৃথা জন্ম তবে
পাখিরা নীড় ছেড়ে কিভাবে উড়ে যাবে পুবের কলরবে!
জাগো, জেগে উঠো বাণী, আজ অন্ধকার…
বারবার প্রশ্ন করো কেন এসেছ তুমি, তুমি কার?
পৃথিবীর হেমবর্ণ জাগরণ হোক সুন্দর সোহাগে
মানুষের কাছে, মানুষীর কাছে
কবির ভিখারী হতে বড় ভালো লাগে!