২৬৫ বছর আগে পশ্চিমবঙ্গের নদীয়ায় ঘটে গিয়েছিল সেই কলঙ্কজনক ইতিহাস। ২৩ জুন,১৭৫৭। রে বাঙালি!তোর কি মনে পড়ে সেই ঐতিহাসিক ঘটনা,পলাশীর প্রান্তর-আমবাগানের কথা! স্বাধীনতার সূর্য নেমে যায় ভাগীরথী তীরে। আমরা পড়ে রইলাম দুশো বছর পরাধীনতার অন্ধকারে।
কলঙ্কজনক ইতিহাস
তমাল সাহা
তোরা এতো তাড়াতাড়ি ভুলে গেলি
পলাশী যুদ্ধের ইতিহাস?
বাঙালির জীবনে যেদিন নেমে এলো চরম সর্বনাশ!
সেই যুদ্ধ ছিল বিশ্বাসঘাতকতার কাহিনী।
বাঙালি হল পরাধীন,রক্ত ঢেলে দিল প্রাণ
মীরমদন মোহনলালের বাহিনী।
কোথায় তখন ধর্মীয় বিভাজন হিন্দু মুসলমান!
সেদিন থেকে
তিনটি শব্দ ঢুকে গেল বাংলা অভিধানে।
ষড়যন্ত্র, দালালি ও ঘুষ—
শিশুদের মুখেও এখন জলভাত
এই শব্দ তিনটির মানে।
ক্লাইভ ও মীরজাফরের চক্রান্তের কথা
কে না জানে?
ইংরেজদের কাছ থেকে
হাত পেতে নিয়েছিল মসনদের উৎকোচ
বাঙালি হতমান, মাথানিচু লজ্জায় অপমানে।
আকাশে বাতাসে ভাসছিল
সিরাজৌদ্দল্লার আর্তনাদ হাহুতাশ।
পলাশীর প্রান্তর আজও কেঁদে যায়
বাতাস ফেলে যায় দীর্ঘশ্বাস!
রাত্রির ঘন অন্ধকারে গোপনে ষড়যন্ত্র চলে।
বিশ্বাসঘাতকেরা এতো হিংস্র হতে পারে!
দেশ বিকিয়ে দেবার নিষ্ঠুরতম চাল চালে।
মীরজাফরের গোপন বার্তা পৌঁছে যায়
ক্লাইভের ঘরে।
যুদ্ধবিরতি চুক্তি ভঙ্গ হয়—
রবার্ট ক্লাইভ অপ্রস্তুত নবাব বাহিনীকে আক্রমণ করে।
যুদ্ধের নামে মঞ্চের নাটকে
ধ্বস্ত বিধ্বস্ত পলাশীর ময়দান।
লোভী প্রতারক নেমকহারামদের সে কী উল্লাস—
গেয়ে উঠল বশ্যতার জয়গান।
বৃষ্টিভেজা দিন, চোখে অশ্রু:ঝরে…
বাংলার স্বাধীন সূর্য ডুবে গেল অন্ধকারে।
বিশ্বাসঘাতকতা ও ঘুষের ইতিহাস
দুশো বছরের পরাধীনতার সূচনা হলো
পলাশীর প্রান্তরে।
সে কী জাতির লজ্জা!
আজও কুরে কুরে খায় অন্তরে।