রাজীব মুখার্জী :: অবতক খবর :: হাওড়া ::    পূর্ব রেলের লিলুয়া ওয়ার্কশপএ করোনা সংক্রমণ বাড়ছে। সূত্রের খবর রেল দপ্তরের নির্দেশে যেখানে অন্যান্য বিভাগে কর্মী হাজিরা ৫০% করা হলেও লিলুয়া ওয়ার্কশপ এ ১০০% হাজিরা আছে। এর ফলে এখানকার প্রায় সাড়ে সাত হাজার কর্মীকে প্রত্যেকদিন কাজে যোগ দিতে হচ্ছে। বাস এবং লোকাল ট্রেন না চলায় ওইসব কর্মীরা রেল কর্মীদের জন্য স্পেশাল ট্রেন এ চেপে কাজে যোগ দিচ্ছেন। এ ব্যাপারে কর্মীরা সরাসরি ক্যামেরার সামনে মুখ না খুললেও জানা গেছে এখনো পর্যন্ত ওই ওয়ার্কশপে কমপক্ষে ৩১ জন কর্মীর করোনা পজিটিভ। তাদের মধ্যে বেশির ভাগই রেলওয়ে অর্থোপেডিক হাসপাতাল এ চিকিৎসাধীন। অনেকের বাড়িতে থেকেও চিকিৎসা চলছে।

রেলওয়ে মেন্স ইউনিয়ন এর অভিযোগ একসঙ্গে এত লোক কাজ করার ফলে ওয়ার্কশপে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা যাচ্ছে না। এর ফলে কর্মীরা করোনা সংক্রমণের শিকার হচ্ছেন। এর পাশাপাশি তাদের আরও অভিযোগ স্পেশাল ট্রেন ঠাসাঠাসি অবস্থায় বাড়ি থেকে কাজ করতে আসার কারণে তাদের মধ্যে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়তে পারে। এরমধ্যে ওই ইউনিয়নের পক্ষ থেকে ৫০% হাজিরার দাবি নিয়ে কর্মীরা সই সংগ্রহ করে তারা পূর্ব রেলের জেনারেল ম্যানেজার এর কাছে জমা দিয়েছেন। যদিও কাজের কাজ কিছু হয়নি। এই নিয়ে কর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ বাড়ছে। কর্মীদের দাবি একদিন অন্তর ৫০% হাজিরা করা হোক।

পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক নিখিল চক্রবর্তী জানিয়েছেন যেহেতু রাজ্য সরকারের নির্দেশ অনুযায়ী ইন্ডাস্ট্রিতে ১০০% কর্মী হাজিরা থাকতে পারে তাই লিলুয়া ওয়ার্কশপএ ইন্ডাস্ট্রির নিয়ম অনুযায়ী ১০০% হাজিরা থাকতে পারে। যারা করোনা আক্রান্ত হচ্ছে তাদের রেলের হাসপাতালে চিকিৎসা হচ্ছে বলে তিনি জানান। রেলওয়ে মেন্স ইউনিয়নের সেক্রেটারি জানিয়েছেন প্রথমদিকে রাজ্য সরকার ১০০% হাজিরার নির্দেশ দিলেও পরে তা ৫০% বা ৩০% করেছে। ১০০% হাজিরার নির্দেশ তাদের জানা নেই।

উল্লেখ্য, সমাজের অন্যান্য স্থানের মতো রেল কর্মীদের মধ্যেও ক্রমশ বেড়েই চলেছে সংক্রমণ। সূত্রের খবর, জামালপুর ওয়ার্কশপে ইতিমধ্যেই সংক্রমিত হয়েছেন কমপক্ষে ১৮ জন। লিলুয়া ওয়ার্কশপে কমপক্ষে ৩০ জন। কাঁচরাপাড়া ওয়ার্কশপ এ সংক্রমিত হয়েছেন কমপক্ষে ১৮ জন। এর পাশাপাশি শিয়ালদহ ডিভিশনে কমপক্ষে ১৬ জনের শরীরে মিলেছে ভাইরাসের উপস্থিতি। যার মধ্যে শিয়ালদহ ডিআরএম বিল্ডিং এর প্রায় চার জন। পাশাপাশি মালদা ডিভিশনের এখনো পর্যন্ত ৪৮ জন সংক্রমিত হয়েছেন প্রায়। ইস্টার্ন রেলওয়ে হেডকোয়ার্টার কয়লাঘাট ও ফেয়ারলিতে সংক্রমিত হয়েছেন প্রায় ৩৬ জনের কাছাকাছি। রেলের হেডকোয়ার্টার ডিভিশনে সংক্রমিত প্রায় ১২ জন। আসানসোল ডিভিশনে পাঁচজন পজেটিভ প্রায়। আর সর্বশেষ হাওড়া ডিভিশনে কমপক্ষে সংক্রমিত ৩৮ জন। ফলে খুব স্বাভাবিকভাবেই বোঝা যাচ্ছে যে ধীরে ধীরে সংক্রমণ ছড়াচ্ছে রেল কর্মীদের মধ্যেও। পাশাপাশি লিলুয়া ওয়ার্কশপের ইনচার্জ দাবি করেন যেহেতু এটা রেলের ইন্ডাস্ট্রিয়াল প্রোডাকশন ইউনিট। তাই এখানে কেন্দ্রীয় সরকারের নির্দেশিকা প্রয়োগ হয় না। বরং এটা রাজ্য সরকারের ১৯৪৮ সালের ফ্যাক্টরি আইন অনুযায়ী চলে। তাই এখানে ১০০% কর্মী নিয়ে কাজ করা হচ্ছে।