অবতক খবর,২১মে: কাঁচরাপাড়া শহর জুড়ে কাল রাতে আমফানের দাপট দেখা গেছে। কাঁচরাপাড়া শহরের কেন্দ্রীয় অঞ্চল থানার মোড় থেকে গান্ধী মোড় পর্যন্ত রাস্তার পাশে যে গাছগুলো ছিল, সেগুলোর প্রায় অনেক গাছই ভেঙে পড়েছে। গান্ধী মোড় থেকে বাগমোড় পর্যন্ত বিস্তীর্ণ অঞ্চলে একটি সুপ্রাচীন বিশাল আকারের অশ্বত্থ গাছ শেকড় সমেত উপড়ে পড়েছে। পার্শ্ববর্তী দোকানের শেড ভেঙেছে। অন্যদিকে রাস্তার ধারে একটি কদম গাছ ভেঙে পড়ে এক দোকানের চাল ভেঙে চুরমার করে দিয়েছে। বাগমোড়ের একটি মন্দির ভেঙে গেছে। সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে কাঁচরাপাড়া সিটি বাজার অঞ্চলের ২২ নং ওয়ার্ড এটি চেয়ারম্যান তথা বর্তমান পৌর প্রশাসক সুদামা রায়ের ওয়ার্ড। এই ওয়ার্ডের সিটি বাজার সংলগ্ন এলাকায় রীতিমতো ধ্বংসাবশেষের চিহ্ন। প্রচুর গাছ উপড়ে পড়েছে,প্রচুর বাড়ির ক্ষতি হয়েছে। এক ৮৫ নং বাস ড্রাইভার সঞ্জয় বাবুর বাড়ি পুরো তছনছ হয়ে গিয়েছে গাছ পড়ে। নেতাজি বিদ্যামন্দিরের পাশে সিটি বাজার অঞ্চলের অনেক বাড়ির চালা বিপর্যস্ত হয়েছে। সবচেয়ে লক্ষ করা গেছে, বেশিরভাগ জায়গায়ই গাছ ভেঙে পড়ার চেয়ে সমূলে উৎপাটিত হয়েছে। এর থেকে ঝড়ের তীব্রতা অনুমান করা যাচ্ছে। অন্যদিকে ১১ নং ওয়ার্ডের নিরঞ্জন সেন পল্লীর খালধারের বিশাল অংশ বিপর্যস্ত হয়েছে। সেখানে প্রচুর গাছপালা ভেঙে পড়েছে। একটি আর্থিকভাবে পিছিয়ে পড়া অত্যন্ত দুঃস্থ মানুষের সামান্য একটা দোকান সম্পূর্ণ ভেঙে পড়েছে। বহু মানুষ এই বিপর্যয়কর পরিস্থিতিতে চাইছেন প্রশাসনের সাহায্য, বিশেষ করে আর্থিক সহযোগিতা। তাদের কাতর আবেদনে এটিই বোঝা যাচ্ছে। সবচেয়ে আশ্চর্য ঘটনা দেখা গেছে কালীনগর রোডে পৌরকর্মী,সাফাই কর্মী এরা যে অঞ্চলে বসবাস করেন সেই অঞ্চলে সেই সাফাই কর্মীদের বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হলেও,গাছ ভেঙে পড়লেও সেখানকার শীতলা মন্দিরটি অক্ষত রয়েছে। অথচ খাল ধার অঞ্চলে যে সর্ব ঈশ্বর অসংখ্য দেবদেবী নিয়ে যে মন্দিরটি সেই মন্দিরটি বিপর্যস্ত হয়েছে। নিরঞ্জন সেন পল্লীতে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ঘটনা যে, সেখানে ৬টি লাইটপোষ্ট ভেঙে পড়েছে। সিটি বাজার অঞ্চলেও দুটি লাইটপোষ্ট ভেঙে পড়েছে। এই লাইটপোষ্টগুলো ছিল কংক্রিটের পিলার। সিটি বাজার অঞ্চলে অনেক পরিবার আকস্মিকভাবে মৃত্যুর হাত থেকে বেঁচেছেন। প্রচন্ড ঝড় ওঠায় গাছের বিপর্যয়কর পরিস্থিতি দেখে পরিবার বাইরে চলে আসেন তাদের শিশুদের নিয়ে। দেখা যায় তাদের বেরিয়ে আসার পরই সেই ঘরের উপর গাছ ভেঙে পড়েছে। এই বিপর্যয়কর পরিস্থিতিতে একটি ভালো বার্তা যে, বিপর্যস্ত অসহায় মানুষদের পাশে তাদের প্রতিবেশীরা ছুটে এসে সহযোগিতা করেছেন এবং কেউ কেউ নিজের বাড়িতেও তাদের আশ্রয় দিয়েছেন।