অবতক খবর,৩ আগস্টঃ কাঁচরাপাড়া শহরে চলছে রমরমিয়ে কোয়ার্টার মাফিয়াদের দৌরাত্ম্য। এই শহর রেল অধ্যুষিত। এখানে রয়েছে অসংখ্য রেল কোয়ার্টার। এখানে রয়েছে অসংখ্য ভ্যাকেন্ট রেল কোয়ার্টার। কিন্তু এই কোয়ার্টার মাফিয়ারা এই ভ্যাকেন্ট কোয়ার্টার গুলি থেকে প্রচুর আয় করছে। কিভাবে? পড়ুন এই প্রতিবেদন।
প্রথমত, এই কোয়ার্টার বিক্রি হচ্ছে ৩০-৪০ হাজার টাকায়। যারা এই কোয়ার্টার নিচ্ছে তাদের বলা হচ্ছে যে এককালীন এই টাকা দিতে হবে।
দ্বিতীয়ত, তাদেরকে বলা হচ্ছে আপনাদের ইলেকট্রিক এবং জলের জন্য প্রতিমাসে ৩০০-৪০০ টাকা দিতে হবে।
তৃতীয়ত, যারা এই কোয়ার্টার নিচ্ছে তাদের কাছ থেকে বছরে তিন থেকে চার হাজার টাকা চাঁদা নেওয়া হচ্ছে।
চতুর্থতঃ, যদি সিঙ্গেল কোয়ার্টার হয় তবে তো ঠিক আছে। কিন্তু যদি ডবল কোয়ার্টার হয় তবে ৩-৪ মাস পর থেকেই শুরু হয়ে যায় অত্যাচার। তাদেরকে বলা হয় এই কোয়ার্টারে আরো একটি পরিবার থাকবে। এতে নাকি রাজনৈতিক চাপ আসে।
পঞ্চমত, যারা এই কোয়ার্টার নিচ্ছে তাদের ভোটার কার্ড অন্য ওয়ার্ডের এবং তারা থাকছেন অন্য ওয়ার্ডে।
এই তো গেল কোয়ার্টার নেওয়ার প্রক্রিয়া। এবার পড়ুন তার পরবর্তীতে কি হচ্ছে? কিভাবে এই কোয়ার্টার গুলিতে বসবাসকারীদের উপর অত্যাচার শুরু হচ্ছে?
ওই কোয়ার্টার গুলিতে যারা বাস করছেন, তাদেরকে প্রথমে বলা হয়, আপনারা ঠিকঠাক ভাবে থাকছেন না, বাইরে থেকে লোক আসছে এই অঞ্চলে। মিটিং মিছিলে যাচ্ছেন না,দলের কোন কাজ করছেন না। আপনাকে কোয়ার্টার ছাড়তে হবে।
এইভাবে শুরু হয় প্রথম অত্যাচার। পরবর্তীতে কোয়ার্টার ছাড়া নিয়ে স্থানীয় মানুষ এবং বসবাসকারীদের মধ্যে শুরু হয় গন্ডগোল। এরপরই কোয়ার্টার মাফিয়ারা কোয়ার্টার ছাড়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করতে থাকে ওই কোয়ার্টার গুলিতে বসবাসকারীদের উপর।
এইরকম অত্যাচারে অবশেষে কোয়ার্টার ছাড়তে বাধ্য হন তারা।
ফের ওই খালি কোয়ার্টার গুলি বিক্রির জন্য শুরু হয় প্রথম থেকে প্রক্রিয়াগুলি। অর্থাৎ একটি কোয়ার্টার বছরে দু’বার করে বিক্রি হচ্ছে।
অত্যাচারের আরেকটি প্রক্রিয়া হচ্ছে, যদি নির্দিষ্ট একটি ওয়ার্ডের ভোটার যদি অন্য একটি ওয়ার্ডে বসবাস করে তবে তাদের বলা হয় যে, “আপনারা অন্য ওয়ার্ডের ভোটার তবে এই ওয়ার্ডে এসে থাকছেন কেন? আপনাদের কোয়ার্টার ছাড়তে হবে।”
সূত্রের খবর, এই কোয়ার্টার মাফিয়াদের মদত দিচ্ছেন কিছু রেল আধিকারিকরাও।
এখানেই প্রশ্ন, রেল কোয়ার্টার কিভাবে বিক্রি হয়? তাও আবার বছরে দুবার! কোন সাধারণ মানুষ কি এই রেল কোয়ার্টার গুলিতে বসবাস করতে পারেন? আর তাদের থেকে যে অর্থ তোলা হচ্ছে সেই অর্থ কারা এবং কেন নিচ্ছে? কি করছে রেল প্রশাসন? স্থানীয় প্রশাসনের নজরে কি কিছুই নেই?