Editor’s কলমে …. “করোনার abcd…” Part-1 লিখছেন : বিনয় ভরদ্বাজ
অবতক খবর , 29শে মার্চ 20 :: করোনাভাইরাস আজ পৃথিবীর সবচেয়ে বড় আতঙ্ক। সবচেয়ে বড় ব্যাধি ।এই ভাইরাসে আতঙ্কে ভয়ে কাঁপছে সারা বিশ্ব। বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী দেশগুলি ধরাশায়ী হয়েছে। আমেরিকা ব্রিটেন ফ্রান্স ইতালি চীনসহ সমস্ত শক্তিশালী দেশ এই মারণ রোগের সামনে মাথা নত করে ফেলেছে। প্রত্যেকে বাঁচার জন্য লড়াই চালাচ্ছেন। সারা বিশ্বের প্রায় 200 টি দেশকে এই ভাইরাস নিজের কবলে নিয়ে ফেলেছে।
তাই প্রশ্ন উঠছে কার দৌলতে ছড়ালো এই ভাইরাস? কে সেই প্রথম ব্যক্তি, যার জন্য সারা বিশ্ব কেঁপে উঠেছে? জানতে ইচ্ছে করছে না? হ্যাঁ এই ব্যক্তির ইতিহাস জানার তাগিদ আশাকরি সকলের মধ্যে রয়েছে। আজ বিশ্বের 6 লক্ষ 65 হাজার মানুষ যার জন্য মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন, সেই ব্যক্তিটির নাম প্রথম ব্যক্তিরকে জানার আগ্রহ আমরাও দূরে সরিয়ে রাখতে পারিনি।
আপনাদের মনের সমস্ত প্রশ্ন কে দূর করতে আমি নিজেই নেট দুনিয়া কে ঘন্টার পর ঘন্টা সার্চ করেছি। ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশন অর্থাৎ W.H.O. এবং করোনা উইকিপিডিয়া সহ বেশ কিছু তথ্য সংগ্রহ করে আপনাদের সমস্ত জিজ্ঞাসা মেটানোর জন্যই এই লেখা দিলাম :-
ইতিমধ্যে সারা বিশ্বে এই জেনে গেছে যে এই রোগ চীন থেকে সারা পৃথিবীতে ছড়িয়েছে । তবে চীন দেশের উহানের এই মানবটিকে চিহ্নিত করতে পেরেছে স্বয়ং চীনা সরকার।
আসলে চীনের উহানের এক মহিলা প্রথম করোনা আক্রান্ত হন বলে জানা গেছে। তিনি উহানের হোলসেল মাছ বাজারের একজন মাছ বিক্রেতা ।তার শরীর এই প্রথম করোনাভাইরাস এর উপসর্গ দেখা দেয়। চীন দেশের সাউথ মর্নিং চায়না পোস্ট পত্রিকার অনুযায়ী যার মাধ্যমে সারা বিশ্বে করনা আতঙ্ক ছড়িয়েছে, সেই মানুষ যার জন্য সারা বিশ্বে কাঁপছে । সেই 55 বছরের এক মাছ বিক্রেতা মহিলা গত বছর নভেম্বর 17 তারিখে করোনা ভাইরাস আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসার জন্য ভর্তি হন। যদিও তিনি এই আতঙ্ক কাটিয়ে সুস্থ উঠেছেন। তিনি জানুয়ারি মাসেই এই রোগ থেকে মুক্ত হয়ে আবার স্বাভাবিক জীবনে ফিরে এসেছেন।
এই ভাইরাসে আক্রান্ত মহিলা চীনের এক বিখ্যাত নিউজ ‘ দি মিরারকে জানিয়েছেন যে তার এই রোগটি পাবলিক টয়লেট থেকে লেগেছ। তার সর্দির সাথে সাথে শ্বাসকষ্ট দেখা দেয়। তবে তার মতে এই সমস্যা আরও অনেকেরই দেখা দিয়েছে। রোগে আক্রান্ত হয়ে তিনি চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ভর্তি হন । বাজারে যাওয়া বন্ধ করে দেন কিন্তু ততক্ষণে আরো 40 জন মানুষের শরীরে এই রোগ ছড়িয়ে গেছে।
উল্লেখ্য 31 শে ডিসেম্বর চীনের স্বাস্থ্য মন্ত্রকের পক্ষ থেকে WHO. কে জানানো হয় যে তারা তাদের দেশে উহান শহরে কিছু নতুন রোগের উপসর্গ নিয়ে রুগী দেখতে পাচ্ছেন। তারা WHO কে জানান যে তাদের দেশে হুবাইয়ের উহানের হোলসেল মাছ বাজারে সর্দি কাশি জ্বর ও শ্বাসকষ্ট রোগির পরপর চিহ্নিত করেছেন। ততক্ষণে উহানের এক চিকিৎসক রোগ নিয়ে গবেষণা শুরু করে দিয়েছেন।
এই ঘটনার পর পয়লা জানুয়ারি এই মাছ বাজার কে বন্ধ করে দেয় চীন সরকার কিন্তু ততক্ষণে হলসেল মাছ বাজার থেকে এই ছোঁয়াচে রোগের সংক্রমণ বহু জায়গায় ছড়িয়ে ফেলেছে।
শুরু হয়ে যায় চিনা স্বাস্থ্য দপ্তরের তৎপরতা। তারা অনেক কাটাছেঁড়া করার পর 27 ডিসেম্বরে জানান যে এটি একটা নতুন ভাইরাস। তারা আরো জানান যে এটি প্রথমে ভাবা হয়েছিল যে পুরনো SARS অর্থাৎ সিভিযার একিউট রেস্পিরাটরি সিনড্রোম ভাইরাস । কারণ এই SARS ভাইরাসের কবলে পড়ে 2002-2003 এ চিনে 770 জন মানুষ আক্রান্ত হয়ে মারা গেছিলেন । তাই প্রথমে এটাকে SARS ধরে নেওয়া হয়।
