অবতক খবর,১ ডিসেম্বর: গতকাল পায়ে পায়ে উড়িয়ে ধুলো কাঁচরাপাড়া সার্কাস ময়দান থেকে বাগমোড় পর্যন্ত ছিল বিজেপির মহামিছিল। এই মিছিলের উপরিভাগে ছিলেন বিজেপির বিধায়ক শুভ্রাংশু রায়,জেলা সভাপতি উমা শঙ্কর সিং, মহিলা নেত্রী অপর্ণা বল,রাজ্য নেত্রী ফাল্গুনী পাত্র,জেলা যুব সভাপতি রাকেশ বাবু এবং রাজ্য নেতা প্রিয়াঙ্গু পান্ডে। এছাড়া বিজেপির সমস্ত নেতা কর্মীরাও এই মিছিলে পায়ে পা মেলান।
“আর নয় বেকারত্ব
আর নয় মহিলাদের উপর অত্যাচার
আর নয় এই মমতার সরকার”
এই স্লোগান দিয়ে এবং জয় শ্রীরাম ও ভারত মাতা কি জয় ধ্বনি দিয়ে মিছিল শুরু হয় কাঁচরাপাড়া সার্কাস ময়দান থেকে।
মিছিল শেষে বীজপুর বিধায়ক শুভ্রাংশু রায় জানান,”বেকারত্ব বৃদ্ধি পেয়েছে, মহিলাদের উপর অত্যাচার বৃদ্ধি পেয়েছে, বিভিন্ন অসামাজিক কার্যকলাপ বৃদ্ধি পেয়েছে। কিন্তু এই কাঁচরাপাড়া অঞ্চলে সবচেয়ে বেশি যেটা বৃদ্ধি পেয়েছে সেটা হল মদের ব্যবসা। বিজেপি ক্ষমতায় এলে আমি সর্ব প্রথমে এই মদের ব্যবসা বন্ধ করব।” অন্যদিকে মিছিল শেষে ঠিক একই সুরে গাইলেন জেলা সভাপতি উমাশঙ্কর সিং। তিনি বলেন,”এই অঞ্চলে মদ,জুয়া,সাট্টা রমরমিয়ে চলছে। এটা গোটা ব্যারাকপুর লোকসভা অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে এবং রমরমিয়ে চলছে। এই বেআইনী ব্যবসার মাধ্যমে তৃণমূল তোলাবাজি করছে এবং নিজেদের সম্পত্তি দিনকে দিন বাড়াচ্ছে।”
ফাল্গুনী পাত্র বলেন,”মহিলাদের উপর যে অত্যাচার চলছে, তার বিরুদ্ধে আমরা রুখে দাঁড়াবো।” তিনি সরাসরি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে কটাক্ষ করে বলেন,”অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরিচয় রয়েছে একমাত্র মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কারণে। তাঁর নিজের কোন পরিচয় নেই। তাই তাকে ভাইপো না বলে কি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলব! কারণ তাকে সবাই মমতা ব্যানার্জীর ভাইপো নামেই চেনে।”
তবে এই মিছিলের একটি উল্লেখযোগ্য দিক হল,এই মিছিলে হাঁটতে দেখা গেল না পুরনো বিজেপি কর্মীদের। যারা দোলাচলে রয়েছে তাদেরকেই দেখা যায়নি এই মিছিলে।
অনেক প্রাক্তন নেতাই এই মিছিলে সামনের সারিতে আসার চেষ্টা করেছিলেন,কিন্তু শুভ্রাংশুর অনুগামীরা তাদের সামনে থেকে সরিয়ে শুভ্রাংশু রায়কে এগিয়ে যাওয়ার রাস্তা করে দেন।
যারা পুরনো কর্মী অর্থাৎ যারা এখন কোন পদে নেই বা দোলাচলে রয়েছে, তাদেরকে এই মিছিলের একদম শেষে দেখা গেছে। অর্থাৎ এই মিছিলে পাত্তা পাননি পুরনো বিজেপি নেতা কর্মীরা। এই মিছিলে নেতাদের অবস্থান দেখে বোঝা গেছে যে তারা একেবারেই গুরুত্বহীন হয়ে পড়েছেন দলে।
এই বিষয়ে তৃণমূল নেতা সুজিত দাস জানান,”এই মিছিলে স্থানীয়দের সংখ্যা খুব কম ছিল,বহিরাগতরাই মিছিলে ভিড় করেছে। বীজপুরে সত্যিই যদি বিজেপি নামক দলটি থেকে থাকে তবে স্থানীয় নিজেদের লোকজন নিয়ে মিছিল করে দেখাক। তাহলে বুঝবো বীজপুরের জনগণ বিজেপির সঙ্গে আছে এবং তাদের সহযোগিতা করছে। সুতরাং বোঝাই যাচ্ছে এই মিছিল বীজপুরেরর জন্য নয় এই মিছিল রাজ্যের মিছিল। কারণ জেলা নেতৃত্ব বা রাজ্য নেতৃত্ব যারাই এখানে এসেছেন তারাই বাইরে থেকে ম্যাটাডোর ভর্তি করে লোক নিয়ে এসেছেন। এই মিছিল কাঁচরাপাড়ার মিছিল বা শুভ্রাংশু রায়ের মিছিল বলা চলে না। এই মিছিল ব্যারাকপুর সাংগঠনিক জেলার মিছিল।