চিনে আসলে এই SARS ভাইরাস ধরা পড়েছিল প্রথম বাদুরের মধ্যে 2002 সালে। পড়ে এই বাদুড় থেকে সম্ভবত পেঙ্গুইনের ও অন্য জীবের মধ্যে দিয়ে ছড়ায় মানুষের মধ্যে। তাই এটিকে প্রথমে SARS ধরে নেওয়া হয় কিন্তু পরের দিকে গবেষণায় জানা যায় যে এই SARS ভাইরাস থেকে এটিতে একটু নতুনত্ব আছে।
কি ভাবে এলো nCovid-19 নাম
যেহেতু এই ভাইরাসটি 2019এ ধরা পড়ে ও এটি Covid ফ্যামিলির ভাইরাস , তাছাড়া নতুন ভাইরাস তাই এই সমস্ত তথ্য যুক্ত করে তার নাম “2019 n Cov” করা হয়। বর্তমানে আমরা নোবেল করোনাভাইরাস-19 নামে পরিচিত হয়েছি।
প্রথম কিভাবে ও কে জানালেন
গত 27শে ডিসেম্বর বুবাইয়ের প্রভিন্সিয়াল হাসপাতালে শ্বাস রোগজনিত বিভাগের এচ ও ডি ডঃ ঝাঁইয়াং জিক্সন তার সরকারের স্বাস্থ্য দপ্তর কে জানান যে শহরে নতুন ভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে আর রোগীর সংখ্যা 27 ডিসেম্বর পর্যন্ত 180 এর কাছাকাছি পৌঁছে গেছে। যদিও মনে করা হচ্ছে যে এই ডাক্তার তখনও জানতেন না যে এই ভাইরাস শুধু তার শহরেই নয় বরং সমস্ত সীমা ছাড়িয়ে অনেক দূর পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়েছে।
সাউথ মর্নিং চায়না পোস্ট পত্রিকার অনুসারে 9 জানুয়ারি প্রথম এই রোগ আক্রান্তের মৃত্যু হয়।ওহানে এটাই করোনা ভাইরাসে প্রথম মৃত্যু। মৃতাকের বয়স 61 বছর। তিনি উহানের মাছ বাজার থেকে জিনিসপত্র খরিদ করেছিলেন ।চিকিৎসায় তার শরীর ঠিক ভাবে রেসপন্স করেনি ও পরে 9 জানুয়ারি তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। এটাই সম্ভবত বিশ্বের সবচেয়ে প্রথম করোনা ভাইরাস আক্রান্ত মৃত্যু।
9 জানুয়ারির পর থেকে এই মার্কেটের সঙ্গে যুক্ত একে একে আক্রান্তদের তথ্য উঠে আসতে শুরু করে দেয় । 13ই জানুয়ারি প্রথম চীন দেশের বাইরে থাইল্যান্ড এক মহিলার শরীরে Covid-19 আক্রান্তের খবর আসে। এই মহিলা উহান ফিস মার্কেট থেকে কেনাকাটা করে থাইল্যান্ড গেছিলেন।
তাছাড়াও 16 ই জানুয়ারি জাপান স্বাস্থ্যমন্ত্রক জানিয়ে দেয় যে তার দেশেও Covid-19 রুগী ধরা পড়েছে। জাপানে যাওয়ার আগে সেও উহান শহর থেকে উড়ে জাপান গেছিল।
17 ই জানুয়ারি দ্বিতীয় মৃত্যুর খবর উহান থেকে আসে । তারপরে আমেরিকা তাদের সমস্ত উহান শহর থেকে আসা ফ্লাইট গুলো ও প্যাসেঞ্জারদের স্ক্রিনিং শুরু করে দেয়।
আর এভাবেই সারা বিশ্বের প্রায় 200 টি দেশকে নোবেল করোনা ভাইরাস তার কবলে একে একে করে নিয়ে নেয়। বর্তমানে সারা বিশ্ব জুড়ে 6 লক্ষ 65 হাজারের উপরে মানুষ এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। প্রায় 31 হাজার মানুষ এই ভাইরাস আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। প্রতিমুহূর্তে এই ভাইরাস সংক্রামণের সংখ্যা লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে।
গত 11 ই মার্চ ওয়ার্ল্ড স্বাস্থ্য সংস্থা(WHO) এই নভেল করোনাভাইরাস কে মহামারী হিসেবে ঘোষণা করেছে । বিশ্বের সবকটি সবচেয়ে শক্তিশালী দেশ জি-টোয়েন্টি বৈঠকে এই ভাইরাস মোকাবেলার জন্য 5 ট্রিলিয়ন ডলার অর্থ নিয়ে ফান্ড তৈরি করয়েছেন। কিন্তু এখনো পর্যন্ত এই ভাইরাসের কোনো ঔষধ পাওয়া যায় নি।
ভারতে করোনার অবস্থান কি? কি ভাবে এলো ও কোথায় কত মৃত্যু? জনাব …..তবে আজ নয় আগামী কাল সোমবার চোখ রাখুন : Editor’s কলমে …করোনার abcd… Part-2
নোট: আপনার এই লেখা কেমন লেগেছে বা আপনার কোন মতামত বা পরামর্শ থাকে তাহলে অবশ্যই জানাবেন whatsapp no. 9088620100 এ। ধন্যবাদ।